ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
বিবাহ সহীহ হওয়ার
জন্য শর্ত হল আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান
দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি
প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা
সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।
হাদিস শরিফে
এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ
ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ
عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ
আয়শা রাযি. থেকে
বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন,
অভিবাক ও দু’জন
ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর
উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)
ফাতওয়ায়ে
হিন্দিয়াতে রয়েছে-
فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور )
شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب
النكاح،-3/9)
অনুবাদ-বিবাহ
সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন
দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে
পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}
বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল মৌলিকভাবে দু’টি। যথা-
১-ইজাব কবুল হওয়া।
২-দুইজন মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন
প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা উক্ত ইজাব কবুল স্বকর্ণে শুনা।
ব্যস উক্ত দু’টি শর্ত পাওয়া গেলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।
যার পুরোপুরি ব্যাখ্যা হলোঃ-
স্বামী স্ত্রীকে ইজাব তথা প্রস্তাব দিবে বা কোন ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে স্বামীর
পরিচয় ও দেনমোহর উল্লেখ করে প্রস্তাব দিবে, আর স্ত্রী
সেই প্রস্তাবকে কবুল করবে। কিংবা স্ত্রী নিজে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা
কবুল করবে, কিংবা
স্ত্রীর অনুমতিক্রমে তার উকীল গিয়ে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল
করবে। আর উক্ত প্রস্তাব এবং কবুল বলার বিষয়টি উপস্থিত থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন
মুসলিম পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বকর্ণে শুনবে। তাহলেই
শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।
সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু
ছেলে ও মেয়ের উভয় পরিবার এই বিয়েতে রাজী। তবে তারা সম্মত হয়েছে যে, একটু পরে দিবে। সুতরাং
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এমন হতে পারে যে, উভয় পরিবারের কয়েক
জনের উপস্থিতিতে বিয়েটা হয়ে গেলো। কোনো ধরণের অনুষ্ঠান ছাড়াই। তাহলে তেমন কোনো
খরচও হলো না। অত:পর ছেলে ও মেয়ে তারা তাদের মত আলাদা ভাবে থাকবে। ফোনে কথা বার্তা
বলবে। তারপর কয়েক বছর তারা অনুষ্ঠান করে বিয়েটা করবে।
উল্লেখ্য যে, বিয়ে করা ছাড়া এখন ছেলে ও
মেয়ে কথা বার্তা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় কথা-বার্তা ও দেখা-সাক্ষাত করলে
গোনাহ হবে। তাই তারা উভয় পরিবারের কয়েক জনের উপস্থিতিতে বিয়েটা করে ফেলতে পারে। কোনো
ধরণের অনুষ্ঠান ছাড়াই। তাহলে তেমন কোনো খরচও হলো না। অত:পর ছেলে ও মেয়ে তারা তাদের
মত আলাদা ভাবে থাকবে। ফোনে কথা বার্তা বলবে। প্রয়োজনে দেখা সাক্ষাতও করবে। এতে
কোনো সমস্যা নেই। কারণ এখন তারা স্বামী-স্ত্রী। তারপর কয়েক বছর পর অনুষ্ঠান করে
বিয়েটা করবে।