আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
235 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (68 points)
edited by
১. আজকে একটা পোস্ট দেখা কালীন দেখলাম একজন মানুষ যে রঙ্গলা রাসুল বলে রাসুল (সাঃ) এর অপমান করায় একজন মানুষ ওই অবমাননাকারীকে হত্যা করেছিলো..

এটা শেয়ার করতে যাওয়ার সময়, হঠাৎ মুখ দিয়ে আমার" এটা ভায়োলেন্স/ ভায়োলেন্স "( মানে নিষ্ঠুরতা)  শব্দটি বের হলো।  আমি শাতেমে রাসুলের সাজায় বিশ্বাস রাখি। এটাকে নিষ্ঠুরতা ও বলি না। এই শব্দ কেনো মুখে আসলো জানি না। তখন ভাবছিলাম এটা শেয়ার করলে মানুষ কি বলবে বা বলতে  পারে? মানুষের ভাবনা থেকে এই শব্দ বলেছি কি না বুঝতে পারছি না। ভায়োলেন্স বলার সাথে সাথেই মাথায় আসলো কি বললাম এটা এটা তো নিষ্ঠুরতা না শাতিমে রাসুলের সাজা।(তখন নিষ্ঠুরতা না/নিষ্ঠুরতা কিভাবে এটা মুখে উচ্চারণ ও করেছি বলে মনে হচ্ছে,নিশ্চিত নই)  কি জন্য এই শব্দ বললাম খেয়ালেও আসছে না। যতোদূর মনে পরছে মানুষ জিগ্যাস করবে এই নিষ্ঠুরতা ইসলাম সমর্থন করে কি না? তখন হয়তো "এই ভায়োলেন্স /এটা ভায়োলেন্স /ভায়োলেন্স " শব্দ বের হয়েছে। কোনো কিছুই শিওর হয়ে বলতে পারছি না কেনো বললাম এই শব্দ...
আমি কি এর জন্য কাফের হয়ে গেছি?

২. কেও যদি নিজ থেকে শাতিমে রাসুলের সাজা কার্যকর করে ফেলে এই কাজ কে উগ্রবাদ বা নিষ্ঠুরতা বললে ইমান থাকবে কি?

৩. ইচ্ছাকৃত ভাবেই কেও কুফরী কথা বলে ফেললো, বা নিজেকে কাফের দাবী করলো। তবে বলার সময় এটা মনে  ছিলো না যে সে কুফরী কথা বলছে,  পরে মনো হলো কুফরী  হয়ে গেছে এবং তওবা করলো,ত সে কি কাফের হবে?

৪. হারাম জিনিসের প্রশংসা করলে কি কেও কাফের হবে?যেমন গানটি সুন্দর,  বা এই ধরনের কিছু।

৫.  আমি কখনো কাফের বা অন্য কিছু দাবী করেছি কি না নিজেকে মনে নাই আমার,এখন কি করবো?

৬.কুফরী সম্পর্কে না জেনে কুফরী করে ফেলেছে, জানার পরে তার যদি মনে পরে যে সে ওই দিন কুফরী করেছিলো,তখন তর কি ইমান নবায়ন করে বিয়ে দুহরাতে হবে?না কি ওইটা না জেনে করার জন্য মাফ হবে?

৭.দোয়া করার সময় কেও যদি মনে মনে আল্লাহকে বলে "আমি শরিয়তের এই বিষয় গুলো মানতে পারতেছি না" ( মেনে চলতে কষ্ট হচ্ছে, বা পরছেনা এগুলো বুঝানোর উদ্দেশ্যে, অস্বীকারনা) তবে কি সে কাফের হবে? আমি আজ এই ভাবে দোয়া করতেছিলাম তখন মনে মনেই বলেছিলাম, মুখ দিয়ে উচ্চরন করেছি বলে মনে হচ্ছে না,তাও ওসওয়াসার কারণে সন্দেহ হচ্ছে, আমি কি এর জন্য কাফের হয়ে যাবো?

৮. আমি অনেক টেনশনে আছি সারাদিন অশান্তি তে আছি কোনো কথা বললেই সন্দেহ হয় কুফর হলো কি না,আমি অনেক অতিষ্ঠ, আপনাদের বিভিন্ন জিনিস বার বার জিগ্যোস করি তাতেও লজ্জা লাগে,আজকে আরেকটা প্রশ্ন ও করেছি, তার ওর থেকে অপেক্ষায় বসে থাকি, এখন ঘুমানোর সময় ও আবার একই সমস্যায় পরলাম । আমি কি করবো কিছুই বুঝতেছি না...আমার কি করা উচিত,আমি সব ই বিশ্বাস করি কিন্তু কোনো শব্দ হঠাৎ উচ্চারণ করলেই ভয় হয়,আমাকে কোনো একটা সমাধান দিন আমি একদম অতিষ্ঠ।....

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/47004/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
শরীয়তের কোনো জরুরি বিধান নিয়ে হাসি ঠাট্রা করলে ঈমান চলে যায়।
  
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 قُلْ أَبِاللهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُوْلِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُوْنَ، لاَ تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيْمَانِكُمْ 

‘আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? ছলনা কর না, ঈমান আনার পর তোমরা যে কাফির হয়ে গেছ’ (তওবা ৬৫-৬৬)। 

 فَنَذَرُ الَّذِيْنَ لاَ يَرْجُوْنَ لِقَاءَنَا فِيْ طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ 

‘সুতরাং যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে ব্যতিব্যস্ত করে রাখি’ (ইউনুস ১১)। 

এ ধরনের লোকদের সাথে উঠাবসা, চলাফেরা ত্যাগ করতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা উক্ত আচরণ পরিত্যাগ না করে। 

وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلاَ تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ إِنَّ اللهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْعًا-
‘আর কুরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারী করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহর আয়াত সমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ করতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে। অন্যথা তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামে একই জায়গায় সমবেত করবেন’ (নিসা ১৪০)। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনি কাফের হয়ে যাননি।

(০২)
মনে ঘৃণা আসলে ঈমান চলে যাবে।

(০৩)
ইচ্ছাকৃতভাবে জেনে শুনে এমন কথা বললে ঈমান চলে যাবে। 

(০৪)
এতে কাফের হবেনা।
তবে হালাল মনে করলে কাফের হয়ে যাবে।

(০৫)
আপনি যেহেতু নিশ্চিত নন,তাই
বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ করার প্রয়োজন নেই।
আপনার ঈমান ঠিক আছে বলে ধরে নিবেন।

(০৬)
না জেনে করার দরুন তার ঈমান চলে যাবেনা।
তার বিবাহ ভেঙ্গে যাবেনা।
তবে জানার পর পরই তওবা করতে হবে।

(০৭)
আপনি এর জন্য কাফের হয়ে যাবেননা।

(০৮)
হাদিস শরিফে এসেছে,

يَأْتِي الشَّيْطَانُ أَحَدَكُمْ ، فَيَقُولَ : مَنْ خَلَقَ كَذَا وَكَذَا ؟ حَتَّى يَقُولَ لَهُ : مَنْ خَلَقَ رَبَّكَ ؟ فَإِذَا بَلَغَ ذَلِكَ ، فَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ وَلْيَنْتَهِ

‘রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, শয়তান তোমাদের কারো নিকট আসে এবং বলে, এটা কে সৃষ্টি করেছে, ওটা কে সৃষ্টি করেছে? পরিশেষে এ প্রশ্নও করে, তোমার রবকে কে সৃষ্টি করেছে? এ পর্যায়ে পৌঁছলে তোমরা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর এবং এ ধরণের ভাবনা থেকে বিরত হও।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩২৭]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَزَالُ النَّاسُ يَتَسَاءَلُونَ حَتَّى يُقَالَ: هَذَا خَلَقَ اللَّهُ الْخَلْقَ فَمَنْ خَلَقَ اللَّهَ، فَمَنْ وَجَدَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَلْيَقُلْ: آمَنْتُ بِاللَّهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ পরস্পর প্রশ্ন করতে থাকে, এমন কি শেষ পর্যন্ত বলে ফেলে যে, আল্লাহ তো সব কিছু সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? যখনই কেউ এরূপ কিছু অনুভব করবে তখন সে যেন বলে, আমি আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি।
(আবু দাউদ ৪৭২১)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
শয়তানের কুমন্ত্রণা হতে বাঁচার জন্য আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে হয়, "আউযুবিল্লা-হি....." পাঠ করবে এবং বলবে,
 آمَنْتُ بِاللَّهِ ورسوله 
“আমি আল্লাহর উপর এবং রাসূলগণের উপর ঈমান এনেছি"।

সুতরাং আপনিও এর উপর আমল করবেন।
এগুলো চিন্তা মাথাতেই আসতে দিবেননা।

এসব চিন্তা মাথায় আসলেই বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন। 
উপরোক্ত আমল গুলি করবেন।

একাকী থাকবেননা।
অবসর সময়কে কাজে ব্যয় করবেন,সবসময় ব্যাস্ত থাকার চেষ্টা করবেন।
নেককার বান্দাদের সাথে বেশি বেশি ওঠাবসা করবেন।

প্রয়োজনে তাবলীগে সময় লাগাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...