আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
107 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (56 points)
আস্সালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ

১. বমি, রক্ত, পূঁজ, পানি কাপড়ে ১ দিরহাম পরিমানের বেশি লেগে থাকলে কি তা নাপাকির কাপড় হিসেবে বিবেচিত হবে? শরীরে যদি লেগে থাকে পরবর্তীতে সেগুলো পরিষ্কার না করে শুধু অযু করলে সালাত পড়া যাবে?

২. হাম্বলি ফিকহ অনুযায়ী অযুতে হাত কনুই পর্যন্ত দোয়ার ক্ষেত্রে কনুই সহ ধুতে হবে নাকি কনুই এর নিচ অবধি ধুতে হবে?

৩. হাম্বলি ফিকহ অনুযায়ী অযুর সময় কতটুকু মাথা মাসের করতে হবে?

৪. হাম্বলি ফিকহ অনুযায়ী পা কতটুকু ধুতে হবে?

৫. হাম্বলি ফিকহ অনুযায়ী সালাতের সময় পা কতটুকু ঢাকতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো পাক পবিত্র কাপড়ে নামাজ আদায় করতে হবে।
আল্লাহ তায়ালা সুরা মুদ্দাচ্ছির এর ৪নং আয়াতে ইরশাদ করেন
وثيابك فطهر 
তোমরা কাপড় পবিত্র করো।
,
সুতরাং কোনো  নাপাক কাপড়ে নামাজ পড়া যাবেনা।
এতে নামাজ আদায় হবেনা।
,
হ্যাঁ নাপাকির পরিমান  যদি এক দিরহাম থেকে কম হয়, তাহলে উক্ত কাপড়সহ নামায পড়া জায়েজ আছে।
কেননা সেটি শরীয়তে মাফ।
আর যদি নাপাকির পরিমান এক দিরহাম বা তার চেয়ে বেশি পরিমাণ হয়, তাহলে উক্ত কাপড়সহ নামায পড়া জায়েজ নয়। 

عن رسول  الله  صلى الله عليه و سلم قال : تعاد الصلاة من قدر الدرهم من الدم (سنن الدر قطنى، كتاب الصلاة، باب قدر النجاسة التي تبطل الصلاة، رقم الحديث-1)

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-এক দিরহাম পরিণাম রক্তের দরুন নামাযকে পুনরায় আদায় কর।
 {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৩৮৯৬, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-১০৭৮৩, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী, হাদীস নং-১৩২৩, আল জামেউল কাবীর, হাদীস নং-২৩৮}

فلما ذكره صاحب الأسرار عن علي وبن مسعود أنهما قدرا النجاسة بالدرهم وكفى بهما حجة في الاقتداء وروي عن عمر أيضا أنه قدره بظفره(عمدة القارى شرح صحيح البخارى، كتاب الوضوء،  باب غسل الدم، رقم الحديث-227،3/140

হযরত আলী রাঃ এবং ইবনে মাসউদ রাঃ [কাপড়] নাপাক হওয়ার পরিমাণ নির্দিষ্ট করেছেন এক দিরহাম। আর আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ নির্ধারণ করেছেন  নখ পরিমাণ। {উমদাতুল কারী-৩/১৪০, আদিল্লাতুল হানাফিয়্যাহ-১০১}
,
আরো জানুনঃ
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেগুলো পরিষ্কার না করে শুধু অযু করলে সালাত পড়া যাবেনা।
এতে সালাত আদায় হবেনা। 

(০২)
হাম্বলি ফিকহ অনুযায়ী অযুতে হাত কনুই পর্যন্ত ধোয়ার ক্ষেত্রে কনুই সহ ধৌত করতে হবে।

হাম্বলি মাযহাবের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ আল কাফি ১/৬৩ তে আছেঃ

فصل:
ثم يغسل يديه إلى المرفقين، وهو فرض بالإجماع، لقول الله تعالى: {وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ} [المائدة: 6] . ويجب غسل المرفقين؛ لأن جابراً - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قال: «كان النبي - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - إذا توضأ أمر الماء على مرفقيه» ، رواه الدارقطني، وفيه: " دار الماء " وهذا يصلح بياناً؛ لأن " إلى " تكون بمعنى " مع " كقوله تعالى: {مَنْ أَنْصَارِي إِلَى اللَّهِ} [آل عمران: 52] [أي: مع الله] ، {وَلا تَأْكُلُوا أَمْوَالَهُمْ إِلَى أَمْوَالِكُمْ} [النساء: 2] .
সারমর্মঃ
কনুই সহ ধোয়া ওয়াজিব, কেননা জাবের রাঃ বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ যখন অযু করতেন,তখন পানি কনুই এর উপর পানি পৌছাতে আদেশ করতেন।
وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ 
আয়াতে বর্ণিত إلي শব্দটি مع এর অর্থে ব্যবহৃত হবে। 

(০৩)
হাম্বলি ফিকহ অনুযায়ী অযুর সময় সম্পূর্ণ মাথা মাসেহ করা ওয়াজিব।
,
হাম্বলি মাযহাবের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ আল কাফি ১/৬৪ তে আছেঃ

فصل:
ثم يمسح رأسه، وهو فرض بغير خلاف، لقول الله تعالى: {وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ} [المائدة: 6] وهو ما ينبت عليه الشعر المعتاد في الصبي مع النزعتين. ويجب استيعابه بالمسح؛ لِقَوْلِهِ تَعَالَى: {وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ} [المائدة: 6] والباء للإلصاق، فكأنه قال: امسحوا رؤوسكم، وصار كقوله سبحانه: {فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ مِنْهُ} [المائدة: 6] قال ابن برهان: من زعم أن الباء للتبعيض، فقد جاء أهل اللغة بما لا يعرفونه
সারমর্মঃ
পূর্ণ মাথা মাসাহ করা ওয়াজিব।
 وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ
আয়াতে বর্ণিত باء এটি الصاق এর  অর্থে ব্যবহৃত হবে। 

(০৪)
হাম্বলি ফিকহ অনুযায়ী পা টাখনুসহ ধৌত করতে হবে। 

হাম্বলি মাযহাবের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ আল কাফি ১/৬৬, ১/৬৭ তে আছেঃ

فصل:
ثم يغسل رجليه إلى الكعبين، وهو فرض لِقَوْلِهِ تَعَالَى: {وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ} [المائدة: 6]
ويدخل الكعبين في الغسل لما ذكرنا في المرفقين، ولا يجزئ مسح الرجلين، لما روى عمر «أن رجلا ترك موضع ظفر في قدمه اليمنى فأبصره النبي - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -، فقال: " ارجع فأحسن وضوءك " فرجع ثم صلى» رواه مسلم.
সারমর্মঃ
টাখনু ধোয়াত মধ্যে দাখিল হবে। যেমনটি আমরা কনুইয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখ করেছি।
শুধু পা ধোয়া যথেষ্ট হবেনা।
কেননা হাদীস শরীফে এসেছেঃ    

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি অযু করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হল। কিন্তু (অযুতে) তার পায়ে নখ পরিমাণ জায়গা শুকনা ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘ফিরে যাও এবং উত্তমরূপে আবার অযু করে এসো।
(মুসলিম শরীফ)

(০৫)
হাম্বলি ফিকহ অনুযায়ী মহিলাদের জন্য সালাতের সময় পূর্ণ পা ঢাকতে হবে।
এটি সতরের অন্তর্ভুক্ত।  

وعورتها عند الحنابلة جميع بدنها ، ويستثنى فقط الوجه وما عداه منها فهو عورة .
সারমর্মঃ
হাম্বলি মাযহাবের উলামায়ে কেরামদের মতে নামাজে মহিলাদের সতর পুরো শরীর,শুধুমাত্র চেহারা ব্যাতিত।
তাছাড়া বাকি শরীর সতর। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (56 points)
+1
হাম্বলি ফিকহ অনুযায়ী সালাতে মুখ ব্যতীত পুরো শরীর সতর হলে, হাতের কব্জি পর্যন্ত তালু আর পাতাও সতরের অন্তর্ভূক্ত হবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 70 views
...