আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
91 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম,
পারিবারিক ভাবে  বিয়ের প্রস্তাব আসে, সুন্নাহ মুতাবেক দেখাদেখি ও হয়,ছেলে মেয়ে,২ পরিবার সবই সবার পছন্দ হয়। কিন্তু ছেলের পরিবার, ছেলের ভাল জব হওয়ার পর বিয়ে করাবে বলে। কোনো পাপ যাতে না হয়, সেই জন্য ছেলে এখনি বিয়ে করতে চায়, আর মেয়েও রাজি। মেয়ের বাবা মারা গেছেন, ভাই নাই। মামা, চাচা পরে বিয়ে দিবেন এই ছেলের সাথে।মেয়ের মা রাজি এখন এ বিয়ে দিতে। মেয়ের মা ছেলেকে বলেছেন,  "আমি রাজি আছি, তোমাদের যন কোনোপাপ না হয়,  তাই তোমরাবিয়ে করে নাও"।  কিভাবে কি করলে সুন্নাহ মুতাবেক হবে & আল্লাহ নারাজ হবেন না।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।

 

হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ

আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্  বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)

 

ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}

 

বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল মৌলিকভাবে দু’টি। যথা-

১-ইজাব কবুল হওয়া।

২-দুইজন মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা উক্ত ইজাব কবুল স্বকর্ণে শুনা।

 

ব্যস উক্ত দু’টি শর্ত পাওয়া গেলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।

যার পুরোপুরি ব্যাখ্যা হলোঃ- 

স্বামী স্ত্রীকে ইজাব তথা প্রস্তাব দিবে বা কোন ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে স্বামীর পরিচয় ও দেনমোহর উল্লেখ করে প্রস্তাব দিবে, আর স্ত্রী সেই প্রস্তাবকে কবুল করবে। কিংবা স্ত্রী নিজে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে, কিংবা স্ত্রীর অনুমতিক্রমে তার উকীল গিয়ে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে। আর উক্ত প্রস্তাব এবং কবুল বলার বিষয়টি উপস্থিত থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন মুসলিম পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বকর্ণে শুনবে। তাহলেই শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু ছেলে ও মেয়ের উভয় পরিবার এই বিয়েতে রাজী। তবে তারা সম্মত হয়েছে যে, একটু পরে দিবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এমন হতে পারে যে, উভয় পরিবারের কয়েক জনের উপস্থিতিতে বিয়েটা হয়ে গেলো। কোনো ধরণের অনুষ্ঠান ছাড়াই। তাহলে তেমন কোনো খরচও হলো না। অত:পর ছেলে ও মেয়ে তারা তাদের মত আলাদা ভাবে থাকবে। ফোনে কথা বার্তা বলবে। তারপর কয়েক বছর তারা অনুষ্ঠান করে বিয়েটা করবে।

উল্লেখ্য যে, বিয়ে করা ছাড়া এখন ছেলে ও মেয়ে কথা বার্তা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় কথা-বার্তা ও দেখা-সাক্ষাত করলে গোনাহ হবে। তাই তারা উভয় পরিবারের কয়েক জনের উপস্থিতিতে বিয়েটা করে ফেলতে পারে। কোনো ধরণের অনুষ্ঠান ছাড়াই। তাহলে তেমন কোনো খরচও হলো না। অত:পর ছেলে ও মেয়ে তারা তাদের মত আলাদা ভাবে থাকবে। ফোনে কথা বার্তা বলবে। প্রয়োজনে দেখা সাক্ষাতও করবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ এখন তারা স্বামী-স্ত্রী। তারপর কয়েক বছর পর অনুষ্ঠান করে বিয়েটা করবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
jazhakumullahu khoiron

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...