আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
308 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।

১. শুকরের গোস্ত খেলে, মদ পান করলে, যিনা করলে যে পরিমাণ গুনাহ হয়, বেপর্দায় চললে ঠিক সেই পরিমাণ গুনাহ হয়। এই কথাটা কি সঠিক?

২. কেউ নতুন পর্দা শুরু করেছে, স্বাভাবিকভাবে বাইরে যাওয়ার সময় বোরকা পরে। কিন্তু স্কুলের একটা ফ্রি মিক্সিং অনুষ্ঠানে শুধু ফুলহাতা থ্রিপিস আর মাথায় উড়না দিয়ে হিজাব বেঁধে আসছে। এতে কি তার পর্দা হবে? এই কাজের জন্য কি তার আগে বোরকা পরে করা পর্দার সাওয়াব নষ্ট হয়ে যাবে? যারা প্রায় সবসময় বাইরে বোরকা পরে চলাফেরা করে, কিন্তু অনুষ্ঠানাদিতে এভাবে আসে... শুধু হিজাব পরে, তাদের পর্দা কি কবুল হবে?

৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিসের তৈরি এই প্রশ্নটার উত্তর দু'পক্ষের আলেমদের কাছ থেকেই শুনলাম। যখন যেটা শুনি, সেটারই রেফারেন্স দেয়া হয় আর মনে হয় যেন এটাই ঠিক।
আমি নতুন দ্বীনে ফেরা কলেজপড়ুয়া একজন। এসব নিয়ে বিভ্রান্ত হতে চাই না। তাই আমি যদি মনে মনে এই ধারণা রাখি যে, "আল্লাহর হাবীবকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা যা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, সেটা একমাত্র তিনিই ভালো জানেন। আমাদের এটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কি প্রয়োজন। আমাদের তো কেবল রাসূলকে অনুসরণ করতে হবে।  আর সুন্নাহ মানার জন্য এই প্রশ্নের দরকার আছে কি? যদি এটা জানা এতই জরুরী হতো, তাহলে স্পষ্ট করে তা কুরআন বা হাদিসে বলা থাকতো যে, রাসূল এটা দিয়ে তৈরি। তিনি আল্লাহর প্রিয় হাবিব, আমাদের রাসূল এটাই শেষ কথা। কি দিয়ে তৈরি সেটা নিয়ে যেহেতু স্পষ্ট বলা নাই এবং বিতর্কিত...তাই সেটা নিয়ে ভাববারও প্রয়োজন নাই।"

এমন চিন্তাধারা নিয়ে থাকলে কি আমার কোনোপ্রকার গুনাহ হবে? কিংবা কোনো সমস্যা হবে?

 মুফতী ইমদাদুল হক শায়েখের কাছ থেকে জবাব আশা করছি ইন শা আল্লাহ।    
জাযাকুমুল্লাহ খইর।

1 Answer

0 votes
by (63,200 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব ,

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا، قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ، وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلَاتٌ مَائِلَاتٌ، رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ، لَا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ، وَلَا يَجِدْنَ رِيحَهَا، وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا»

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নামবাসী দু' প্রকার মানুষ, আমি যাদের (এ পর্যন্ত) দেখিনি। একদল মানুষ, যাদের সঙ্গে গরুর লেজের মতো চাবুক থাকবে, তা দ্বারা তারা লোকজনকে মারবে এবং এক দল স্ত্রী লোক, যারা কাপড় পরিহিত উলঙ্গ, যারা অন্যদের আকর্ষণকারিণী ও আকৃষ্টা, তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কুঁজের মতো। ওরা জান্নাতে যেতে পারবে না, এমনকি তার সুগন্ধিও পাবে না অথচ এত এত দূর হতে তার সুঘ্ৰাণ পাওয়া যায়। (সহীহ মুসলিম-২১২৮)

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন:

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ [٢:٢٢٢

 

নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। [বাকারা-২২২]

অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন:

إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

হযরত আয়শা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ:

إن العبد إذا اعترف ثم تاب تاب الله عليه

বান্দা নিজ কৃত গুনাহের কথা স্বীকার করে যদি তওবা করে তাহলে আল্লাহও তার তওবা কবুল করেন।  (বুখারী ও মুসলিম)

তাওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-

(বান্দার হক থাকলে আগে সেটি আদায় করে আসতে হবে,বা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে আসতে হবে।)

এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।

দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।

তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১.কোন গুনাহকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই । শুকুরের গোস্ত খাওয়া, মদ পান করা, যেনা করা যেমন কবীরা গুনাহ , বেপর্দায় চলা ফেরা করাও তেমন কবীরা গুনাহ। আর কবীরা গুনাহ খারেস দিলে তওবা করা ছাড়া মাফ হয় না।

২.যতক্ষণ সময় কেউ বেপর্দায় চলাফেরা করবে ততক্ষণ সে গুনাহগার হবে। প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে পূর্বের পর্দা করার ফজিলত সে পাবে কিন্তু বর্তমানে বেপর্দায় চলার কারণে তার আমল নামায় গুনাহ লেখা হবে। বিধায় উক্ত বেপর্দার অবস্থা থেকে তওবা করে ফিরে আসা আবশ্যক। কারণ,একটি কবীরা গুনাহ জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। ফ্রি মিক্সিং এমন অনুষ্ঠান যেখানে পরিপূর্ণ পর্দা করা যায় সেখানে যাওয়া জায়েয নেই। সাধারণত শুধু থ্রিপিস ও মাথায় উড়না পরার দ্বারা পরিপূর্ণ পর্দা আদায় হয় না । বিধায় এমন পরিবেশ এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।

৩.জ্বী এমন চিন্তাভাবনা রাখলে কোন গুনাহ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম।

শায়েখ, দয়া করে প্রশ্ন তিনটির জবাব দিয়েন।  এগুলো জানা খুব প্রয়োজন।  

জাযাকুমুল্লাহ 
by
আসসালামু আলাইকুম। 
শায়েখ, অনুগ্রহ করে প্রশ্ন তিনটির জবাব দিয়েন।     
 জানা খুব প্রয়োজন।  
by (63,200 points)
জ্বী আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে।

by
জাযাকিল্লাহু খইরন ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরাহ শায়েখ    

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...