আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
471 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম উস্তায,

আমি আমার স্বামীকে হারাম রিলেশন নিয়ে সন্দেহ করি এবং তার যথেষ্ট কারণ আছে, এমনকি তিনি এই কাজের মধ্যে জরিয়ে আছেন এটাও সত্যি।

এই জন্য আমি তাকে বলেছি মাসনা করার জন্য যাতে তার হারাম কিছুর মধ্যে জরাতে না হয়। কিন্তু তিনি এই কাজই করবেন, বিয়ে করবেন না। এই বিষয় নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হয়, এমনকি আমি না চাইতেও তার মোবাইল আমার চেক করা হয়ে যায় তার আচার ব্যবহারের পরিবর্তনের জন্য।

এই জন্য তিনি আমাকে শর্তসাপেক্ষে বাইন তালাকের কথা বলে।

কথাটা এই রকম "যখনি আমি তার মোবাইল  ধরব আর এইসব বিষয় দেখব তখনি বাইন তালাক হয়ে যাবে।"

তাই আমি তার মোবাইল এই পর্যন্ত ধরিনি।। এর মাঝে তিনি আবার আমাকে বলছেন যে, এইগুলো তিনি ভয় দেখনোর জন্য বলছেন তালাকের নিয়তে বলেন নি। আর আমি ওনার মোবাইল ধরতে পারব। তো এই অবস্থাতেও ওনার মোবাইল আমার চেক করার জন্য ধরা হয়নি।

পরবর্তীতে আবার একদিন তিনি ইউটিউবে একজন আলেমের তালাকের বিষয় নিয়ে যে কথা বলেছে, তা নিয়ে কথা বলতেছিলেন, বিষয়টা একত্রে তিন তালাক নিয়ে ছিল।। তো ওই আলেম চার মাযহাবের এবং সাহাবায় কেরামের আমলের বাইরে কথা গুলো বলতেছিলেন। তো তখন আমি বলেছিলাম যে, তার কথার জন্য ওই স্বামীর জন্য তার স্ত্রী হালাল হয়ে যাবে না। তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন যে, তুমি আমার জন্য হারাম হয়ে গেছো এই কথা বললেই হারাম হয়ে যাবা তুমি?। আমি ওনার এই কথায় ভয় পেয়ে যাই যে তালাক হয়ে গেলো কি না। এইজন্য  একজন আলেমকে ফোন দেই। তখন উনি বলেন যে নিয়ত করে বলে থাকলে ১তালাক হয়ে যাবে আর পুনরায় নতুন করে বিয়ে করে নিতে হবে। তাই আমি আমার স্বামীকে জিজ্ঞাসা করি উনি কি নিয়ত করেছিলো কি না।তখন উনি বলেন যে, না তিনি কোন নিয়ত করেন নি। তো এই বিষয় নিয়ে উনি আমার সাথে রাগারাগি করেন, কেন আমি কোন আলেমের কাছে এইসব বিষয় নিয়ে কিথা বলি আর ওনাদের কথা মেনে নেই, কেন আমি স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে ওলামায় কেরামের কথা মত চলতে চাই।
তো এইরকম পরিস্থিতিতে তিনি আবার ওই শর্ত জুড়ে দেয়। তো এতদিন ওনার মোবাইল ধরা হয়নি, আর আমি নিজেকে এইবলে সান্তনা দিয়েছি যে উনি তো আমার আর আমার বাচ্চাদের সব হক আমার পর্দা সহ আদায় করতেছে, যদিও মাঝে মধ্যে এদিক সেদিক হয়ে যায় এই হারাম সম্পর্কের জন্য তাতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু তারপরও আমার দ্বারা ২৯ রোজার দিন ওনার মোবাইল ধরা হয়।।ওই সময় আমার বড় ছেলে(দেড় বছর বয়স) তার মোবাইলে কার্টুন দেখছিল। সে যাতে এই গুলো না দেখে তাই আমি তার কাছ থেকে জোড় করে মোবাইল নেই, সেই অবস্থায় তখন তার মোবাইলে মেসেজ চেক করা হয়ে যায়। সেদিন আমি তার হারাম সম্পর্কের বিষয় নিয়ে তাকে কোন রাগারাগি করিনি, কিন্তু তিনি তার ওই শর্ত আমাকে মনে করিয়ে দেয়। এবং সাথে আরো একটি শর্ত জুড়ে দেয় যে, আমি বাইন তালাক হয়েছে কি না এই ব্যাপারে কোন মুফতি আলেমের সাথে কথা বলতে পারব বাকি কারো সাথে (ওনার আমার ফ্যামিলি বা অন্য কারো সাথে) কথা বলতে বা জানাতে পারব না, তাহলে তালাক হয়ে যাবে।
তাই আমি ওই আলেমকে আবার ফোন দেই এই বিষয় নিয়ে। উনি শুনে বলেন যে বাইন তালাক হয়ে গেছে পুনরায় নতুন মোহর ধার্য করে বিয়ে করে নিয়ে হবে, এবং আমার স্বামী এখন ২তালাকের মালিক থাকবেন। এই কথা আমার স্বামী শুনার পর উনি বলতেছেন যে উনি এই শর্তগুলো তালাকের নিয়তে বলেন নি, উনি আমাকে ভয় দেখানোর জন্য বলছেন,  উনি তালাক দেননি আমাকে।। পরবর্তীতে তিনি আবার বললেন যে আমি যাতে ভালো করে জেনে নেই বাইন তালাক হয়েছে কি না, হয়ে থাকলে নতুন করে বিয়ে করে নিবেন। আমি আবার জেনে ওনাকে জানাই যে বাইন তালাক হয়ে গেছে নতুন করে বিয়ে করে নিতে হবে। উনি রাজি হলো বিয়ে করে নিবে। কিন্তু এখন করতে চাচ্ছে না, কারন আমি তার সাথে পর্দা করতেছি (পুরো পর্দা করতে পারছি না কারন এখন আমি আমার শ্বশুর বাড়ি আছি, আর তারা এই বিষয়ে জানেনও না, এমনকি আমার পরিবারের কেউ না), আমাকে ধরতে দিচ্ছি না, এই গুলো তিনি মানতে রাজি না।

এখন আমি কি করব? তালাক কি হয়ে গেছে? হয়ে থাকলে তাকে কিভাবে বুঝাব? তিনি এখন বার বার বলতেছেন যে তিনি তালাকের নিয়তে এই শর্তগুলো বলেননি।।

এখন আমার করণীয় কি?

একটু দ্রুত জানালে উপকৃত হতাম। কারন উনি ঢাকাতে ৭ তারিখ চলে যাবে, আমাকে শ্বশুর বাড়িতে রেখে।

1 Answer

+1 vote
by (711,600 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/10666 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
মাসআলা জানার পূর্বের এ সংক্রান্ত একটি মূলনীতি আমাদের মনে রাখতে হবে।
أَلْفَاظُ الشَّرْطِ إنْ وَإِذَا وَإِذْمَا وَكُلُّ وَكُلَّمَا وَمَتَى وَمَتَى مَا فَفِي هَذِهِ الْأَلْفَاظِ إذَا وُجِدَ الشَّرْطُ انْحَلَّتْ الْيَمِينُ وَانْتَهَتْ لِأَنَّهَا تَقْتَضِي الْعُمُومَ وَالتَّكْرَارَ فَبِوُجُودِ الْفِعْلِ مَرَّةً تَمَّ الشَّرْطُ وَانْحَلَّتْ الْيَمِينُ فَلَا يَتَحَقَّقُ الْحِنْثُ بَعْدَهُ إلَّا فِي كُلَّمَا لِأَنَّهَا تُوجِبُ عُمُومَ الْأَفْعَالِ فَإِذَا كَانَ الْجَزَاءُ الطَّلَاقَ وَالشَّرْطُ بِكَلِمَةِ كُلَّمَا يَتَكَرَّرُ الطَّلَاقُ بِتَكْرَارِ الْحِنْثِ حَتَّى يَسْتَوْفِيَ طَلَاقَ الْمِلْكِ الَّذِي حَلَفَ عَلَيْهِ فَإِنْ تَزَوَّجَهَا بَعْدَ زَوْجٍ آخَرَ وَتَكَرَّرَ الشَّرْطُ لَمْ يَحْنَثْ عِنْدَنَا كَذَا فِي الْكَافِي.
ভাবার্থঃ
শর্তের মাধ্যমে তালাক প্রদাণের জন্য নিম্নোক্ত হরফ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।যথা-
(১)إنْ-যদি
(২)َإِذَا-যখন
(৩)َإِذْمَا-যখন
(৪)َكُلُّ-সব
(৫)َكُلَّمَا-যখনই
(৬)مَتَى-যখন
(৭)مَتَى مَا-যখন
বাক্যর প্রারম্ভে এ সকল শব্দ প্রয়োগ করে কোনো কাজের সাথে সম্পর্কিত করে তালাক প্রদাণ করলে যখনি উক্ত শর্ত পাওয়া যাবে,তখন তাৎক্ষণাৎ তালাক পতিত হয়ে উক্ত শর্তযুক্ত বাক্য বিনষ্ট হয়ে যাবে।পরবর্তীতে একাজের পূনরাবৃত্তি ঘটলে আর তালাক পতিত হবে না।তবে শুধুমাত্র ৫ নং বাক্য এর বিপরিত।এটা ব্যবহার করলে যখনই শর্ত পাওয়া যাবে তখনই তালাক পতিত হতে থাকবে।যতক্ষণ না উক্ত বিয়ে বন্ধন শেষ হচ্ছে।শরীয়া মোতাবেক দ্বিতীয়বার উক্ত স্বামী উক্ত স্ত্রীকে বিয়ে করলে তখন আর তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪১৫)

সু-প্রিয় দ্বীনী প্রশ্ন কারী ভাই।
আপনার মুবাইল ধরা দ্বারা এক তালাক হয়ে গেছে।আপনার স্বামী যে বলছেন, তিনি ভয় দেখানোর নিয়তে বলছেন, এটা গ্রহণযোগ্য না।কেননা স্পষ্টভাবে তালাক শব্দ উচ্ছারণ হয়ে গেলে নিয়তের কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।তাই স্বামীর নিয়ত থাকুক বা না থাকুক, এক তালাক বায়েন হয়ে গেছে।

এখন আপনারা নতুন করে বিয়ে করে নিবেন। দুইজন সাক্ষীর সামনে নতুন মহর উল্লেখ পূর্ব ইজাব কবুল করে নিবেন।

উনাকে মানতেই হবে। প্রয়োজনে আমার সাথে মুবাইলে কথা বলাবেন।প্রুফাইলে আমার নাম্বার দেয়া আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...