আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
195 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (50 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম

১. সুফিদের কাওয়ালি (সুফিদের ট্র্যাডিশনাল গান) শোনার শরঈ বিধান কি? এসব কাওয়ালিতে কোন কোনটায় বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়।

২. হানাফি ফিক্বহ অনুসারে দফ কি বৈধ? বিশেষ করে বিয়ের সময় বাজানো যাবে?

৩. দুই হাত দিয়ে মুসাহাফা করা কি বিদআহ?

৪. পাকিস্তানের কাওয়ালি গায়ক নুসরাত ফাতেহ আলী খান সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানতে চাই।

৫. মিউজিক বা অশ্লীল কিছু না থাকলে রোমান্টিক গান শোনা যাবে?

৬. এটা শোনা যাবে?

1 Answer

0 votes
by (680,680 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
সা‘ঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহ.) হতে বর্ণিত।

عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، قَالَ: مَرَّ عُمَرُ فِي المَسْجِدِ وَحَسَّانُ يُنْشِدُ فَقَالَ: كُنْتُ أُنْشِدُ فِيهِ، وَفِيهِ مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنْكَ، ثُمَّ التَفَتَ إِلَى أَبِي هُرَيْرَةَ، فَقَالَ: أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ، أَسَمِعْتَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «أَجِبْ عَنِّي، اللَّهُمَّ أَيِّدْهُ بِرُوحِ القُدُسِ؟» قَالَ: نَعَمْ

তিনি বলেন, একদা ‘উমার (রাঃ) মসজিদে নববীতে আগমন করেন, তখন হাস্সান ইবনু সাবিত (রাঃ) কবিতা আবৃত্তি করছিলেন। তখন তিনি বললেন, এখানে আপনার চেয়ে উত্তম ব্যক্তির উপস্থিতিতেও আমি কবিতা আবৃত্তি করতাম। অতঃপর তিনি আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর দিকে তাকালেন এবং বললেন, আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি; আপনি কি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, ‘‘তুমি আমার পক্ষ হতে জবাব দাও। হে আল্লাহ! আপনি তাকে রুহুল কুদুস [জিব্রাঈল (আঃ)] দ্বারা সাহায্য করুন।’’ তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ।(সহীহ বোখারী-৩২১২, সহীহ মুসলিম-২৪৮৫,আবু-দাউদ-৫০১৩)

যখন রাসূলুল্লাহ সাঃ সাহাবায়ে কেরামদের ক্ষিদামন্দা দেখলেন,এবং ক্লান্তিকে অনুভব করলেন,তখন তিনি নিম্নোক্ত শে'র আবৃত্তি করলেন,

" اللهم لا عيش إلا عيش الآخرة * فاغفر للأنصار والمهاجرة "

অর্থ-হে অাল্লাহ! আখেরাতের জীবন ব্যতীত অন্য সকল জীবন তুচ্ছ। সুতরাং আনসার এবং মুহাজিরদের তুমি ক্ষমা করে দাও।

সাহাবায়ে কেরাম জবাবে বললেন,

نحن الذين بايعوا محمدا  *  على الجهاد ما بقينا أبدا

আমরা তারাই, যারা মুহাম্মদ সাঃ এর হাতে আমৃত্যু জীহাদের জন্য বায়আত গ্রহণে করেছি।
(সহীহ বোখারী-৩/১০৪৩)

সুতরাং নাশিদ গাওয়া,শোনা জায়েজ।
তবে কয়েকটি মূলনীতিকে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।

মূলনীতি গুলো বিস্তারিত জানুনঃ  

★শরীয়তের বিধান হলো মিউজিক,বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার  হারাম।
মিউজিক চায় কোনো যন্ত্রের মাধ্যমে হোক বা মুখের মাধ্যমে হোক বা অন্য কোনো মাধ্যমে হোক সর্বাবস্থায়ই হারাম।মিউজিক সম্ভলিত নাশিদ,গজল,সবকিছুই হারাম বলে প্রমাণিত হবে।
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু সেসব  কাওয়ালিতে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার  হয়,তাহলে সেগুলো শোনা জায়েজ নেই।
,    
আরো জানুনঃ 

(০২)
বর্তমানে অধিকাংশ উলামায়ে কেরামদের মতে দফ বাজানো কোনোক্রমেই  জায়েজ নেই।

নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা দফ নিষিদ্ধ হওয়া পরিস্কার প্রমাণিত হয়!

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ: «الدُّفُّ حَرَامٌ، وَالْكُوبَةُ حَرَامٌ، وَالْمِزْمَارُ حَرَامٌ

হযরত আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দফ হারাম। বাদ্যযন্ত্র হারাম। মদের পেয়ালা হারাম। বাঁশী হারাম। [সুনানে সুগরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৩৩৫৯, সুনানে কুরবা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২১০০০] 

حَدَّثَنَا أَبُو مُحَمَّدِ بْنُ حَيَّانَ قَالَ: ثنا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ قَالَ: ثنا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعِيدٍ الْجَوْهَرِيُّ قَالَ: ثنا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ سَالِمٍ، عَنْ حَسَّانَ بْنِ أَبِي سِنَانٍ قَالَ: قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُمْسَخُ قَوْمٌ مِنْ أُمَّتِي فِي آخِرِ الزَّمَانِ قِرَدَةً وَخَنَازِيرَ»، قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ، وَيَشْهَدُونَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَأَنَّكَ رَسُولُ اللهِ، وَيَصُومُونَ؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قِيلَ: فَمَا بَالُهُمْ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: «يَتَّخِذُونَ الْمَعَازِفَ وَالْقَيْنَاتِ وَالدُّفُوفَ، وَيَشْرَبُونَ الْأَشْرِبَةَ، فَبَاتُوا عَلَى شُرْبِهِمْ وَلَهْوِهِمْ، فَأَصْبَحُوا قَدْ مُسِخُوا قِرَدَةً وَخَنَازِيرَ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শেষ জমানায় আমার উম্মত বানর ও শুকরে রূপান্তরিত হবে। জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! তারা সাক্ষি দিবে যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোন মাবুদ নাই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল এবং রোযা রাখার পরও?
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন, হ্যাঁ।
বলা হল, তাদের অপরাধ কি?
বললেন, তারা বাদ্য, গায়িকা এবং দফের বাজনা গ্রহণ করবে। মদ খাবে, রাতে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে ঘুমাবে। আর সকালে দেখবে তারা বানর ও শুকরে পরিণত হয়ে গেছে। [হিলয়াতুল আওলিয়া-৩/১১৯] 
,
তবে কিছু উলামায়ে কেরামগন বিবাহের ক্ষেত্রে  শর্তসাপেক্ষে দফ বাজানো জায়েজ বলেছেন।  
,
বিস্তারিত জানুনঃ

(০৩)
দুই হাত দিয়ে মুসাহাফা করা বিদ'আত নয়।
বরং এটিই মুসাফাহার আদব।
তবে প্রয়োজনে এক হাতেও করা যাবে।
,
বিস্তারিত জানুনঃ

(০৪)
তার কাওয়ালিতে বাদ্য-বাজনার ব্যবহার রয়েছে।

(০৫)
শোনা জায়েজ নেই। 

(০৬)
বাদ্য-বাজনার ব্যবহার না থাকায় আকীদা বিশুদ্ধ রেখে  এই গজল শোনা জায়েজ আছে।

আলী রাঃ কে নিয়ে যারা বারাবাড়ি করে,তাদের এটি গজল।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 130 views
...