আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
242 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
আমি পড়াশোনার জন্যে বিয়ের পরেও আড়াই বছর অন্য জেলাতে ছিলাম। যখনই বাসায় আসতাম প্রথমে শ্বশুড়বাড়িতে উঠতাম, সেখানে কিছুদিন থেকে সর্বোচ্চ তিন-চার দিনের জন্যে বাবার বাসায় আসতাম। এর বেশি কখনোই থাকা হয়নি। দীর্ঘদিন বাসায় থাকলেও দেড়-দুই মাসে একবার আসি বাবার বাসায়। বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুড়বাড়ির দূরত্ব মাত্র ২০ মিনিটের পথ। আমার আব্বু খুবই অসুস্থ থাকেন সবসময় এবং চান আমি মাঝে মাঝে ওনাকে দেখতে আসি, আমি গেলে অনেক বেশি খুশি হন। আমার ভাইয়েরা ছোট, আম্মুও অসুস্থ থাকেন প্রায়ই। অন্যদিকে আমার শ্বাশুড়ি আমাকে খুবই ভালোবাসেন আলহামদুলিল্লাহ।  কিন্তু উনি চান আমি সবসময় ওনার কাছেই থাকি। বাবার বাসায় আসতে চাইলে উনি মন খারাপ করেন। দুই মাস পর যদি আসতে চাই তখনো বলেন, এই তো সেদিন গেলে। আমি ছাড়া আমার বাবা-মায়ের যত্ন করার মতো কেউ নেই। সমস্যা হচ্ছে শ্বশুড়বাড়ি খুশি রাখতে গিয়ে বাবা-মায়ের হক নষ্ট করছি কি না? আমি কিভাবে ব্যালেন্স করতে পারি দুইদিকে? আমার বাবা-মায়ের কি কি হক আমাকে আদায় করতে হবে? তাছাড়া শ্বাশুড়ি যতোই আদর করুক আসতে না দিলে তখন মন খারাপ হয়, খারাপ চিন্তা আসে, আস্তাগফিরুল্লাহ। আমাকে উত্তম নাসীহাহ দিন।

1 Answer

0 votes
by (713,840 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।
وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُل رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বলঃ হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন। (সূরা বনি ইসরাঈল-২৩-২৪)

 عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ جَاهِمَةَ السَّلَمِيِّ أَنَّ جَاهِمَةَ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَدْتُ أَنْ أَغْزُوَ وَقَدْ جِئْتُ أَسْتَشِيرُكَ فَقَالَ هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَالْزَمْهَا فَإِنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ رِجْلَيْهَا
মুআবিয়া ইবন জাহিমা সালামী (রহঃ) বলেন, আমার পিতা জাহিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে জিজ্ঞাসা করলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যুদ্ধে গমন করতে ইচ্ছা করেছি। এখন আপনার নিকট মতামত জিজ্ঞাসা করতে এসেছি। তিনি বললেনঃ তোমার মাতা আছে কি? সে বললোঃ হ্যাঁ। তিনি বললেন, তার খেদমতে লেগে থাক। কেননা, জান্নাত তার পদদ্বয়ের নিচে। ( সুনানে নাসাঈ-৩১০৮, সুনানে ইবনে মাজা-২৭৮১)


মানুষের বসবাসের ক্ষেত্রে শরয়ী কোনো বিধিনিষেধ নেই। যার যেখানে সুবিধা হবে সে সেখানেই বসবাস করবে। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হল, দ্বীনী পরিবেশ দেখেই মানুষ তার বসবাস স্থলকে নির্বাচন করবে।মানুষ যেখানেই বসবাস করুক না কেন, শরীয়ত তাকে যাদেরকে লালনপালনের দায়িত্ব দিয়েছে,সে তাদেরকে লালনপালন করবে।যেমন স্ত্রী,নাবালক সন্তানাদি,অভাবী পিতা-মাত, নিঃস্ব ভাই-বোন ইত্যাদি লোকদিগকে দেখভাল করার দায়িত্ব প্রত্যেক মানুষের উপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে। চায় সে পুরুষ হোক বা মহিলা হোক, যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী সে তার দায়িত্ব পালন করবে। 
যৌথপরিবারে থাকলেও স্বামীর খেদমত ব্যতীত আর কারো খেদমত এমনকি সবার রান্নাবান্নার দায়িত্ব ও স্ত্রীর উপর ওয়াজিব নয় বরং তার নৈতিক দায়িত্ব। তবে রান্নাবান্না সম্পর্কে মতানৈক্য রয়েছে এবং বিষয়টা ব্যাখ্যা সাপেক্ষও ।একক পরিবার না যৌথ পরিবার?কোনটা অগ্রহণযোগ্য?এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/430


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেভাবে একজন ছেলের উপর মাতপিতার হক রয়েছে, ঠিক সেভাবে একজন মেয়ের উপরও মাতাপিতার হক রয়েছে। হ্যা মেয়ের তুলনায় ছেলের উপর মাতাপিতার হক বেশী , এজন্য যে, মেয়ে সে তার স্বামীর অধীনে থাকবে, তাছাড়া সে রোজিরোজগার করতে পারবে না। সেজন্য ছেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সে তার মাতাপিতার খেদমত করবে। এবং মেয়েও সে তার সাধ্যমত মাতাপিতার খেদমত করবে। স্ত্রী মাতাপিতার খেদমত করার ইচ্ছাপোষণ করলে স্বামী এতে বাঁধা দিতে পারবে না। 
সুতরাং আপনি শাশুড়-শাশুড়িরর মন রক্ষার নিমিত্তে মাতাপিতার খেদমতকে বিসর্জন দিতে পারবেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (19 points)
শ্বশুড়বাড়িতে থেকেও কিভাবে বাবা-মায়ের হক আদায় করবো,  কতটুকু করবো সেই সম্পর্কে জানালে উপকৃত হতাম।
by (713,840 points)
+1
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 
by (713,840 points)
আপনার সামর্থ্য থাকলে আপনি আপনার মাতাপিতাকে টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করবেন। আর সামর্থ্য না থাকলে আপনি তাদের  সাথে দেখা সাক্ষাৎ করবেন। এবং তাদের শারিরিক কোনো সাহায্যর প্রয়োজন থাকলে যেমন গোসল, কাপড় ধৌত করা ইত্যাদি, তা পূরণ করবেন। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 131 views
...