আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
213 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমি একজন ছেলে, বাংলাদেশ থেকে। আমি একটা মেয়ের সাথে কথা বলার প্রেক্ষিতে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মেয়েটি ভারতীয় মুসলিম সুন্নী। মেয়েটি এবং তার পরিবার ইসলামি অনুশাসন মেনে চলেন, তাই সম্পর্কের প্রথম থেকেই সে আমাকে বিয়ের জন্যে বলছিলো। আমাদের এই প্রেমের সম্পর্কের ব্যাপারে আমাদের দুই পরিবার জানেন। আমার বাবা মা মন থেকে রাজি না হলেও আমার দিকে তাকিয়ে এই বিয়ের ব্যাপারে রাজি হয় এবং মেয়ের ফ্যামিলিকে জানানো হয় যে আমাকে ২০২৩ সালে বিয়ে দিবে। মেয়ের পরিবার এটা মেনে নেয় এবং তারা আমাকে ২০২৪ পর্যন্ত সময় দেয়৷ মেয়ের পরিবারের আমাকে নিয়ে কোনো আপত্তি নেই, আমাকে উনারা মেনে নিয়েছেন। এর মাঝে গত বছর মেয়ের বড় বোন সহ মেয়েও আমাকে বলেছিলো অন্তত অনলাইনে বিয়ে করে ফেলতে, কারণ বর্তমানে মেয়ের বয়স ২৫, আমার ২৭। মেয়ের একটি ছোটো বোন আছে, বিয়েও ঠিক কিন্তু মেয়ের জন্যে বিয়ে দিতে পারছেন না। আবার বর্তমানে অনেক বিয়ের প্রস্তাব আসছে মেয়ের জন্যে। মেয়ের বংশমর্যাদা ভাল।

মেয়ে ইসলামিক মনমানসিকতার এবং নম্র ভদ্র। তাই প্রায়ই সে বলে এই হারাম সম্পর্ক না রাখার জন্যে, একবারে বিয়ের জন্যে। আমি বর্তমানে বেকার, এবং উচ্চশিক্ষার জন্যে দেশের বাইরে যাওয়ার চেষ্টায় আছি, এই পরিস্থিতিতে আমার পরিবারকে প্রেশার দিয়েও লাভ হবে না, উনারা এখন বিয়ে দিবেন না। আমার মায়ের কথা, তুমি আগে আর্থিকভাবে নিজের খরচ নিজে চালানোর উপযুক্ত হউ, এর পর বিয়ে। আবার আমার পরিবার মেয়ের পরিবার নিয়ে সরাসরি ভারতে গিয়ে খোঁজ নেয়াছাড়া বিয়ে দিবে না, এই সিদ্ধান্তে উনারা বদ্ধপরিকর।
এখন এমন পরিস্থিতেতে, ফেতনা দূর করতে আমি কি অনলাইনে বিয়ে করতে পারি? এর তরিকা কি? যদি অনলাইনে বিয়ে করতে চাই তাহলে শুধু আমাকেই আমার ছেলেবন্ধুদের সাক্ষী রেখে বিয়ে করতে হবে। এক্ষেত্রে আমার বাবা মা পরিবার যখন ভারতে যাবে তখন আবার আমাদের বিয়ে আয়োজন করলে আমরা যদি এখনের বিয়ের কথা গোপন রাখি এতে কোনো অসুবিধা হবে?

উত্তর দিয়ে সহায়তা করবেন।

জাজাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানাতাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

 

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যেতাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

 

সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যেতাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল২৩)

 

(অভিভাবক ছাড়া বিবাহ সংক্রান্ত জানুনঃ

 https://ifatwa.info/4801/)

 

নিজে নিজে বিয়ে সম্পর্কে আরো জানুন- https://ifatwa.info/2730/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

. মাতাপিতা সন্তুষ্টি ও অনুমতি নিয়ে সবাইকে অগ্রসর হতে হবে এবং মাতাপিতার সন্তুষ্টিই দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের উত্তম মাধ্যম। মাতাপিতাকে কষ্ট দিয়ে জীবনে সূখী হওয়া যাবে না। তাছাড়া বৈধ ও ভালো কাজে মাতাপিতার নির্দেশ মান্য করাও ওয়াজিব। পিতা মাতা সাধারণত সন্তানদের থেকে ভালো বুঝেন৷ সর্বদা তারা সন্তানদের কল্যাণ চান৷ বিশেষ করে বিয়ে শাদীর বিষয়ে পিতা মাতার মতকেই প্রাধাণ্য দেওয়া উচিত৷ অন্যথায় অনেক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়৷ এটা বিয়ের আগে বুঝে আসে নাতবে বিয়ের পরে ঠিকই সবাই বুঝে৷ অনেক ছেলে মেয়ে যারা নিজেদের পছন্দের ছেলে মেয়েকে আবেগবশত বিয়ে করে পরবর্তীতে অনেক কষ্টে আছে৷

 

২. পূর্বে অনেক ফাতাওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,মাতাপিতার সম্মতি ব্যতীত কখনো কোনো মুসলমান যুবক যুবতীর জন্য একা একা বিয়ে করা সমীচীন হবে না,মঙ্গলজনক হবে না। মাতাপিতাকে না জানিয়ে বালিগ ছেলে মেয়ের বিবাহ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। অনেক উলামায়ে কেরাম অভিভাবকহীন বিয়েকে বাতিল বলে মনে করেন। হানাফি মাযহাব মতে কু'ফু হিসেবে ছেলে মেয়ের সমকক্ষ বা বেশী মর্যাদার অধীকারী হলেই কেবল বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে। নতুবা মেয়ের অভিভাবকের অনুমতির উপর বিয়ে মওকুফ থাকবে।

৩. মেয়ের পরিবার সম্পর্কে ভালো ভাবে খোঁজ খবর না নিয়ে বিয়েতে অগ্রসর হওয়া মনে হয় ঠিক হবে না। তাই পারলে সরাসরি ভারতে গিয়ে দেখে আসুন। তা ছাড়া বিয়ে করে দেশে আনারও বিষয়টা সামনে আছে। সুতরাং ইস্তেখারা করুন।

৪. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এক পদ্ধতিতে বিয়ে করা যাবে আর তা হলো ঐ মেয়ে আপনার বন্ধু কাউকে আপনার সাথে বিয়ে করিয়ে দেওয়ার উকিল বানাবে। অত:পর আপনার ঐ বন্ধু দুই জন স্বাক্ষীর সামনে ঐ মেয়েকে আপনার সাথে বিয়ে করিয়ে দিবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...