আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in সালাত(Prayer) by (3 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ হযরত

ফিকহে হানাফি অনুযায়ী নামাযে নাভির নিচে হাত বাধা সুন্নত।

.সহিহ হাদিস থেকে হানাফি আলেমরা নাভির নিচে হাত বাধার কথা বলেছেন? নাকি দুর্বল হাদিস থেকে? হাদিস সহ দিবেন দয়া করে হযরত।

নাভির নিচে হাত বাধার কিছু হাদিস লিখে দিবেন দয়া করে হযরত, অনেক জরুরত আমার জন্য জানা।

 

ফরয নামাযের পর সম্মিলিত মোনাজাত করা মুস্তাহাব আমার জানা মতে। আমি নিজেই বেশিরভাগ সময় সম্মিলিত মোনাজাত করি। 

.নবি করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্মিলিত মোনাজাত করেছেন। কিন্তু তিনি কি ফরয নামাযের পর সম্মিলিত মোনাজাত করেছিলেন?

যদি করে থাকেন তাহলে তো ঠিক আছে। না করে থাকলে আমরা কেনো ফরয নামাযের পর সম্মিলিত মোনাজাত করি। 

বিস্তারিত জানাবেন দয়া করে। 

. মুস্তাহাব কাকে বলে?

জাযাকাল্লাহু খাইরান 

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
নামাজে নাভীর নিচে হাত বাঁধার দলিলঃ-

★হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রাযি. থেকে বর্ণিত, ‘আমি নবী ﷺ-কে দেখেছি, তিনি নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর নাভীর নীচে রেখেছেন।

সনদসহ রেওয়ায়েতের আরবী পাঠ এই-

حدثنا وكيع، عن موسى بن عمير، عن علقمة بن وائل بن حجر، عن أبيه قال : رأيت النبي صلى الله عليه وسلم  يضع يمينه على شماله في الصلاة تحت السرة.

(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৫১)

এই বর্ণনার সনদ সহীহ।  ইমাম কাসেম ইবনে কুতলূবুগা রহ. (৮৭৯ হি.) বলেন-وهذا إسناد جيد এটি একটি উত্তম সনদ।(আততা’রীফু ওয়াল ইখবার রিতাখরীজি আহাদীছিল ইখতিয়ার-হাশিয়া শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা)

★হযরত আলী রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সুন্নাহ হচ্ছে নামাযে হাতের পাতা হাতের পাতার উপর নাভীর নিচে রাখা।’(মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৮৭৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৭৫৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬৬)

সনদসহ রেওয়ায়েতটির পূর্ণ আরবী পাঠ এই-

حدثنا محمد بن محبوب، حدثنا حفص بن غياث، عن عبد الرحمن بن إسحاق، عن زياد بن زيد، عن أبي جحيفة أن عليا رضي الله عنه قال : السنة وضع الكف على الكف في الصلاة تحت السرة.

 قال المزي في تحفة الأشراف ٨/٤٥٨، هذا الحديث في رواية ابي سعيد بن الأعرابي، وابن داسة وغير واحد عن أبي داود، ولم يذكره أبو القاسم.

★আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ‘নামাযে হাতের পাতাসমূহ দ্বারা হাতের পাতাসমূহ নাভীর নীচে ধরা হবে।’

সনদসহ রেওয়ায়েতটির আরবী পাঠ এই-

حدثنا مسدد، حدثنا عبد الواحد بن زياد، عن عبد الرحمن بن إسحاق الكوفي، عن سيار أبي الحكم، عن أبي وائل قال : قال أبو هريرة رضي الله عنه : أخذ الأكف على الأكف في الصلاة تحت السرة.

(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৭৫৮, তাহকীক : শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামাহ; তুহফাতুল আশরাফ, হাদীস : ১৩৪৯৪)

এই দুই রেওয়ায়েতের সনদে আবদুর রহমান ইবনে ইসহাক নামক একজন রাবী আছেন। ইমাম তিরমিযী রহ. তার সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসকে হাসান বলেছেন। (দেখুন :জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৪৬২; আরো দেখুন : হাদীস ২৫২৭)

উল্লেখ্য, শায়খ আলবানী রাহ.ও আবদুর রহমান ইবনে ইসহাকের সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসকে শাওয়াহেদের (অন্যান্য বর্ণনার সমর্থনের) কারণে সিলসিলাতুস সহীহায় উল্লেখ করেছেন। (দেখুন : সিলসিলাতুস সহীহা)

★তাবেয়ী আবু মিজলায লাহিক ইবনে হুমাইদ রহ. (মৃত্যু : ১০০ হি.-এর পর) নামাযে কোথায় হাত বাঁধবে-এ প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন,يضع باطن كف يمنيه على ظاهر كف شماله ويجعلها أسفل من السرة ‘ডান হাতের পাতা বাম হাতের পাতার পিঠের উপর নাভীর নিচে রাখবে।’(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬৩)

এই রেওয়ায়েতের সনদ সহীহ।

★বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রহ.ও (মৃত্যু : ৯৬ হি.) এই ফতোয়া দিয়েছেন। তিনি বলেন, يضع يمينه على شماله في الصلاة تحت السرة.‘নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর নাভীর নিচে রাখবে।’(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬০)

এই রেওয়ায়েতের সনদ হাসান।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
এখানে দুটি মাসয়ালা।
এক, ফরজ নামাজের পর হাত তুলে মুনাজাত জায়েজ কিনা?

দুই, এ সময়ে সম্মিলিত মুনাজাত জায়েজ কিনা?

এক,
ফরজ নামাজের পর হাত তুলে মুনাজাত করা জায়েজ আছে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আবূ মুহাম্মাদ ইবনু আবি ইয়াহইয়া (রঃ) বলেন,

رایت عبد اللہ بن الزبیر و رئیٰ رجلا رافعا یدیہ قبل ان یفرغ من صلاتہ، فلما فرغ منھا قال: ان رسول اللہ صلی اللہ علیہ و سلم لم یکن یرفع یدیہ حتی یفرغ من صلاتہ۔

আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রা.)একজন নামাযীকে দেখলেন, সে নামায শেষ করার আগেই হাত তুলে মুনাজাত করছে। তিনি তাকে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) নামায সমাপ্ত হওয়ার আগে হাত তুলে মুনাজাত করতেন না। (মাজমাউয যাওয়াইদ, ১০/১৬৯)

এ হাদীস থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাযের পর হাত তুলে মুনাজাত করতেন।

হযরত আবূ উমামাহ (রা.) হতে বর্ণিত,

قیل لرسول اللہ صلی اللہ علیہ و سلم، ای الدعاء اسمع؟ قال: جوف اللیل الآخر، و دبر الصلوات المکتوبات

সাহাবীগণ রাযিয়াল্লাহু তা`আলা আনহুম রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন মুনাজাত বেশি কবূল হয়? রাসূলুল্লাহ (সা.)বললেন, শেষ রাতের মুনাজাত ও ফরয নামাযের শেষের মুনাজাত। (জামি’ তিরমিযী, ২/১৮৮)

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، قَالَ : سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ، عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ : كَانَ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم إِذَا انْصَرَفَ مِنَ الصَّلَاةِ يَقُولُ " لَا إِلَهَ إِلَا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ لَا إِلَهَ إِلَا اللهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ، أَهْلُ النِّعْمَةِ وَالْفَضْلِ وَالثَّنَاءِ الْحَسَنِ لَا إِلَهَ إِلَا اللهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ "

আবুয-যুবাইর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ)-কে মিম্বরে দাঁড়িয়ে ভাষণে বলতে শুনেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফারয সলাত শেষে বলতেনঃ ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুখলিসীনা লাহুদ দীন ওয়ালাও কারিহাল কাফিরুন। আহলুন নি‘আমি ওয়াল ফাদলি, ওয়াস সানায়িল হুসনি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুখলিসীনা লাহুদ দীন ওয়ালাও কারিহাল কাফিরুন।’’

মুসলিম (অধ্যায় : মাসাজিদ, অনুঃ সলাতের পর যিকর করা মুস্তাহাব), নাসায়ী (অধ্যায় : সাহু, অনুঃ সালামের পর তাহলীল করা, হাঃ ১৩৩৮)।

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنِ الْمُسَيَّبِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ وَرَّادٍ، مَوْلَى الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، كَتَبَ مُعَاوِيَةُ إِلَى الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ أَىُّ شَىْءٍ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : إِذَا سَلَّمَ مِنَ الصَّلَاةِ فَأَمْلَاهَا الْمُغِيرَةُ عَلَيْهِ وَكَتَبَ إِلَى مُعَاوِيَةَ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لَا إِلَهَ إِلَا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ " -

মুগীরাহ ইবনু শু‘বাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সলাতের সালাম ফিরানোর পর কোন দু‘আ পাঠ করতেন তা জানার জন্য মু‘আবিয়াহ (রাঃ) মুগীরাহ ইবনু শু‘বাহর কাছে পত্র লিখলেন। অতঃপর মুগীরাহ (রাঃ) মু‘আবিয়াহর (রাঃ) নিকট পত্রের জবাব লিখে পাঠালেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। আল্লাহুম্মা লা মানি‘আ লিমা আ‘ত্বায়তা ওয়ালা মু‘ত্বি‘আ লিমা মানা‘তা ওয়ালা ইয়ানফা‘উ যাল জাদ্দু মিনকাল জাদ্দ।’
বুখারী (অধ্যায় : আযান, অনুঃ সলাতের পর যিকর, হাঃ ৮৪৪), মুসলিম (অধ্যায় : মাসাজিদ, অনুঃ সলাতের পর যিকর করা মুস্তাহাব)।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، قَالَ : كَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ الزُّبَيْرِ يُهَلِّلُ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ فَذَكَرَ نَحْوَ هَذَا الدُّعَاءِ زَادَ فِيهِ " وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَا بِاللهِ لَا إِلَهَ إِلَا اللهُ لَا نَعْبُدُ إِلَا إِيَّاهُ لَهُ النِّعْمَةُ "

আবুয-যুবাইর (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) প্রত্যেক ফারয সলাতের পর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠ করতেন। অতঃপর উপরোক্ত দু‘আর অনুরূপ। তিনি আরো বৃদ্ধি করেনঃ লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ লা না‘বুদু ইল্লা ইয়্যাহুু লাহুন নি‘মাতু..।’’

মুসলিম (অধ্যায় : মাসাজিদ, অনুঃ সলাতের পর যিকর করা মুস্তাহাব), নাসায়ী (অধ্যায় : সাহু, অনুঃ সালামের পর তাহলীল করা, হাঃ ১৩৩৮,আবু দাউদ ১৫০৭)।

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، وَسُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْعَتَكِيُّ، - وَهَذَا حَدِيثُ مُسَدَّدٍ قَالَا حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، قَالَ سَمِعْتُ دَاوُدَ الطُّفَاوِيَّ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو مُسْلِمٍ الْبَجَلِيُّ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، قَالَ سَمِعْتُ نَبِيَّ اللهِ صلي الله عليه وسلم يَقُولُ : وَقَالَ سُلَيْمَانُ : كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي دُبُرِ صَلَاتِهِ " اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَىْءٍ أَنَا شَهِيدٌ أَنَّكَ أَنْتَ الرَّبُّ وَحْدَكَ لَا شَرِيكَ لَكَ، اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَىْءٍ أَنَا شَهِيدٌ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَرَسُولُكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَىْءٍ، أَنَا شَهِيدٌ أَنَّ الْعِبَادَ كُلَّهُمْ إِخْوَةٌ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَىْءٍ اجْعَلْنِي مُخْلِصًا لَكَ وَأَهْلِي فِي كُلِّ سَاعَةٍ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالإِكْرَامِ اسْمَعْ وَاسْتَجِبِ، اللهُ أَكْبَرُ الأَكْبَرُ اللَّهُمَّ نُورَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ " . قَالَ سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ " رَبَّ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ". "اللهُ أَكْبَرُ الأَكْبَرُ حَسْبِيَ اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ اللهُ أَكْبَرُ الأَكْبَرُ "

যায়িদ ইবনু আরক্বাম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। বর্ণনাকারী সুলায়মানের বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক ফারয সলাতের পর বলতেনঃ ‘‘হে আল্লাহ! আপনি আমাদের এবং প্রত্যেক বস্তুর রব্ব। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ আপনার বান্দাহ ও রসূল। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের এবং প্রত্যেক বস্তুর রব্ব! আমাকে এবং আমার পরিবার-পরিজনকে দুনিয়া ও আখিরাতের প্রতি মুহুর্তে আপনার অকৃত্রিম ‘ইবাদাতকারী বানিয়ে দিন। হে মহান পরাক্রমশালী ও সম্মানের অধিকারী! আমার ফরিয়াদ শুনুন, আমার দু‘আ কবুল করুন। আল্লাহ মহান, আপনি সবচেয়ে মহান। হে আল্লাহ! আসমান ও যমীনের নূর। সুলায়মান ইবনু দাউদ বলেছেন, আপনিই আকাশ ও যমীনের রব্ব! হে আল্লাহ! আপনি মহান, অতি মহান। আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট এবং উত্তম অভিভাবক। হে আল্লাহ! আপনি মহান! অতি মহান।’’
(আবু দাউদ ১৫০৮.আহমাদ (৪/৩৬৯), নাসায়ী ‘আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লায়লাহ’ (১৮৩, হাঃ ১০১)।

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُعَاذٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَمِّهِ الْمَاجِشُونَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم إِذَا سَلَّمَ مِنَ الصَّلَاةِ قَالَ " اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَسْرَفْتُ، وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لَا إِلَهَ إِلَا أَنْتَ"
। ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সলাতের সালাম ফিরানোর পর বলতেনঃ

আল্লাহুম্মাগ ফিরলী মা ক্বাদ্দামতু ওয়ামা আখখারতু ওয়ামা আসরারতু ওয়ামা আ‘লানতু ওয়ামা আসরাফতু ওয়ামা আনতা আ‘লামু বিহি মিন্নী আনতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আনতাল মুয়াখখিরু লা ইলাহা ইল্লা আনতা।’’

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন যা কিছু আমি পূর্বে ও পরে করেছি, গোপনে, প্রকাশ্যে ও সীমালঙ্ঘন করেছি, এবং যা আমার চেয়ে আপনি অধিক জ্ঞাত। আপনিই আদি ও অন্ত। আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই।
(আবু দাউদ ১৫০৯)

 حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، وَخَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم كَانَ إِذَا سَلَّمَ قَالَ " اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالإِكْرَامِ "

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সলাতের সালাম ফিরানোর পর বলতেনঃ ‘‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারকতা ইয়া যালজালালি ওয়াল ইকরাম।’

মুসলিম (অধ্যায় : মাসাজিদ, অনুঃ সলাতের পর দু‘আ করা মুস্তাহাব), নাসায়ী (অধ্যায় : সাহু, অনুঃ ইসতিগফারের পর যিকর করা, হাঃ ১৩৩৭), তিরমিযী (অধ্যায় : সলাত, হাঃ ২৯৮), ইবনু মাজাহ (অধ্যায় : সলাত ক্বায়িম, অনুঃ সালামের পর কী বলবে, হাঃ ৯২৪) ‘আসিম হতে।

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَيْمَنَ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ يَعْقُوبَ بْنِ إِسْحَاقَ، عَمَّنْ حَدَّثَهُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ الْقُرَظِيِّ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَا تَسْتُرُوا الْجُدُرَ، مَنْ نَظَرَ فِي كِتَابِ أَخِيهِ بِغَيْرِ إِذْنِهِ فَإِنَّمَا يَنْظُرُ فِي النَّارِ، سَلُوا اللهَ بِبُطُونِ أَكُفِّكُمْ وَلَا تَسْأَلُوهُ بِظُهُورِهَا، فَإِذَا فَرَغْتُمْ فَامْسَحُوا بِهَا وُجُوهَكُمْ "

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস রাযিয়াল্লাহু ‘আনহুমা সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের ঘরের দেয়ালগুলো পর্দায় আবৃত করো না। যে ব্যক্তি বিনা অনুমতিতে তার ভাইয়ের চিঠিতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো, সে যেন জাহান্নামের আগুনের দিকে তাকালো। তোমরা হাতের পৃষ্ঠের দ্বারা নয় বরং হাতের তালুর দ্বারা আল্লাহর কাছে চাইবে। অতঃপর দু‘আ শেষে তোমাদের হাতের তালু দিয়ে নিজের চেহারা মুছবে।
(আবু দাউদ ১৪৮৫.বায়হাক্বী ‘সুনান’ (২/২১২), হাকিম (৪/২৭০)।

দুইঃ-
এসময় আকিদা বিশুদ্ধ রেখে সম্মিলিত ভাবে মুনাজাত করা যাবে। 
কোনো সমস্যা নেই।
একবার মুসা আঃ দু'আ করেছিলেন,হারুন আঃ সাথে সাথে আমীন বলেছিলেন।

যেমন, সূরায় ইউনুসে এসেছে-

ﻭَﻗَﺎﻝَ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺁﺗَﻴْﺖَ ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥَ ﻭَﻣَﻸﻩُ ﺯِﻳﻨَﺔً ﻭَﺃَﻣْﻮَﺍﻻً ﻓِﻲ ﺍﻟْﺤَﻴَﺎﺓِ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻟِﻴُﻀِﻠُّﻮﺍْ ﻋَﻦ ﺳَﺒِﻴﻠِﻚَ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﻃْﻤِﺲْ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟِﻬِﻢْ ﻭَﺍﺷْﺪُﺩْ ﻋَﻠَﻰ ﻗُﻠُﻮﺑِﻬِﻢْ ﻓَﻼَ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﺍْ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺮَﻭُﺍْ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏَ ﺍﻷَﻟِﻴﻢَ

মূসা বলল, হে আমার পরওয়ারদেগার, তুমি ফেরাউনকে এবং তার সর্দারদেরকে পার্থব জীবনের আড়ম্বর দান করেছ, এবং সম্পদ দান করেছ-হে আমার পরওয়ারদেগার, এ জন্যই যে তারা তোমার পথ থেকে বিপথগামী করব! হে আমার পরওয়ারদেগার, তাদের ধন-সম্পদ ধ্বংস করে দাও এবং তাদের অন্তরগুলোকে কাঠোর করে দাও যাতে করে তারা ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমান না আনে যতক্ষণ না বেদনাদায়ক আযাব প্রত্যক্ষ করে নেয়।

আল্লাহ তা'আলা এই দু'আর জবাবে বলেন,

ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺪْ ﺃُﺟِﻴﺒَﺖ ﺩَّﻋْﻮَﺗُﻜُﻤَﺎ ﻓَﺎﺳْﺘَﻘِﻴﻤَﺎ ﻭَﻻَ ﺗَﺘَّﺒِﻌَﺂﻥِّ ﺳَﺒِﻴﻞَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻻَ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ

বললেন, তোমাদের দু'জনের দোয়া মঞ্জুর হয়েছে। অতএব তোমরা দুজন অটল থাকো এবং তাদের পথে চলো না যারা অজ্ঞ।(সূরা ইউনুস-৮৮-৮৯

দেখুন এই আয়াতে মুসা আঃ এবং হারুন আঃ এক সাথে দু'আ করেছিলেন।
,
আরো জানুনঃ- 


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাত সম্পর্কে ফুকাহায়ে কিরামের ভিন্ন রকম পরস্পর বিরোধী মতামত পাওয়া যায়।

অনেক উলামায়ে কিরাম প্রচলিত পদ্ধতির মুনাজাতকে বিদ'আত আখ্যায়িত করেছেন।

অন্যদিকে আরো কিছুসংখ্যক উলামায়ে কিরাম এটাকে মুস্তাহাব বলেছেন।(ইমদাদুল ফাতাওয়া-১/৬৪৫ - ৬৬৬)
,
সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য কথা হল,
যদি আক্বিদা বিশুদ্ধ থাকে তথা এমন থাকে যে,নামাযের পর প্রচলিত মুনাজাত পদ্ধতি জরুরী কোনো বিষয় নয়,বরং ইচ্ছাধীন,তাহলে মুনাজাত বৈধ বা জায়েয।বিদ'আত ও নয় আবার মুস্তাহাব ও নয় বরং জায়েয তথা মুবাহ,করাও যেতে পারে আবার নাও করা যেতে পারে।
এই মুনাজাতের উপর পুরুস্কার-তিরস্কার কিছুই আসবে না।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
মুস্তাহাব বলা হয় যা আমল করলে সওয়াব রয়েছে, কিন্তু ছেড়ে দিলে কোন গুনাহ নেই। 

ছেড়ে দেয়ার তুলনায় আমল করা উত্তম।
যেমন, জুম'আর দিন সূরা কাহাফ পড়া, জুম'আর দিন বেশি বেশি দুরুদ পড়া, 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...