হাদীস সমূহে যে সমস্ত যিকির পেয়েছিঃ
أَفْضَلُ الذِّكْرِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
সর্বোত্তম যিকির হলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ৩৩৮৩
অন্য হাদীসে এসেছে,
مَا قَالَ عَبْدٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ قَطُّ مُخْلِصًا، إِلاَّ فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ، حَتَّى تُفْضِيَ إِلَى العَرْشِ، مَا اجْتَنَبَ الكَبَائِرَ.
যখন কোনো বান্দা পূর্ণ এখলাসের সাথে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে, তখন আসমানের সবগুলি দরজা খুলে যায় এবং এই কালিমা সরাসরি আল্লাহ পাকের আরশে পৌঁছে যায়, যদি সে বান্দা কবিরা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে। সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ৩৫৯০
একটি হাদীসে এসেছে, হযরত মুসা আলইহিস সালাম আল্লাহ পাকের নিকট আরজ করলেন,
يَا رَبِّ عَلِّمْنِي شَيْئًا أَذْكُرُكَ بِهِ وَأَدْعُوكَ بِهِ، قَالَ: يَا مُوسَى: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، قَالَ مُوسَى: يَا رَبِّ: كُلُّ عِبَادِكَ يَقُولُ هَذَا، قَالَ: قُلْ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، إِنَّمَا أُرِيدُ شَيْئًا تَخُصَّنِي بِهِ، قَالَ: يَا مُوسَى، لَوْ أَنَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعَ وَعَامِرَهُنَّ غَيْرِي، وَالْأَرَضِينَ السَّبْعَ فِي كَفَّةٍ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فِي كَفَّةٍ مَالَتْ بِهِنَّ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ. صححه الحافظ ابن حجر في الفتح
হে আল্লাহ! আমাকে এমন কোনো কালিমা বাতলে দিন, যার দ্বারা আমি আপনার যিকির করতে পারি। উত্তর এলো, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ দ্বারা আমার যিকির করো। হযরত মুসা বললেন, এই কালিমা দ্বারা তো সবাই যিকির করে! আমি এটা ছাড়া বিশেষ কোনো কালিমা জানতে চাই। ইরশাদ হলো, হে মুসা! যদি সপ্তাকাশ ও তথাকার সমুদয় সৃষ্টি এবং সাত তবক জামিন এক পাল্লায় রাখা হয়, আর অন্য পাল্লায় এই কালিমা রাখা হয়, তবে এই কালিমার পাল্লাই অধিক ভারী হয়ে যাবে। সুনানে কুবরা নাসাঈ, হাদীস নং ১০৬০২
এক হাদীসে নবীজী বলেন,
أَفْضَلُ الكَلاَمِ أَرْبَعٌ: سُبْحَانَ اللَّهِ، وَالحَمْدُ لِلَّهِ، وَلاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ
সকল কথার সেরা কথা এবং সকল কালিমার শ্রেষ্ঠ কালিমা হলো চারটি: ‘সুবহানাল্লাহ্’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ‘আল্লাহু আকবার’। সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ৮৩৯
অন্য হাদীসে এসেছে,
لأَنْ أَقُولَ سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ.
যতদূর পৃথিবীর উপর সূর্য উদিত হয়, ততদূূর পৃথিবীর চেয়েও আমার কাছে ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘ওয়ালহামদুল্লিাহ্’ ‘ওয়াল্লাহু আকবার’ বলা অধিক প্রিয়। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৯৫
একটি প্রসিদ্ধ হাদীসে এসেছে, নবী-কন্যা হযরত ফাতেমা রাজিয়াল্লাহু আনহা নিজ হাতে ঘরের কাজ করতেন। নিজেই পানি আনতেন, চাক্কি ঘুরিয়ে আটা পিষতেন। একবার তিনি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরজ করলেন, এই কাজগুলো করতে আমার জন্য একটি চাকরানীর ব্যবস্থা করে দিন। তখন নবীজী কন্যা ফাতেমা ও জামাতা আলীকে বললেন,
إِذَا أَوَيْتُمَا إِلَى فِرَاشِكُمَا، أَوْ أَخَذْتُمَا مَضَاجِعَكُمَا، فَكَبِّرَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَسَبِّحَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَاحْمَدَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، فَهَذَا خَيْرٌ لَكُمَا مِنْ خَادِمٍ
আমি তোমাদেরকে এর চেয়েও উত্তম জিনিস শিখিয়ে দিচ্ছি, তোমরা শোয়ার সময় তেত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’ তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ্’, এবং তেত্রিশবার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ এবং পড়বে। এটা চাকর-বাকরেরচেও অনেক উত্তম। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩১৮
একে ‘তাসবীহে ফাতেমী’ বলা হয়।
অন্য হাদীসে এই তাসবিহগুলির ফজীলত সম্পর্কে এসেছে,
مَنْ سَبَّحَ اللهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَحَمِدَ اللهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، وَكَبَّرَ اللهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ، فَتْلِكَ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ، وَقَالَ: تَمَامَ الْمِائَةِ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ غُفِرَتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ
যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ্’, এবং তেত্রিশবার ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ এবং চৌত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’ পড়বে এবং শেষে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আলা কুল্লি শাই ইন কদীর’ পড়বে, আল্লাহ পাক তার সমস্ত (ছগীরা) গোনাহ্ মাফ করে দিবেন, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয় না কেন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৯৭
একটি হাদীসে এসেছে,
مَنْ قَالَ: حِينَ يُصْبِحُ وَحِينَ يُمْسِي: سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ، مِائَةَ مَرَّةٍ، لَمْ يَأْتِ أَحَدٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، بِأَفْضَلَ مِمَّا جَاءَ بِهِ
যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা একশবার করে ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী’ পড়বে, কেয়ামতের দিন তার চে’ অধিক সওয়াব নিয়ে কেউ উঠতে পারবে না। হ্যাঁ, যে এর সাথে অন্য আমলও করে তার কথা ভিন্ন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬৯২
অন্য একটি হাদীসে এসেছে,
كَلِمَتَانِ خَفِيفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ، ثَقِيلَتَانِ فِي المِيزَانِ، حَبِيبَتَانِ إِلَى الرَّحْمَنِ، سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ العَظِيمِ
দুটি কালিমা উচ্চারণে সহজ, কিন্তু মিযানের পাল্লায় অনেক ভারী এবং দয়াল আল্লাহ নিকট খুবই প্রিয়। ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহী সুবহানাল্লাহিল আযীম। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৬৮২