আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
78 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু

আমি স্বপ্নটির ব্যাখ্যা জানতে চাই ,দ্রুত উত্তর পেলে উপকৃত হব।

প্রায় বিশ দিন আগে আমি একটি স্বপ্ন দেখি বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে।এমন স্বপ্ন আমি আগে কখনো দেখিনি।আমি দেখি আমি একটি বাসায় থাকি বাসাটি দোতালা।এরপর আমি দেখলাম বাসাটির প্রথম তলায় আমি থাকি এবং বাসার দ্বিতীয় তলায় কিছু একটা থাকে যা কালোমতো ঝাপসা কিছু,এটা আমার দিকে তেড়ে আসে বা আমার ক্ষতি করতে চায় আমাকে অ্যাটাক করতে চায় এমন কিছু একটা,হঠাৎ আমি দেখলাম আমি দ্বিতীয় তলায় গেলাম এবং কালো মতো জিনিসটা আমাকে ধাওয়া করলো আমি দ্বিতীয় তলা থেকে দৌড়ে প্রথম তলায় নেমে আসলাম এবং আমি দেখলাম প্রথম তলায় আমার বাসাতেই দুজন মানুষ, একজন মহিলা একজন পুরুষ কিন্তু তারা আমার পরিবারের কেউ না মানে আমার বাবা মা ভাই বোনের মধ্যে কেউ না, অচেনা কেউ কিন্তু স্বপ্নের মধ্যে তারা আমার পরিবারের কেউ ছিলেন,আমাকে ধাওয়া খেয়ে আসতে দেখে তারা বললেন ওকে এই কালো জিনিসটা থেকে রক্ষা করতে হলে ওর আঙ্গুলে পিন ফুটাতে হবে,এরপরে আমি দেখলাম আমার মাঝের তিন আঙ্গুলে বড় লম্বা সুইয়ের মত কিছু দিয়ে কাপড়ে যেভাবে উপর-নিচ করে সেলাই করা হয় সেভাবে নখের মধ্যে দিয়ে চামড়ার ভিতরে উপর নিচ করে ঢোকানো হচ্ছে পিনগুলো,যাতে আমি প্রচন্ড ব্যাথা পাচ্ছিলাম,এবং রক্ত পড়ছিল,আমি ঘুমের মধ্যে বুঝতে পারছিলাম যে আমি ব্যাথা পাচ্ছি(আমি ঘুম থেকে ওঠার কিছুক্ষণ পর পর্যন্ত সেই ব্যথা অনুভব করতে পারছিলাম),তারপরে আমি দেখলাম আমার হাতগুলো অবশ হয়ে যাচ্ছে,আমি হাত দিয়ে কোন কাজ করতে পারছি না এবং আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি আর এখানে আমার ঘুম ভেঙে যায়।স্বপ্নটির মানে আসলে কি?

এরপর আমি এই স্বপ্নের কথা আমার মা, আমার বোন এবং আমার কাছের বান্ধবিকে বলি,তারা আমাকে বিভিন্ন রকমের কথা বলে যে কি হতে পারে এই স্বপ্নের মানে,আমার কি তাদেরকে এই স্বপ্নের কথা বলা উচিত হয়েছে এতে কি আমার কোন সমস্যা হতে পারে?এই স্বপ্ন দেখার পর থেকে আমার রাতে ঘুমাতে সমস্যা হচ্ছে।

1 Answer

0 votes
by (684,920 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 

১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।

তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 
,

হাদীস শরীফে এসেছে  

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্নটি শয়তানের পক্ষ থেকে।
তাই বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইতে হবে।

স্বপ্নের কথা কাউকে বলা ঠিক হয়নি।

আপনি আয়াতুল কুরসি,তিন কুল পড়ে শরীরে ফুক দিয়ে ঘুমাবেন।
 
শরীর বন্ধ করার বিষয়টি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। রাসূল (সা.) এমনটি করতেন। 

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে ঘুমানোর জন্য বিছানায় যাওয়ার পর প্রথমে দু হাতের তালুদ্বয় জমা করে তাতে প্রথমে থুথু দেয়ার মত করে ফুঁ দিতেন, তারপর তাতে তিন কুল (সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস) পড়ে প্রথমে মাথা, তারপর চেহারা তারপর শরীরের উপরিভাগে যতটুকু সম্ভব মাসেহ করতেন। এভাবে তিনবার করতেন।

হাদিস শরিফে এসেছে, আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ كُلَّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ ثُمَّ نَفَثَ فِيْهِمَا فَقَرَأَ فِيْهِمَا(قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ)وَ (قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ) وَ (قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ) ثُمَّ يَمْسَحُ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ

‘প্রতি রাতে রাসূল (সা.) বিছানায় যাওয়ার প্রাক্কালে সূরা ইখ্লাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করে দু’হাত একত্র করে হাতে ফুঁক দিয়ে যতদূর সম্ভব সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। মাথা ও মুখ থেকে আরম্ভ করে তাঁর দেহের সম্মুখ ভাগের উপর হাত বুলাতেন এবং তিনবার এরূপ করতেন।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...