বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(ক)
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى : أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِينَ مَا لَا عَيْنٌ رَأَتْ وَلَا أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلَا خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ ذُخْرًا بَلْهَ مَا أُطْلِعْتُمْ عَلَيْهِ ) ، ثُمَّ قَرَأَ ( فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ )
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমন সব বস্তুরাজি তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এবং কোন ব্যক্তির মন কল্পনা করেনি। এসব ছাড়া যা কিছুই তোমরা দেখছ, তার কোন মূল্যই নেই। তারপর এ আয়াত পাঠ করলেন, কেউ জানে না তাদের জন্য নয়ন তৃপ্তিকর কী লুক্কায়িত রাখা হয়েছে, তাদের কৃতকর্মের পারিতোষিক হিসেবে। আবূ মুয়াবিয়াহ আ’মাশ হতে তিনি আবূ সালিহ হতে বর্ণনা করেন, আবূ হুরাইরাহ قُرَّةِ أَعْيُنٍএর স্থলে قُرَّاتِ أَعْيُنٍ পড়তেন।(সহীহ বোখারী-৪৭৮০-শামেলা)
রাসূলুল্লাহ সাঃ জান্নাত জাহান্নাম দেখেছেন,
‘ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) হতে বর্ণিত।
عن عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ( اطَّلَعْتُ فِي الْجَنَّةِ فَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا الْفُقَرَاءَ وَاطَّلَعْتُ فِي النَّارِ فَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا النِّسَاءَ )
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমি জান্নাতের অধিবাসী সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছি। আমি জানতে পারলাম, জান্নাতে অধিকাংশ অধিবাসী হবে দরিদ্র লোক। জাহান্নামীদের সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছি, আমি জানতে পারলাম, এর বেশির ভাগ অধিবাসী নারী।’ (সহীহ বোখারী-৩২৪১শামেলা)
জান্নাতীদের জন্য আল্লাহ পাক যা কিছু তৈরী করেছেন, তা আল্লাহ ব্যতিত অন্য কেউ দেখেনি। রাসূলুল্লাহ সাঃ যা কিছু দেখেছিলেন, তা ছিল নমুনামাত্র,পূর্ণ অবকাঠামো দেখেননি, যৎ সামান্য দেখেছিলেন। এজন্য আল্লাহ বলতেছেন, কোনো চোখ দেখেনি অর্থাৎ জান্নাতের সমস্ত কিছু যা আমি নেককার বান্দাদের জন্য তৈরী করেছি, তা কেউ দেখেনি।
মোটকথা:
রাসূলুল্লাহ সাঃ কে সংক্ষিপ্ত আকারে জান্নাত জাহান্নাম দেখিয়েছেন। আল্লাহর উদ্দেশ্য হল, বিস্তারিত ভাবে আমি কাউকে দেখাইনি।
(২) আল্লাহ বলছেন, দেখেনি।তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে দেখাতে পারেন। আল্লাহ শুধুমাত্র রাসূলুল্লাহ কে প্রদর্শন করিয়েছিলেন।
(খ)
যেহেতু হাদীসে প্রত্যেকটা নামাযের মুস্তাহাব ওয়াক্ত বলে দেয়া হয়েছে, তাই এই মুস্তাহাব ওয়াক্তের পূর্বে যদিও ওয়াক্তের ভিতর তার মৃত্যু হয় বা মাসিক শুরু হয়, তাহলে তার কোনো গোনাহ হবে না।এবং এই নামাযের দায়ভাড়ও তাকে নিতে হচ্ছে না। তবে সে পরবর্তীতে সুস্থ হলে, তাকে উক্ত নামায কাযা করতে হবে।
(গ)
মৃতব্যক্তির শরীর উপর কালেমা সম্ভলিত চাদর ইত্যাদি রাখার কোনো নিয়ম বা পদ্ধতি শরীয়তে নাই।সুতরাং এটা পরিত্যাজ্য।
(ঘ)
এখানে ইমাম আবু হানিফা প্রশ্ন করার বা না করার ইস্যু কেন চলে আসছে? আল্লাহ বলছেন যে, যারা বিজ্ঞজন তাদের অনুসরণ করতে। তাই আমরা ইমাম আবু হানিফা বা ইমাম শাফেয়ীর অনুসরণ করছি।
হ্যা, ইমাম আবু হানিফা ব্যতিত অন্য যে কোনো ইমামকে অনুসরণ করতে পারবেন।তবে সর্বক্ষেত্রে এক ইমামকেই অনুসরণ করতে হবে।নতুবা নফসের প্রবৃত্তির অনুসরণের সম্ভাবনা থেকে যাবে।
(ঙ)
এটা শেখ সাদীর কবিতা।এই কবিতার অর্থ খুবই সুন্দর।তবে একে সুন্নাহ দ্বারা বর্ণিত মনে করা যাবে না।ওয়াজ মাহফিলে এটা বলার পূর্বে শেখ সাদীর নাম উচ্ছারণ করাই শ্রেয়,যাতে মানুষের মনের মধ্যে ভূল ধারণা না হয়।
(চ)
আদম আঃ এর হজ্ব করা নিয়ে ফাজাইলে আ'মল গ্রন্থে যে বিবরণ এসেছে, তা নির্ভরযোগ্য বিশুদ্ধ সনদ দ্বারা প্রমাণিত নয়।
(ছ)
নামায পরিত্যাগ করা কবিরা গোনাহ।আর আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের আকিদা বিশ্বাস হল, কবিরাহ গোনাহ করলে মানুষ ইসলাম থেকে খারিজ হবে না।যা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সেজন্যই এই নামায ত্যাগ সম্পর্কীয় হাদীসের ব্যখ্যা উলামায়ে কেরাম এভাবে করে থাকেন।