ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হযরত উবাই ইবনে কা'ব রাযি, থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﺃُﺑَﻲِّ ﺑْﻦِ ﻛَﻌْﺐٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺫَﻫَﺐَ ﺛُﻠُﺜَﺎ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻗَﺎﻡَ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ( ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺍﺫْﻛُﺮُﻭﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺍﺫْﻛُﺮُﻭﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺟَﺎﺀَﺕْ ﺍﻟﺮَّﺍﺟِﻔَﺔُ ﺗَﺘْﺒَﻌُﻬَﺎ ﺍﻟﺮَّﺍﺩِﻓَﺔُ ﺟَﺎﺀَ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕُ ﺑِﻤَﺎ ﻓِﻴﻪِ ﺟَﺎﺀَ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕُ ﺑِﻤَﺎ ﻓِﻴﻪِ ) ﻗَﺎﻝَ ﺃُﺑَﻲٌّ : ﻗُﻠْﺖُ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﺃُﻛْﺜِﺮُ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ، ﻓَﻜَﻢْ ﺃَﺟْﻌَﻞُ ﻟَﻚَ ﻣِﻦْ ﺻَﻠَﺎﺗِﻲ ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ !!ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻠْﺖُ : ﺍﻟﺮُّﺑُﻊَ ؟ ! ﻗَﺎﻝَ ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ، ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ !!ﻗُﻠْﺖُ : ﺍﻟﻨِّﺼْﻒَ ؟ ! ﻗَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ، ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ !!ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻠْﺖُ ﻓَﺎﻟﺜُّﻠُﺜَﻴْﻦِ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺖَ ، ﻓَﺈِﻥْ ﺯِﺩْﺕَ ﻓَﻬُﻮَ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ !!ﻗُﻠْﺖُ : ﺃَﺟْﻌَﻞُ ﻟَﻚَ ﺻَﻠَﺎﺗِﻲ ﻛُﻠَّﻬَﺎ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﺫًﺍ ﺗُﻜْﻔَﻰ ﻫَﻤَّﻚَ ، ﻭَﻳُﻐْﻔَﺮُ ﻟَﻚَ ﺫَﻧْﺒُﻚَ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ( 2457 ) ﻭﺣﺴﻨﻪ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ .
রাত্রির শেষভাগে রাসূলুল্লাহ সাঃ ঘুম থেকে উঠে লোকদের উদ্দেশ্য করে বলতে,হে লোকসকল!আল্লাহকে স্বরণ করো!অাল্লাহকে স্বরণ করো!কিয়ামত(মিক্বাঈল আঃ কর্তৃক প্রথম ফু) স্বন্নিকটে, কিয়ামত(দ্বিতীয় ফু) স্বন্নিকটে। মৃত্যু তার সঙ্গ-সাথী নিয়ে উপস্থিত।মৃত্যু তার সঙ্গ-সাথী নিয়ে উপস্থিত। উবাই ইবনে কা'ব রাযি বলেন,হে রাসূলুল্লাহ সাঃ! আমি আপনার উপর বেশী করে দুরুদ পড়তে চাই! আমি আমার দু'আয় কতটুকু আপনার উপর দুরুদ কে স্থান দেবো?(অর্থাৎ অন্যান্য দু'আর তুলনায় আপনার উপর কতটুকু বেশী দুরুদ পেশ করব?)তখন রাসূলুল্লাহ বললেন, তুমি যা চাও। আমি বললাম,এক চতুর্থাংশ? তিনি উত্তরে বললেন,তুমি যা চাও।তুমি যত বেশী পড়বে সেটা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে।আমি আবার বললাম যে, তাহলে অর্ধেক?তিনি উত্তরে বললেন,তুমি যা চাও।তুমি যত বেশী পড়বে সেটা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে।তিনি বলেন,অতঃপর আমি বললাম,দুই তৃতীয়াংশ? তিনি উত্তরে বললেন,তুমি যা চাও।তুমি যত বেশী পড়বে সেটা তোমার জন্য কল্যাণকর হবে।শেষপর্যন্ত আমি বললাম,আমার দু'আর সমস্ত অংশজুড়ে আপনার দুরুদ-কে স্থান দেবো?তিনি উত্তরে বললেন,তাহলে তো তোমার উদ্দেশ্য(দুনিয়া ও আখেরাতে) পূর্ণ হবে এবং তোমার গোনাহ সমূহকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। (সুনানে তিরমিযি-২৪৫৭,মিশকাতুল মাসাবিহ-৯২৯)
জ্বী, সম্মাণিত উস্তাদ যা বলেছেন, তা অত্যান্ত সুন্দর ব্যখ্যা।( আল্লাহ উনার হায়াতকে দরাজ করুক)
i) যেহেতু আল্লাহ তা’আলার নবীর উপর দুরুদ এবং ইস্তেগফার এবং নিজ প্রয়োজনকে আল্লাহর সামনে উপস্থাপন করা সব গুলারই নির্দেশ দিয়েছেন। তাই সবগুলাই উম্মত করে থাকে। কেউ যদি নিজ প্রয়োজন বা ইস্তগফারকে মনের মধ্যে রেখে শুধুমাত্র দুরুদ পড়ে, তাহলে তার সবকিছুই পূর্ণ হবে।
ii) আপনি পড়েন না কেন?পড়ুন বা পড়ার চেষ্টা করুন। আর হুজুররা পড়েন না , এমনটা বলা যাবে না। বরং হুজুররা দুআর প্রথমে ও পরে এবং ওয়াজ নসিহতের প্রথমের ও পরে আরবীতে নবীর উপর দুরুদ পড়ে থাকেন। ওয়াজের পূর্বে যে খতবাহ দেয়া হয়, সেখানে আল্লাহর প্রশংসা এবং নবীর উপর দুরুদ থাকে।
(খ) সাহাবারা তীরের আঘাতকে সহ্য করে কোনো প্রকার নড়াচড়া না করে নামায আদায় করেছেন। সুতরাং ঐ দিকে আমাদেরকে বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। নামাযে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় অযথা কেটে গেলে নামায ফাসিদ হয়ে যায়। হ্যা, যদি মশার উপদ্রব বেশী থাকে, এবং মশা কামড় দেয়, তাহলে প্রত্যেক রুকনে রুকুনে সর্বোচ্ছ দুই বার করে চুলাকানো যাবে। তিনবার করলে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।
(গ) ইমামের সাথে নামাযে মুক্তাদি ঘুমিয়ে গেলে উক্ত ঘুমকে সুন্নতি ত্বরিকার ঘুম আখ্যায়িত করা হয়, এবং বলা হয় যে, উক্ত ঘুম নামাযকে ফাসিদ করবে না। সুতরাং তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় পর্যন্ত নামাযে কেউ ঘুমিয়ে গেলে তার নামায ফাসিদ হবে না। এবং তার অজুও ভঙ্গ হবে না।
(ঘ) যেহেতু মানুষ সম্মানি তাই মানুষের জন্য তার প্রত্যেকটা অঙ্গকে সম্মান করতে হবে। যথা সম্ভব সম্মান করার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।
i) বাথরুমে বা বেসিনে দাড়ি চুল পড়ে গেলে যথাসম্ভব তা তুলে নিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করতে হবে। কয়েকদিনের এক সাথে একত্রিত করে দাফন করলে ঝামেলা কিছুটা কম হবে। আর যদি চেষ্টা সত্তেও চুলকে আটকানো সম্ভব না হয়, তাহলে এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।
ii) নাপাক পানিতে যাতে না পড়ে সেই জন্য বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে। আর যদি পড়ে যায়, তাহলে হাত ব্যতীত অন্যকিছু দ্বারা উঠানো সম্ভব না হলে আর উঠানোর কোনো প্রয়োজন নাই।
iii) আস্তে আস্তে করে একত্রিত করে কয়েকদিনের একসাথে একত্রিত করে দাফন করা যেতে পারে।
iv) আমরা সবসময়ই যথাসম্ভব উঠানোর কথা বলছি, সুতরাং রাস্তা ঘাট থেকে তুলা সম্ভব না হলে তুলার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।
v) আপনার সুবিধা এবং অসুবিধার কথা চিন্তা করে তো শরীয়ত তার সমাধান বর্ণনা করবে না। বরং শরীয়ত আল্লাহ এবং রাসূল সাঃ এর বিধান বর্ণনা করবে। মুফতির নিকট দলীল চাওয়ার অধিকার কারো নাই। হ্যা, মাসআলা জানার অধিকার আছে।
শরীয়তের দৃষ্টিতে গায়রে আলেমের জন্য মাস'আলা জানার অধিকার থাকলেও দলিল জানার কোনো অধিকার নেই। যেমন উকিলের কাছ থেকে আইন জানার অধিকার থাকলেও উক্ত আইনের দলিল জানার কোনো অধিকার নেই। ঠিকতদ্রুপ একজন চিকিৎসকের নিকট থেকে চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার থাকলেও উক্ত চিকিৎসার দলিল জানার কোনো অধিকার নেই। (আহসানুল ফাতাওয়া-১/৪০২)
হ্যা, আপনি যদি আই ও এমের ছাত্র হন, তাহলে অবশ্যই আপনি এখন আলেম হওয়ার দিকে এগুচ্ছেন, তাই আপনার অধিকার থাকবে।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যদি দলিল বুঝেন, তাহলে আপনি নিম্নোক্ত আয়াতের ব্যখ্যা দেখবেন।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﺛُﻢَّ ﺃَﻣَﺎﺗَﻪُ ﻓَﺄَﻗْﺒَﺮَﻩُ
অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান ও কবরস্থ করেন তাকে।(সূরা আবাসা-২১)
(ঙ) জ্বী, উত্তম। কেননা তাদের ইবাদত ও ধর্ম পালন দেখে মুসলমানের মনের অবস্থা পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে বিধায়।