আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
345 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)

আসসালামু আলাইকুম। 

একজন বাবার আয় হারাম-হালাল মিশ্রিত। তথা একজন বাবা সরকারি চাকুরী করে কষ্টে অর্জিত পেনশন টাকায় সঞ্চয়পত্র কিনল আর আরও বিভিন্ন সুদি আর্নার বন্ডের মুনাফা(সুদল দিয়ে আয় করে যেটা সম্পূর্ণ হারাম; হালাল উপার্জনও রয়েছে। তার ছেলে বাবাকে বুঝাতে সাহস পায় না এবং অনেকবার এ নিয়ে বুঝিয়েও ফায়দা হয়নি। এমতঅবস্থায় সেই সাবালক ছেলেটির জন্য কি তার বাবার আয় জায়েয হবে?

https://www.ifatwa.info/398 -এই উত্তরের ভিত্তিতে হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সে ছেলেটি এখন পড়াশোনা করছে এবং উপার্জনক্ষম নয়। আর করলেও তার পড়ালেখার ক্ষতি হবে।

1 Answer

+1 vote
by (675,600 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


★শরীয়তের বিধান হলো পিতার উপার্জন যদি পুরাটাই হারাম হয়, তাহলে সন্তানের নিজের সামর্থ থাকলে পিতার হারাম উপার্জন ভোগ করা জায়েজ নয়।

আর যদি পিতার উপার্জন হালাল হারাম মিশ্রিত হয়,তাহলে হালাল বেশি থাকলে সেট ভক্ষন করা তার সন্তানদের জন্য জায়েজ।
আর যদি হারামই বেশি হয়,তাহলে তাহা ভক্ষন করা জায়েজ হবেনা।

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই ছেলেটির বাবার উপার্জনের অধিকাংশই যদি হালাল হয়,তাহলে সেই ছেলে তার বাবার উপার্জন থেকে খেতে পারবে।
আর যদি তার বাবার অধিকাংশই যদি হারাম হয়,তাহলে সেই ছেলে তার বাবার উপার্জন থেকে খেতে পারবেনা।
সে টিউশনি করে হোক বা অন্য কোনো ভাবে হোক,নিজের খরচ চালানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে হবে। 
এমতাবস্থায় বাবার উপার্জন থেকে খেয়ে থাকলে সেই পরিমান টাকা (পরবর্তীতে হলেও) ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিবদের মাঝে দান করে দিতে হবে।  

হাদীস শরীফে এসেছে   

عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

مسألة إذا كان الحرام أو الشبهة في يد أبويه فليمتنع عن مؤاكلتهما فإن كانا يسخطان فلا يوافقهما على الحرام المحض بل ينهاهما فلا طاعة لمخلوق في معصية الله تعالى فإن كان شبهة وكان امتناعه للورع فهذا قد عارضه أن الورع طلب رضاهما بل هو واجب فليتلطف في الامتناع فإن لم يقدر فليوافق وليقلل الأكل بأن يصغر اللقمة ويطيل المضغ ولا يتوسع فإن ذلك عدوان (احياء علوم الدين- 2/147)

যার সারমর্ম হলো যদি বাবার উপার্জন হারাম হয়,তাহলে সেখান থেকে খাবার গ্রহন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
তারা যদি জোড় করে, তাহলেও তাদের কথা অনুযায়ী খাওয়া যাবেনা। কম খেতে হবে,ছোট ছোট লোকমা বানিয়ে তাদের দেখানোর জন্য শুধু খাবে,,,
,
فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، كتاب الكراهية-5/342، رد المحتار-6/247)

যার সারমর্ম হলো যদি জানা যায় যে সেটার অধিকাংশই  হারাম,তাহলে সেটা গ্রহন করা যাবেনা।
আর যদি হালাল সম্পদ বেশি হয়,হারাম কম থাকে,তাহলে তা গ্রহন করা যাবে।

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
রাসুল সা ঃ
ইহুদি দের দাওয়াত গ্রহণ করেছেন যদি  ও তাদের সুদ এর  টাকা আছে।  এমন একটা হাদিস আছে।  
 
 এই হাদিস এর প্রেক্ষিতে অনেকে বলেন যেমন আমি আসসুন্নাহ ট্রাস্টে প্রশ্ন করেছিলাম। 
তাদের উত্তর এমন ছিল -  তার পর থেকে আমি হালাল ভেবে খেতে শুরু করি। 


 তবে অনেক আলেম বলেছেন, পিতার অবৈধ সম্পদ থেকে ছেলে খেতে পারে, ছেলের জন্য এই সম্পদ হালাল হিসেবে গণ্য হবে।

শায়খ উসায়মিন রহি. সুদের টাকার ক্ষেত্রে বলেন,

أما بالنسبة لأولاده فلا حرج عليهم أن يأكلوا منه في حياة أبيهم ويجيبوا دعوته؛ لأن النبي صلى الله عليه وسلم أجاب دعوة اليهود مع أنهم يأكلون الربا. وأما إذا ورثوه من بعده فهو لهم حلال؛ لأنهم ورثوه بطريقة شرعية، وإن كان هو حراماً عليه، لكن هم كسبوه بطريق شرعي بالإرث، وإن تبرعوا وتصدقوا به عن أبيهم فلعل الله سبحانه وتعالى أن يجعل هذه الصدقة تمحو ما قبلها من السيئات لقاء الباب المفتوح (181/ 19)

সন্তানদের কোন দোষ নেই যে, তারা তাদের পিতাজীবিত থাকা অবস্থায় তার এই অবৈধ সম্পদ থেকে খাবে এবং তার দাওয়াত গ্রহন করবে।কেননা নবী সা. ইহুদীদেরদাওয়াত গ্রহন করেছেন, তারা সুদ খাওয়া সত্বেও। আর যখন তারা তাদের পিতার থেকে এই অবৈধ সম্পদের ওয়ারিশ হবে, তখন তা তাদের জন্য হালাল হবে। কেননা তারা শরয়ীপন্থায় ওয়ারিশ হয়েছে। যদিও সেই সম্পদ তার পিতার জন্য হারাম। কিন্তু সন্তানেরা তা লাভ করেছে শরীয় পন্থায় ওয়রিশ হওয়া মাধ্যমে। যদি সন্তানেরা তাদের পিতার পক্ষ থেকে এই সম্পদ সাদকা করেদেয় তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা এই সাদকা দ্বারা পূর্বের পাপ মুছে দিবেন। লিকউল বাবিল মাফতুহ, ১৯/১৮১।

তবে প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের উচিত নিজে হালাল টাকা উপার্জন করে নিজের খরচ নির্বাহ করা। তবে আপনি যদি নিজে উপার্জন করে নিজের টাকায় নিজের খরচ নির্বাহ করেন তাহলে সেটা নিঃসন্দেহ উত্তম।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...