ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
যেহেতু জায়গা আপনার মায়ের নামে , তাই এ জায়গা থেকে যা ইনকাম হবে, তার সবটুকুর মালিক আপনার মা। আপনার মা কুরবানিতে শরীক হয়েছেন দুই নাম নিয়ে। এখন আপনার বোন উক্ত কুরবানিতে এক হাজার টাকা দিতে চাচ্ছেন, যদি আপনার বোন আপনার মাকে ঐ এক হাজার টাকা হাদিয়া দিতে চান, তাহলে আপনার মা সেই টাকা কে গ্রহণ করতে পারবেন। যদি আপনার মা উক্ত এক হাজার টাকা কে গ্রহণ করে কুরবানিতে লাগাতে চান, তাহলে এটাও জায়েয হবে। তবে আপনার বোন সরাসরি কুরবানিতে শরীক হওয়ার নিয়তে এক হাজার দিতে পারবেন না। কেননা এক কুরবানিতে সাত অংশ তথা জনের বেশী শরীক হওয়া যায় না।
(২)
মোল্লা আলী কারী রাহ আরো লিখেন,
وَعِنْدَنَا: يَرْفَعُهَا عِنْدَ لَا إِلَهَ، وَيَضَعُهَا عِنْدَ إِلَّا اللَّهُ لِمُنَاسَبَةِ الرَّفْعِ لِلنَّفْيِ، " وَمُلَاءَمَةِ " الْوَضْعِ لِلْإِثْبَاتِ، وَمُطَابَقَةً بَيْنَ الْقَوْلِ وَالْفِعْلِ حَقِيقَةً
হানাফি মাযহাব মতে তাশাহুদের মধ্যে 'আশহাদু আন-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর সময়ে শাহাদত অঙ্গুলি উত্তোলন করা হবে(এবং এটা সুন্নত)।এবং ইল্লাল্লাহ বলার পর অঙ্গুলিকে আস্তে আস্তে আস্তে নামিয়ে ফেলা হবে।যাতেকরে 'না'এর সময় 'হ্যা' হয়।অর্থাৎ যখন লা-ইলাহা (কোনো মা'বুদ নাই)বলা হবে,তখন শাহাদত অঙ্গুলি উত্তোলন করে বুঝানো হবে যে,অবশ্যই একজন আল্লাহ রয়েছে।এবং যখন ইল্লাহ তে আসা হবে,তখন আর উত্তোলনের প্রয়োজন নেই বিধায় অঙ্গুলিকে নামিয়ে ফেলা হবে।
অতঃপর অঙ্গুলি সমূহের এই হালকাকে নামাযের শেষ পর্যন্ত রাখা হবে।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৫/৬৩৫)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সহজ ভাষায় শাহাদত অঙ্গুলি উত্তোলনের পদ্ধতি হল- সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গুলি এবং তার পাশের অঙ্গুলি কে হাতের তালুর সাথে মিলিয়ে রাখা হবে।এবং মধ্যম অঙ্গুলি ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা গোল করে হালকা বানাবে।অতপর 'আশহাদু আন-লা-ইলাহা' পড়ার সময়ে অঙ্গুলিকে উত্তোলন করবে।(কেননা আশহাদু আন-লা-ইলাহা এর অর্থ হলো,কোনো মা'বুদ নাই।তাই অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করে বুঝাবে আমার আক্বিদা বিশ্বাসে শুধুমাত্র একজন মা'বুদ রয়েছেন,এবং তিনি হলেন,আমার আল্লাহ) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/1262
ুসুতরাং
আংগুল উঠানোর সময় আংগুলের দিকে তাকিয়ে থাকানো জরুরী নয়, তবে যেহেুত বৈঠকে দৃষ্টিকে কুলের দিকে রাখা মুস্তাহাব। তাই এমনিতেই আঙ্গুলের দিকে দৃষ্টি নিপতিত থাকবে। আর আংগুল নামানোর সময় "ইল্লালাহ" বলতে হবে।
(৩)
নামাযের কেরাতে যদি তাজবীদে ভূল হয়,যাকে লাহলে খাফী বলা হয়,তাহলে উক্ত নামাযকে দোহড়ানের প্রয়োজন নেই।তাজবীদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/1126তবে যদি নামাযে এমন কোনো ভূল হয়,যার কারণে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়,(এক্ষেত্রে তাজবীদ বিভাগের লাহনে জালী গ্রহণযোগ্য নয়,কেননা তাজবীদের পরিভাষায় এক হরফের স্থলে অন্য হরফ পড়ে নিলেই লাহনে জলী হয়ে যায়,চায় নিকটবর্তী মাখরাজ হোক বা দূরবর্তী মাখরাজ হোক,চায় অর্থ সঠিক থাকুক বা নাই থাকুক)কিন্তু ফুকাহায়ে কেরাম দূরবর্তী মাখরাজের উচ্ছারণের সময়ে এবং অর্থ বিগড়ে যাওয়ার সময়ে নামাযকে ফাসিদ হওয়ার ফাতাওয়া দিয়ে থাকেন।
সুতরাং নামাযে কোনো হরফ উচ্ছারণের সময়ে,সেই হরফের স্থলে তার দূরবর্তী মাখরাজের কোনো হরফ উচ্ছারিত হয়ে গেলে,এবং অর্থ বিগড়ে গেলে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি দেখেন যে, সোয়াদের জায়গায় সীন হয়ে গেছে, এবং আপনি পড়তে চাইলে পড়তে পারবেন, যদি এক্ষেত্রে আয়াতকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়তে হয়, তাহলে প্রয়োজনে ভেঙ্গেও পড়বেন। এতে কোনো সমস্য হবে না। আপনার নামাযও ফাসিদ হবে না।
(৪)
সূরা ফাতেহার আয়াতের শেষাংশে মদ্দে আরযী রয়েছে। মদ্দে আর হল, অতিরিক্ত মদ। যা মুস্তাহাব। সুতরাং যদি কেউ মদ্দে আরযি না করে, তাহলে তার নামাযে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। নামায হয়ে যাবে। হ্যা, মদ্দে আরযি আদায় পূর্বক তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব।