আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
116 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (64 points)
১.মেয়েদের পর্দায় চোখ ঢাকা কি বাধ্যতামূলক?

  ২.এদেশের মানুষেরা মেয়েদের নাক ফোড়ানোকে সুন্নত বলে।এটা সুন্নত কিভাবে হয়,একজন সতীন আর একজন সতীনের সাথে হিংসাবশত নাক কান ফুটা করে দেয়  এটাকে তারা সুন্নত হিসেবে মনে করে।আর উম্মুল মু'মিনীন (রা.) রা কি নাক কান ফুড়িয়েছিলেন।হাদিসের আলোকে নাক কান ফুড়ানো জায়েজ আছে কি?
গ্রামাঞ্চলের মহিলারা বিয়ের সময় নাক ফোড়ানোকে ফরজ মনে করে তারা এটাকে স্বামীর চিহ্ন মনে করে।ইসলামী শরীয়াহ মতে স্ত্রী তার স্বামীর কোনো চিহ্ন শরীরে বহন করতে পারবে কি?

৩.মেয়েদের কবর যিয়ারত জায়েজ নেই। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে রাস্তার পাশে কবরগুলো বাধানো থাকে আর মেয়েরা সবসময় তার পাশ দিয়েই যাতায়াত করে থাকে।এটার সমাধান কি।কোনো মেয়ে যদি রাস্তার পাশের কবর গুলোর সামনে দাড়িয়ে মৃত্যুর কথা চিন্তা করে তবে গুনাহ হবে কি?

1 Answer

0 votes
by (60,210 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

১.মেয়েদের পর্দায় চোখ ঢাকা বাধ্যতামূলক নয়।

 

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

يا ايها النبى قل لازواجك وبناتك ونساء المؤمنين ...

  হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মুমিনদের নারীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আহযাব : ৫৯)

 

আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, আল্লাহ তাআলা মুমিন নারীদেরকে আদেশ করেছেন যখন তারা কোনো প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে তখন যেন মাথার উপর থেকে ওড়না/চাদর টেনে স্বীয় মুখমন্ডল আবৃত করে। আর (চলাফেরার সুবিধার্থে) শুধু এক চোখ খোলা রাখে।-ফাতহুল বারী ৮/৫৪, ৭৬, ১১৪

 

ইবনে সীরিন বলেন, আমি (বিখ্যাত তাবেয়ী) আবীদা (সালমানী রাহ.)কে উক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, কাপড় দ্বারা মাথা ও চেহারা আবৃত করবে এবং এক চোখ খোলা রাখবে।

 

২. মহিলাদের জন্য অলংকার পরিধান করার জন্য নাক কান ছিদ্র করা জায়েজ আছে। কোন সমস্যা নেই। তবে নাক কান ছিদ্র সুন্নাত, ওয়াজিব কিছু নয়।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَابِسٍ، سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، سَأَلَهُ رَجُلٌ: شَهِدْتَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ العِيدَ، أَضْحًى أَوْ فِطْرًا؟ قَالَ: نَعَمْ، وَلَوْلاَ مَكَانِي مِنْهُ مَا شَهِدْتُهُ – يَعْنِي مِنْ صِغَرِهِ – قَالَ: «خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَلَّى ثُمَّ خَطَبَ، وَلَمْ يَذْكُرْ أَذَانًا وَلاَ إِقَامَةً، ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ فَوَعَظَهُنَّ وَذَكَّرَهُنَّ وَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ، فَرَأَيْتُهُنَّ يَهْوِينَ إِلَى آذَانِهِنَّ وَحُلُوقِهِنَّ، يَدْفَعْنَ إِلَى بِلاَلٍ، ثُمَّ ارْتَفَعَ هُوَ وَبِلاَلٌ إِلَى بَيْتِهِ

হযরত আব্দুর রহমান বিন ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। আমি এক ব্যক্তিকে ইবনে আব্বাস রাঃ এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনেছি যে, আপনি আযহা বা ফিতরের কোন ঈদে রাসূল সাঃ সাথে উপস্থিত ছিলেন? তিনি উত্তরে বললেন, “হ্যাঁ”। অবশ্য তাঁর সাথে আমার এত ঘনিষ্ঠতা না থাকলে স্বল্প বয়সের কারণে আমি তার সাথে উপস্থিত হতে পারতাম না। তিনি আরো বলেন, রাসূল সাঃ বের হলেন। তারপর নামায আদায় করলেন, এরপর খুতবা দিলেন। ইবনে আব্বাস রাঃ আজান ও ইকামতের কথা উল্লেখ করেননি। এরপর তিনি মহিলাদের কাছে এলেন এবং তাদেরকে ওয়াজ ও নসীহত করলেন। তাদেরকে দান সদকাহ করার আদেশ দিলেন। আমি দেখলাম, তারা তাদের কর্ণ ও কণ্ঠের দিকে হাত প্রসারিত করে [কান ও গলায় পরিহিত গয়নাগুলো] বিলাল রাঃ এর অর্পন করছে। এরপর রাসূল সাঃ বিলাল রাঃ এর গৃহে গমণ করলেন। {বুখারী, হাদীস নং-৫২৪৯, ৪৯৫১, ইফাবা-৪৮৬৯}

অন্য এক হাদীসে এসেছে-

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى يَوْمَ الفِطْرِ رَكْعَتَيْنِ لَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلاَ بَعْدَهَا، ثُمَّ أَتَى النِّسَاءَ وَمَعَهُ بِلاَلٌ، فَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ، فَجَعَلْنَ يُلْقِينَ تُلْقِي المَرْأَةُ خُرْصَهَا وَسِخَابَهَا

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ঈদুল ফিতরে দুই রাকাত নামায আদাল করেন। এর পূর্বে ও পরে কোন নামায আদায় করেননি। তারপর তিনি মহিলাদের কাছে আসলেন। সাথে ছিল বেলাল রাঃ। তারপর তিনি মহিলাদের দান করতে আদেশ দিলেন। তখন মহিলারা তাদের কানের দুল ও গলার হার দান করতে লাগল। {বুখারী, হাদীস নং-৯৬৪, ৯২১}

এই হাদীস প্রমাণ করে রাসূল সাঃ এর যুগেই নারীরা কানে নাকে অলংকার পরিধান করতো। আর কানে নাকে অলংকার পরিধান করতে হলে কান নাক ছিদ্র করা জরুরী। যার কোন নিষেধাজ্ঞা রাসূল সাঃ থেকে বর্ণিত হয়নি। সুতরাং অলংকার পরিধান করার জন্য নারীদের নাক কান ছিদ্র করা নিঃসন্দেহে জায়েজ।

 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছে-

ولا بأس بثقب أذن البنت

(الفتاوى الشامية-9/602

মেয়েদের জন্য কান ছিদ্র করাতে কোনো সমস্যা নেই ।  

 


৩. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। এতে কোনো গুনাহ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...