আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
133 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (56 points)
edited by
আস্সালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ

১. এক ধরনের চকলেট মোল্ড পাওয়া যায়, যাতে মারমেইডের লেজ অর্ধেক কাটা, শামুক, ঝিনুক ইত্যাদির  3D আকৃতির চকলেট বানানো যায়৷ তবে, নাক, চোখ, মুখ বোঝা যায়না৷ 3D হলেও একপার্শ্বে তা সমতল৷ এক্ষেত্রে এসব থিম চকলেট বানানো জায়েজ হবে?

২. ইমোজি থিম চকলেট বানানো জায়েজ হবে?

৩. একজন নারী হিসেবে বাহিরে বের হওয়ার সময়ে বোরখার সবচেয়ে উত্তম পোষাক এবং এর সাথে পা কভার করা ফুল স্নিকার্স উত্তম৷ কিন্তু, অনেকসময় সফররত অবস্থায় পাব্লিক ওয়াশরুমে যেতে হয়, এক্ষেত্রে-

i) সব মানুষ যেহেতু পবিত্রতার বিষয়ে সচেতন না, সেহতু প্রস্রাবের ছিটা বা নাপাকি থাকার বিস্তর আশংকা থাকে৷ জুতার নিচে নাপাকির পানি লেগে যায়৷ আর যেভেতু পাব্লিক ওয়াশরুমগুলোতে গন্ধ আর ময়লা থাকে তাই গন্ধ আর রং এর উপর ভিত্তি করে নাপাকির চেনা প্রায় অসম্ভব৷ এক্ষেত্রে, জুতার নিচে যদি নাপাকির থাকে তবে তা মাটিতে ভালো করে ঘষে নিলে পাক হয়ে যাবে?

 ii) আর যদি জুতা পাক না হয়, সেক্ষেত্রে তা হাঁটার সময় বোরখার নিচে লেগে যায় এবং সেখান থেকে মোজা, কাপড়ে এবং সেখান থেকে শরীরেও লেগে যায়৷ এক্ষেত্রে রাস্তায় সালাত আদায় করার হুকুম কি?

৪. হুরমত মুহসারাত ৪ ফিকহেই সাব্যস্ত হয়?

৫. একজনের সম্ভবত ifatwa.info তে কিছুদিন আগের করা প্রশ্নের অংশ ছিল হুরমত মুহসারাত আহলে হাদীসে নাই৷ বিষয়টা সঠিক?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِى الْحَسَنِ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ إِنِّى رَجُلٌ أُصَوِّرُ هَذِهِ الصُّوَرَ فَأَفْتِنِى فِيهَا. فَقَالَ لَهُ ادْنُ مِنِّى. فَدَنَا مِنْهُ ثُمَّ قَالَ ادْنُ مِنِّى. فَدَنَا حَتَّى وَضَعَ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ قَالَ أُنَبِّئُكَ بِمَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ « كُلُّ مُصَوِّرٍ فِى النَّارِ يَجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسًا فَتُعَذِّبُهُ فِى جَهَنَّمَ ». وَقَالَ إِنْ كُنْتَ لاَ بُدَّ فَاعِلاً فَاصْنَعِ الشَّجَرَ وَمَا لاَ نَفْسَ لَهُ.

হযরত সাঈদ বিন আবুল হাসান বলেন, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ এর কাছে এসে বলল, আমি চিত্রকর। এবং চিত্র অংকন করি। এতএব এ সম্পর্কে আমাকে শরীয়তের বিধান বলে দিন। ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তাঁর কাছে গেল। তিনি পুনরায় বললেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তার এত কাছে গেল যে, ইবনে আব্বাস রা তাঁর হাত ঐ ব্যক্তির মাথার উপর রাখলেন, এবং বললেন, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে এমন একটি হাদীস শুনাচ্ছি, যা আমি রাসূল সাঃ এর কাছে শুনেছি। আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি যে, “সকল চিত্রকরই দোযখে যাবে। আর প্রত্যেক চিত্রের পরিবর্তে জীবিত এক ব্যক্তিকে বানানো হবে, যা দোযখে তাকে শাস্তি দেবে”। ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, যদি তোমাকে এরূপ করতেই হয়, তাহলে গাছ-পালা বা এমন বস্তুর ছবি তৈরী কর যা প্রাণী নয়। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৬২}

ن عبد الله بن عمر رضي الله عنهما أخبره : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال ( إن الذين يصنعون هذه الصور يعذبون يوم القيامة يقال لهم أحيوا ما خلقتم 

হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যে লোকেরা ছবি আঁকে, কিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দেয়া হবে। আর তাদের বলা হবে যে, যা তোমরা বানিয়েছো তাতে প্রাণ দাও। {তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৬৯৪১, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬০৭, ৭১১৯, ৫৬১২, ৫৬১৬, ৭১১৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৫৭, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৮৪৫, }

عن سعيد بن أبي الحسن قال : كنت عند ابن عباس رضي الله عنهما إذ أتاه رجل فقال يا أبا عباس إني إنسان إنما معيشتي من صنعة يدي وإني أصنع هذه التصاوير . فقال ابن عباس لا أحدثك إلا ما سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول سمعته يقول ( من صور صورة فإن الله معذبه حتى ينفخ فيها الروح وليس بنافخ فيها أبدا ) . فربا الرجل ربوة شديدة واصفر وجهه فقال ويحك إن أبيت إلا أن تصنع فعليك بهذا الشجر كل شيء ليس فيه روح

হযরত সাঈদ বিন আবিল হাসান রহঃ বলেন, আমি একদা হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ এর কাছে ছিলাম। তখন তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এল। লোকটি এসে বলল-‘হে ইবনে আব্বাস! আমার উপার্জনের নির্ভরতা আমার হাতের সৃষ্টির উপর, আমি ছবি আঁকি’। হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ বললেন-‘আমি তোমার কাছে সেই কথা বর্ণনা করছি, যা আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি, আমি রাসূল সাঃ কে এটা বলতে শুনেছি যে, যেই ব্যক্তি ছবি বানায়, তাকে আল্লাহ তায়ালা শাস্তি দিতে থাকবেন যতক্ষণ না সে উক্ত ছবিতে প্রাণ দিতে পারে, আর সেই ব্যক্তি কোনদিন তাতে প্রাণ দিতে পারবে না’। একথা শুনে লোকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। আর তার চেহারা পাংশু হয়ে গেল। তখন হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ বললেন-“আরে ভাই! যদি তুমি বানাতেই চাও, তাহলে গাছের ছবি আঁকো। আর প্রত্যেক ঐ বস্তুর ছবি আঁকো, যাতে প্রাণ নেই। {তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৬৪৩৪, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২১১২, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদীস নং-২৫৭৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৩৯৪, মু’জামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১১, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৮৪৮}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু শামুক, ঝিনুক ইত্যাদির
 নাক,মুখ,চেহারা কিছুই বুঝা যায়না,সবই সমতল,তাই এসব 3D আকৃতির চকলেট বানানো যাবে।

তবে এক্ষেত্রে শামুক, ঝিনুকের মাথার আকার তো বুঝা যায়না,তাই জায়েজ হচ্ছে।
যদি কোনো প্রানীর নাক মুখ সমতল করার পরেও তাদের মাথার আকার আকৃতি বুঝা যায়,তাহলে সেসব 3D আকৃতির চকলেট বানানো যাবেনা।
সেই সময় মাথা কর্তন করা লাগবে।

মাথা কর্তিত থাকলে সেই ছবি হারামের হুকুম থেকে বাহির হয়ে যাবে। যেমনঃ হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ : " ﺍﻟﺼُّﻮﺭَﺓُ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗُﻄِﻊَ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﺑِﺼُﻮﺭَﺓٍ ."

প্রাণীর মাথা-ই হল মূলত ছবি তথা প্রাণীর মাথাটাই ছবির উল্লেখযোগ্য অংশ।যখন কোনো ছবির অাকৃতি থেকে মাথাকে কেটে ফেলা হবে,তখন সেটা যেন কোনো ছবিই না।(সুনানে বায়হাক্বী-১৪৫৮০)

আরো জানুনঃ

(০২)
জায়েজ নেই।
এটিই অধিকাংশ আলেমদের মত।

(০৩)
(!) এতে পাক হবেনা।
আর জুতার নিচে নাপাকি থাকায় নামাজ যেহেতু জুতা পড়ে পড়া হচ্ছেনা,তাই এতে সমস্যা নেই।

(!!)
এক্ষেত্রে বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় জুতার নিচে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

(০৪)
না,চার ফিকহেই সাব্যস্ত হয়না।

(০৫)
হ্যাঁ, বিষয়টি সঠিক।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...