وعليكم السلام ورحمة ورحمة وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
কোনো ব্যাক্তি মারা গেলে তার এতিম সন্তানের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওনা সম্পদ এতিম সন্তানকে ও মাইয়্যিতের বিধবা স্ত্রীকে দ্রুত হস্তান্তর করতে হবে।
এরপর ন্যায়ের সাথে এতিমের সম্পদ হতেই এতিমের ভরনপোষণ দিতে হবে।
যদি এভাবে ভরনপোষণ দিতে গিয়ে এতিমের সম্পদ শেষ হয়ে যায়,তাহলে এতিমের ভরনপোষণ এর দায়িত্ব এতিমের মা ও চাচাদের উপর বর্তাবে।
তার ভরনপোষণ এর খরচের এক ভাগ মা দিবে,আর বাকি দুই ভাগ চাচারা দিবে।
তবে এতিমের মায়ের কাছে যদি প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ না থাকে,তাহলে তাকে এতিমের ভরনপোষণ এর জন্য টাকা দিতে হবেনা।
এক্ষেত্রে তার ভরনপোষণ এর পুরো টাকা তার চাচারা দিবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
জিপি ফান্ড তথা প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা মিরাছের ভিত্তিতে সকল ওয়ারিশদের মাঝে শরীয়ত মোতাবেক বন্টন করতে হবে।
মাইয়্যিতের অন্যান্য ওয়ারিশদের না দিয়ে শুধুমাত্র স্ত্রীর জন্য এভাবে জিপি ফান্ড এর টাকার মালিক হওয়া জায়েজ হবেনা।
এ ফান্ড এর টাকা শরীয়তের নীতিমালা মেনে ওয়ারিশদের মাঝে বন্টন করতে হবে।
,
সুরা নিসার ১১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
یُوۡصِیۡکُمُ اللّٰہُ فِیۡۤ اَوۡلَادِکُمۡ ٭ لِلذَّکَرِ مِثۡلُ حَظِّ الۡاُنۡثَیَیۡنِ ۚ فَاِنۡ کُنَّ نِسَآءً فَوۡقَ اثۡنَتَیۡنِ فَلَہُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَکَ ۚ وَ اِنۡ کَانَتۡ وَاحِدَۃً فَلَہَا النِّصۡفُ ؕ وَ لِاَبَوَیۡہِ لِکُلِّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَکَ اِنۡ کَانَ لَہٗ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّہٗ وَلَدٌ وَّ وَرِثَہٗۤ اَبَوٰہُ فَلِاُمِّہِ الثُّلُثُ ۚ فَاِنۡ کَانَ لَہٗۤ اِخۡوَۃٌ فَلِاُمِّہِ السُّدُسُ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصِیۡ بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ اٰبَآؤُکُمۡ وَ اَبۡنَآؤُکُمۡ لَا تَدۡرُوۡنَ اَیُّہُمۡ اَقۡرَبُ لَکُمۡ نَفۡعًا ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا ﴿۱۱﴾
আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিচেছন: এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান; কিন্তু শুধু কন্যা দুইয়ের বেশী থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু’ভাগ, আর মাত্র এক কন্য থাকলে তার জন্য অর্ধেক। তার সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ; সে নিঃসন্তান হলে এবং পিতা-মাতাই উত্তরাধিকারী হলে তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ; তার ভাই-বোন থাকলে মাতার জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ; এ সবই সে যা ওসিয়াত করে তা দেয়ার এবং ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও সন্তানদের মধ্যে উপকারে কে তোমাদের নিকটতর তা তোমরা জান না । এ বিধান আল্লাহর; নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
(০২)
দাফন কাফন বাবদ মাইয়্যিতের রেখে যাওয়া সম্পদ হতেই করা লাগতো।
এ বাবদ বেঁচে যাওয়া অর্থ স্ত্রী একা পাবেনা।
সমস্ত ওয়ারশগন শরীয়তের নীতিমালা অনুযায়ী পাবে।
(০৩)
মাইয়্যিতের কোনো ঋন থাকলে তাহা পরিশোধ করার পর,এবং তার অসিয়ত থাকলে তাহা আদায়ের পর ক্ষতিপুরন বাবদ অর্থ সমস্ত ওয়ারশগন শরীয়তের নীতিমালা অনুযায়ী পাবে।
(০৪)
সরকারি চাকুরিজীবী মারা যাওয়ার পর তাদের স্ত্রীকে যে পেনশনের টাকা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়,এটা সরকারের পক্ষ থেকে তার স্ত্রীর প্রতি দয়া, অনুগ্রহ, ইহসান।
এটার সাথে মৃত ব্যাক্তির মিরাছের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এটা শুধুমাত্র স্ত্রীই পাবে।
স্ত্রীই কেবল মাত্র এটা পাওয়ার হকদার।
(ইমদাদুল ফাতওয়া ৪/৩৪২ মাকতাবায়ে যাকারিয়া)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ইসলামী স্কলারগন বলেছেনঃ
সরকারি চাকরিতে সরকারি নিয়ম অনুসারে চাকরিজীবী ব্যক্তিকে চাকরি শেষ হওয়ার পর প্রতি মাসে যে পেনশন দেওয়া হয় তা সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান স্বরূপ। উক্ত ব্যক্তির মালিকানাধীন সম্পদ নয়। কাজেই সেই সম্পদ পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ওয়ারিসরা পাবে না। বরং সরকারি আইন হিসেবে উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর যাকে দেওয়ার কথা বলা থাকে সেই তা প্রাপ্ত হবে।
সাধারণত, স্ত্রী সে টাকা পেয়ে থাকে। কাজেই সরকারি আইন হিসেবে স্ত্রী সে টাকা পাবে। ওয়ারিসরা তাতে যুক্ত হবে না।
আল বাহরুর রায়েক ৯/৩৬৫; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ২/৪
এক্ষেত্রে স্ত্রী শর্ত ভঙ্গ করে অন্যত্রে বিবাহ বসলেও এই পেনশনের টাকা স্ত্রীই পাবে।