আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (29 points)
এমন কোন কি হাদীস আছে,যে খানে নবী মাগরীবের ফরজের আগে ২ রাকাত সুন্নাত পড়েছেন?

lafz সেন্ট ব্যবহার করা কি হারাম?

আমাকে ১০টি বিশ্ব বিখ্যাত ইসলামিক বইয়ের নাম বলুন,যেমন(ফাতহুল বারী)।

নবীর স্ত্রী যয়নাব এর ঘটনা কেমন?যাইদ কি যয়নাবের স্বামী ছিল তবে কেন ত্যাগ করলো?আর যাইদ কেমন সন্তান ছিল?পোষ্য নাকি ওরশজাত?

কোন জারজ সন্তান যদি ইসলাম গ্রহণ করলে তার সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

1 Answer

0 votes
by (711,000 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। 
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كَانَ الْمُؤَذِّنُ إِذَا أَذَّنَ قَامَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَبْتَدِرُونَ السَّوَارِيَ حَتَّى يَخْرُجَ النَّبِيُّ وَهُمْ كَذَلِكَ يُصَلُّونَ الرَّكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْمَغْرِبِ وَلَمْ يَكُنْ بَيْنَ الْأَذَانِ وَالْإِقَامَةِ شَيْءٌ قَالَ عُثْمَانُ بْنُ جَبَلَةَ وَأَبُو دَاوُدَ عَنْ شُعْبَةَ لَمْ يَكُنْ بَيْنَهُمَا إِلاَّ قَلِيلٌ.
তিনি বলেন, মুআয্যিন যখন আযান দিতো, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাহাবীগণের মধ্যে কয়েকজন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বের হওয়া পর্যন্ত (মসজিদের) খুঁটির নিকট গিয়ে দাঁড়াতেন এবং এ অবস্থায় মাগরিবের পূর্বে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। অথচ মাগরিবের আযান ও ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ের মধ্যে কিছু (সময়) থাকত না। ‘উসমান ইবনু জাবালাহ ও আবূ দাঊদ (রহ.) শু‘বাহ (রহ.) হতে বর্ণনা করেন যে, এ দু’য়ের মধ্যবর্তী ব্যবধান খুবই সামান্য হত। (সহীহ বুখারি-৬২৫) আরো জানুন- https://www.ifatwa.info/15322
(২)
কোনো প্রকার এলকোহল সম্পর্কে যদি জানা যায় যে, সেটা মদ থেকে তৈরী করা হয়েছে,অথবা যা সেবন করলে নেশা চলে আসে তাহলে তা অবশ্যই মদের মতই হারাম।আর যদি এলকোহলটি মদ থেকে তৈরী হওয়া সম্পর্কে জানা না যায়, তাহলে তা হারাম হওয়ার আপাদত কোনো কারণ পাওয়া যাচ্ছে না।হারাম প্রমাণিত না হলে যেহেতু প্রত্যেক জিনিষের মৌলিকত্ব বৈধ,বিধায় সেটাও বৈধ হবে।

ঠিকতেমনিভাবে কোনো হারামের মৌলিকত্ব বদলে গিয়ে যদি তা ভিন্নরূপ ধারণ করে তবে সেটাও বৈধ হবে।যেহেতু উক্ত জিনিষ ব্যাপক প্রচলিত,অন্যদিকে অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, উক্ত এলকোহলের অধিকাংশ ই মদ থেকে তৈরী হয় না,তাই কোনো এলকোহল সম্পর্কে হারাম প্রমাণিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তা হালাল ও বৈধ।সুতরাং উক্ত দৃষ্টিভঙ্গি তে তা দ্বারা নামাজ হবে।

উত্তম/অনুত্তম ??
প্রশ্ন হতে পারে তাহলে এগুলো ব্যবহার করা উত্তম না পরিত্যাগই উত্তম?সেই প্রশ্নের জবাবে বলা যেতে পারে যে,হাদীস শরীফে আছে, 
নু'মান ইবনে বশির রাযি থেকে বর্ণিত
 ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﻠَﺎﻝَ ﺑَﻴِّﻦٌ ، ﻭَﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡَ ﺑَﻴِّﻦٌ، ﻭَﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﻣُﺸْﺘَﺒِﻬَﺎﺕٌ ﻟَﺎ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻬُﻦَّ ﻛَﺜِﻴﺮٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ، ﻓَﻤَﻦِ ﺍﺗَّﻘَﻰ ﺍﻟﺸُّﺒُﻬَﺎﺕِ ﺍﺳْﺘَﺒْﺮَﺃَ ﻟِﺪِﻳﻨِﻪِ ، ﻭَﻋِﺮْﺿِﻪِ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻭَﻗَﻊَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺸُّﺒُﻬَﺎﺕِ ﻭَﻗَﻊَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡِ ، ﻛَﺎﻟﺮَّﺍﻋِﻲ ﻳَﺮْﻋَﻰ ﺣَﻮْﻝَ ﺍﻟْﺤِﻤَﻰ ، ﻳُﻮﺷِﻚُ ﺃَﻥْ ﻳَﺮْﺗَﻊَ ﻓِﻴﻪِ ، ﺃَﻟَﺎ ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﻜُﻞِّ ﻣَﻠِﻚٍ ﺣِﻤًﻰ ، ﺃَﻟَﺎ ﻭَﺇِﻥَّ ﺣِﻤَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﻣَﺤَﺎﺭِﻣُﻪُ
নিশ্চয়ই হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট, আর এ উভয়ের মাঝে রয়েছে সন্দেহজনক বিষয়, অনেক লোকই সেগুলো জানে না। যে ব্যক্তি এসব সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকে সে তার দ্বীন ও মর্যাদাকে নিরাপদে রাখে, আর যে লোক সন্দেহজনক বিষয়ে পতিত হবে সে হারামের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়বে। যেমন কোন রাখাল সংরক্ষিত চারণভূমির পাশে পশু চরায়, আশংকা রয়েছে সে পশু তার ভেতরে গিয়ে ঘাস খাবে। সাবধান! প্রত্যেক রাজারই সংরক্ষিত এলাকা থাকে, সাবধান আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা হলো তার হারামকৃত বিষয়গুলো। জেনে, রেখো, দেহের মধ্যে এক টুকরা গোশত আছে। যখন তা সুস্থ থাকে তখন সমস্ত দেহই সুস্থ থাকে। আর যখন তা নষ্ট হয়ে যায় তখন সমস্ত দেহই নষ্ট হয়ে যায়। স্মরণ রেখো, তা হলো 'কালব' হৃদয়।(সহীহ মুসলিম-১৫৯৯)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
উক্ত হাদীসে সন্দেহপূর্ণ তথা যার ব্যাপারে পরিপূর্ণরূপে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না, সে সম্পর্কে বলা হচ্ছে যে তা থেকে বিরত থাকতে।তাই এগুলা থেকে যদি বিরত থাকতে পারি তাহলে তো সেটা কতই না উত্তম।আল্লাহ-ই সর্বজ্ঞ।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/165 সুতরাং এগুলো ব্যবহার করলে নামায হবে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/9525

(৩)
হাদীসের জন্য সহীহ বুখারী, হাদিস ব্যখ্যার জন্য মিরকাতুল মাফাতিহ, তাফসিরের জন্য তাফসিরে তাবারী, মা’রিফুল কুরআন। কুরআন তরজমার জন্য তাওযিহুল কুরআন, তাফসিরে উসমানি। ফিকহের জন্য ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি, হেদায়া, নুরুল ইযাহ কিতাবের শরাহ মারাকিল ফালাহ,ইত্যাদি। 

(৪)
হযরত যায়েদ রাযি ছিল, আল্লাহর রাসূল সাঃ এর পালকপুত্র । উনার স্ত্রীর নাম ছিল, যায়নাব রাযি। তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহের জের ধরে তালাক হওয়ার পর আল্লাহর হুকুমে একটি কুসংস্কারকে চিরতরে মিটানোর জন্য রাসূলুল্লাহ সাঃ যায়নাব রাযিকে বিয়ে বিয়ে করেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَإِذْ تَقُولُ لِلَّذِي أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَنْعَمْتَ عَلَيْهِ أَمْسِكْ عَلَيْكَ زَوْجَكَ وَاتَّقِ اللَّهَ وَتُخْفِي فِي نَفْسِكَ مَا اللَّهُ مُبْدِيهِ وَتَخْشَى النَّاسَ وَاللَّهُ أَحَقُّ أَن تَخْشَاهُ ۖ فَلَمَّا قَضَىٰ زَيْدٌ مِّنْهَا وَطَرًا زَوَّجْنَاكَهَا لِكَيْ لَا يَكُونَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ حَرَجٌ فِي أَزْوَاجِ أَدْعِيَائِهِمْ إِذَا قَضَوْا مِنْهُنَّ وَطَرًا ۚ وَكَانَ أَمْرُ اللَّهِ مَفْعُولًا
আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন; আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন; তাকে যখন আপনি বলেছিলেন, তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর। আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করা উচিত। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে। ( সূরা আহযাব-৩৭)

(৫)
জরজ সন্তান ইসলাম গ্রহণ করে যদি সে নেক কাজ করে, তহলে সেও জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাকে মুসলমান হিসেবে গণ্য করা হবে। হ্যা তার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিত্ব উপস্থিত থাকাবস্থায় সে ইমামতি করতে পারবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...