ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে ঘরে জামাতে নামাজ পড়েছি, একবার আমি নবী করিম (সা.)-এর পাশে দাঁড়িয়েছি, আর আয়েশা (রা.) আমাদের পেছনে দাঁড়িয়ে আমাদের সঙ্গে জামাতে শরিক হয়েছিলেন। (সুনানে নাসাঈ, হাদিস : ৮০৩)
যদি কোনো পুরুষ শরিয়ত অনুমোদিত কোনো ওজরবশত মসজিদে যেতে না পারে, তাহলে তার জন্য ঘরের মাহরাম নারীদের নিয়ে জামাতে নামাজ পড়া বৈধ। এ ক্ষেত্রে সবাই জামাতের সাওয়াব পাবে।
উক্ত সময় স্ত্রীকে নিয়ে জামাত করাই উচিত।
বুখারি শরিফের একটি হাদিস এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
صَلاَةُ الجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلاَةَ الفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً
‘জামাতে নামাজ আদায় করার ফজিলত একাকী আদায়কৃত নামাজ অপেক্ষা সাতাশগুণ বেশি।’ [সহিহ বুখারি, আয়াত: ৬৪৫]
জামাত করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় হয়, স্বামী সামনে দাঁড়াবে আর স্ত্রী পিছনে দাঁড়াবে। একদম সমান সমান দাঁড়াবে না। যদি একদম বরাবর দাঁড়ায় তাহলে নামায হবে না। যদি স্বামীর পায়ের গোড়ালীর পিছনে দাঁড়ায়, তাহলেই ইক্তিদা সহীহ হবে।
المرأة إذا صلت مع زوجها في البيت إن كان قدمها محل أقدام الزوج لا تجوز صلاتهما بالجماعة، وإن كان قدمها خلف قدم الزوج إلا أنها طويلة تقع رأس المرأة في السجود قبل رأس الزوج جازت صلاتهما؛ لأن العبرة للقدم، (الدر المختار، كتاب الصلاة، باب الامامة-1/572، البحر الرائق، كتاب الصلاة، باب الامامة-1/261، الفتاوى التاتارخانية، كتبا الصلاة، الفصل السابع فى بيان مقام الامام والمأموم-1/622)
সারমর্মঃ
স্ত্রী যখন বাসায় তার স্বামীর সাথে নামাজ আদায় করবে,সেক্ষেত্রে স্ত্রীর পা যদি স্বামীর পায়ের বরাবর হয়ে যায়,তাহলে তাদের নামাজ জায়েজ হবেনা।
তবে স্ত্রীর পা যদি স্বামীর পায়ের পিছনে হয়,তাহলে উক্ত নামাজ জায়েজ হবে।
স্বামী-স্ত্রী উভয়ে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবে। তবে স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে সংলগ্ন না দাঁড়িয়ে পেছনের সারিতে একা দাঁড়াবে। অপারগতায় ডান পাশে একটু পেছনে সরে দাঁড়ালেও নামাজ হয়ে যাবে। তবে স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে সমান হয়ে দাঁড়াতে পারবে না, কারণ এতে উভয়ের নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ১/৫৭২)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী ডান দিকে একটু পিছনে দাঁড়াবে।
পেছনের সারিতে একা দাঁড়ালে ভালো।
মাগরিব,ইশা আর ফজরের নামাজের ক্ষেত্রে স্বামী সূরা কিরাত উচ্চস্বরে পড়বে।
বাকি নামাজ গুলোতে নিম্নস্বরে কিরাআত পড়বে। তাকবির উঁচু আওয়াজে দিবে।
স্ত্রী কোনো সুরা কিরাআত পাঠ করবেনা।
শুধুমাত্র তাকবির,রুকু সেজদার তাসবিহ,আর তাশাহুদ দরুদ শরীফ, দোয়ায়ে মাছুরা পড়বে।
নফল সুন্নাতও কোনো সময় জামাতে পড়া যাবে,তবে অভ্যস্ত হওয়া যাবেনা।
(০২)
ফরজ গোসলের সময় মহিলাদের মাথার বেনী খোলা আবশ্যক নয় রবং চুলেরে গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট।
শুরায়হ্ ইবনু ‘উবায়িদ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুবাইর ইবনু নুফায়ির আমাদেরকে জানাবাতের গোসল সম্পর্কে ফাতাওয়াহ দেন যে, সাওবান (রাঃ) তাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেনঃ একদা তাঁরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এ সম্পর্কে ফাতাওয়াহ চাইলে তিনি বলেনঃ
أَمَّا الرَّجُلُ فَلْيَنْشُرْ رَأْسَهُ فَلْيَغْسِلْهُ حَتَّى يَبْلُغَ أُصُولَ الشَّعْرِ وَأَمَّا الْمَرْأَةُ فَلَا عَلَيْهَا أَنْ لَا تَنْقُضَهُ لِتَغْرِفْ عَلَى رَأْسِهَا ثَلَاثَ غَرَفَاتٍ بِكَفَّيْهَا
“পুরুষ লোক তার মাথার চুল এমনভাবে ছেড়ে ধুয়ে নিবে, যাতে পানি চুলের গোড়ায় পৌঁছে যায়। তবে মহিলাদের মাথার চুল না খুললেও চলবে। তারা উভয় হাতে তিন অঞ্জলি পানি নিয়ে মাথায় ঢেলে দিবে।” (গ্রন্থঃ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত), অধ্যায়ঃ ১/ পবিত্রতা অর্জন ( كتاب الطهارة ), হাদিস নম্বরঃ ২৫৫)
(০৩)
এখানে পিরিয়ড কোন ওয়াক্তে বন্ধ হলো,সেটি ধর্তব্য।
যেই ওয়াক্তে হায়েজ বন্ধ হয়েছে,সেই ওয়াক্তের নামাজ গোসল করে আদায় করতে হবে।
যেমন মনে করুন দুপুর ৩-০০ টার হায়েজ বন্ধ হয়েছে,তো সেদিনের জোহর থেকে নামাজ শুরু করতে হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ