بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
যারা লোক-দেখানো ইবাদত
করে তাদের নিন্দা করে বলা হয়েছে,
فويل للمصلين اللذين هم عن
صلواتهم ساهون اللذين هم يراؤن
‘ধ্বংস
সেসব নামাজির জন্য, যারা তাদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন,
যারা প্রদর্শন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া থেকে
বিরত থাকে।’ (সুরা : মাউন, আয়াত : ৪-৭)
প্রদর্শনপ্রিয়তা নিয়তের অসততা, যা ইবাদতকে মূল্যহীন করে দেয়। নিয়ত ঠিক না হলে
আল্লাহর কাছে বান্দার কোনো কাজই গ্রহণযোগ্য নয়। নিয়ত শুদ্ধ হলে আল্লাহ জাগতিক কাজকে
ইবাদতের মর্যাদা দেন। আবার নিয়ত শুদ্ধ না হলেও ইবাদতসমূহ প্রত্যাখ্যান করেন।
قال رسول الله صلى الله عليه
وسلم إنما الأعمال بالنيات
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় কাজের ফলাফল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ (সহিহ বুখারি,
হাদিস : ১)
আল্লামা ইবনে কায়্যিম (রা.) কবিরা গুনাহের তালিকার প্রথমে রিয়ার
আলোচনা করেছেন। ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বলেছেন, ‘জেনে রাখো, নিশ্চয় প্রদর্শনপ্রিয়তা হারাম।
প্রদর্শনকারী আল্লাহর নিকট অপছন্দনীয়। আয়াত, হাদিস ও পূর্ববর্তী
আলেমদের বক্তব্য দ্বারা তা প্রমাণিত।’ (ইহয়াউ উলুমিদ্দিন : ২/৪৮০)
বান্দার আমলে রিয়া যদি ইচ্ছাকৃত হয়, তবে তা যত নগন্যই হোক—সে আমল আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য নয়। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি
শরিককারীদের শরিক থেকে অমুখাপেক্ষী। যে ব্যক্তি কোনো আমল করল এবং তাতে আমার সঙ্গে কাউকে
শরিক করল, আমি তাকে ও যাকে সে শরিক করল তাকে প্রত্যাখ্যান করি।’
(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৫২৮)
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কাউকে দেখানোর জন্য কোন ইবাদত করা রিয়ার
অন্তর্ভুক্ত। রিয়া করা কবীরা গুনাহ। রিয়ামুক্ত ইবাদত করার জন্য বেশী বেশী ইস্তেগফার
করতে হবে এবং রিয়া বা প্রদর্শনপ্রিয়তা
থেকে আত্মরক্ষার জন্য উলামায়ে কেরামগন কয়েকটি প্রচেষ্টার কথা বলেছেন, তা অনুসরণ
করার চেষ্টা করতে হবে। নিম্নে তা তুলে ধরা হলো,
১. ইবাদতের সময় আল্লাহর
অস্তিত্বের স্মরণ করা। এটা চিন্তা করা যে আল্লাহ আমার মনের খবর জানেন; আমি কেন করছি, কী করছি
সব তিনি দেখছেন। হাদিসে যেমন বর্ণিত হয়েছে
ان تعبد الله كأنك تراه فإن لم
تكن تراه فإنه يراك
‘তুমি
আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে কোরো যেন তুমি তাঁকে দেখছ। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে তিনি তোমাকে দেখছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১)
২. রিয়ার ভয়াবহতার
কথা স্মরণ করা। প্রদর্শন আল্লাহর ক্রোধের কারণ, তা সব সময় মনে রাখা।
৩. রিয়ামুক্ত আমলের
পুরস্কারের কথা স্মরণ করা এবং তা অর্জনের প্রত্যয় গ্রহণ করা।
৪. আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত
হয়ে ক্ষমা যাওয়া, যেন তিনি
অনুগ্রহ করে আমলটি কবুল করে নেন.
৫. রিয়ামুক্ত আমলের
তাওফিক চেয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
আপনি ওয়াসওয়াসার প্রতি লক্ষ্য করিবেননা।
এই ওয়াসওয়াসা আসে শয়তানের পক্ষ থেকে,তাই আপনি আমল করেই যাবেন কখনো ওয়াসওয়াসা আসলে
لا حول ولا قوة إلا بالله العلي
العظيم পড়বেন। ইনশাআল্লাহ উক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ
করলে আপনি রিয়া বা লৌকিকতা থেকে রেহাই পাবেন।