আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
303 views
in সালাত(Prayer) by (31 points)

আসসালামু আলাইকুম মুহতারাম, 

বাসায় ছোট ভাই, বাবাকে নিয়ে জামআত পড়তে চাচ্ছি৷ 

১৷ নামাযের আগে আযান এবং একামত দুটোই কি দিতে হবে?

২৷ ঘরের আয়তন কম হওয়ায় পেছনে পেছনে দাড়ালে দুই কাতার ভালোভাবে হয় না, তো এক্ষেত্রে কি ইমাম সুবিধামত একটু সাইডে দাড়ালে এবং মুক্তাদিরা তারপর ঐ অনুযায়ী দাড়ালে হবে নাকি ইমামকে মাঝামাঝি-ই দাড়াতে হবে?

৩৷ ইমাম-মুক্তাদির কাতারের ব্যবধান কতটুকু হতে হয়, কতটুকু পেছনে মুক্তাদি দাড়ালেও সমস্যা নেই?

৪৷  সর্বনিম্ন ১ জন মুক্তাদি নিয়ে জামআত পড়া যাবে কি?

৫৷ কোনো পুরুষ মুক্তাদি নিয়ে পড়া সম্ভব না হলে, অন্য ক্ষেত্রে, মহিলা মুক্তাদি নিয়ে জামআত পড়া যাবে নাকি পুরুষ মুক্তাদি থাকতে হবে?  আর এক্ষেত্রে যদি পড়া যায় তাহলে ইমামের ভাবী কি মহিলা মুক্তাদি হতে পারবে দেবর ইমামের পেছনে?

৬৷ জামআতের নামাযের ক্ষেত্রে ইমামের কি এমন নিয়ত করতে হয় যে আমার পেছনের সকল মুসল্লীদের জন্য আমি ইমাম হয়ে নামায আদায় করছি এবং মুসল্লীদেরও কি বলতে হয় আমি এই ইমামের পিছনে এই ওয়াক্তের নামায আদায় করছি? মানে উভয়েরই কি বলতে হবে? 

জামআতে নামাযের জন্য অতি প্রয়োজনীয় মাসআলা মাসায়েল বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি, এমন যদি কোনো বিষয় থাকে যা জামআতে নামাযের ক্ষেত্রে আমাদের সাধারণ মানুষদের প্রায়ই ভুল হয়, দয়া করে জানালে উপকার হয়৷ 

আর আপনাদের এই সেবার জন্য জাযাকাল্লাহু খইরন৷

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم  


(০১)
সমস্ত ফরজ নামাজ মসজিদে জামা'আতের সাথে আদায় করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। 
মসজিদের জামা'আত ছেড়ে দিয়ে ঘরে ফরজ নামাজ এর জামা'আত করা মাকরুহ।
এতে মসজিদের জামা'আত ছেড়ে দেওয়ার গুনাহ হবে।
হ্যাঁ যদি কোনো শরয়ী ওযর বশত কেহ ঘরে জামা'আত করে,তাহলে এই ছুরতে মাসয়ালা হলো মহল্লার আযান ইকামতই যথেষ্ট। 
তবে মুস্তাহাব হলো আযান ইকামত দিয়ে জামা'আত করবে।
.

তবে জামিয়া বিন নুরি পাকিস্তানের 144108200506 নং ফতোয়ায় উল্লেখ রয়েছেঃ 
যদি মহল্লার মসজিদের আযান হয়ে গিয়ে থাকে,তাহলে শুধু ইকামত দিবে।
অবশ্য যদি আযান ইকামত উভয়টিই দেওয়া হয়,তাহলে ভালো।

মুসলিম শরিফের ৫৩৪নং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আসওয়াদ ও আলকামা রহ থেকে বর্ণিত, তারা বলেন, আমরা হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এর ঘরে এলাম।
তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের পেছনের লোকজন কি নামাজ আদায় করেছে? আমরা বললাম, না। তিনি বললেন, তাহলে দাঁড়াও, নামাজ আদায় কর। তখন তিনি আমাদেরকে আজান ও ইকামতের নির্দেশ দেননি।

উকবা ইবনু আমির রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে,

يَعْجَبُ رَبُّكَ مِنْ رَاعِي غَنَمٍ فِي رَأْسِ شَظِيَّةِ الْجَبَلِ يُؤَذِّنُ بِالصَّلاَةِ وَيُصَلِّي فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ انْظُرُوا إِلَى عَبْدِي هَذَا يُؤَذِّنُ وَيُقِيمُ الصَّلاَةَ يَخَافُ مِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي وَأَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ

তোমার রব সে ব্যক্তির উপর খুশি হন, যে পাহাড়ের উচ্চশৃঙ্গে বকরী চরায় এবং নামাযের জন্য আযান দেয় ও নামায আদায় করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার এই বান্দাকে দেখ! নামাযের জন্য সে আযান ও ইকামত দিচ্ছে। সে আমাকে ভয় করছে। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম ও জান্নাতে প্রবেশ করালাম। (আবু দাউদ ১২০৩)

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 395):
"(قوله: في بيته) أي فيما يتعلق بالبلد من الدار والكرم وغيرهما، قهستاني. وفي التفاريق: وإن كان في كرم أو ضيعة يكتفي بأذان القرية أو البلدة إن كان قريبًا وإلا فلا. وحد القرب أن يبلغ الأذان إليه منها اهـ إسماعيل. والظاهر أنه لايشترط سماعه بالفعل، تأمل.
(قوله: لها مسجد) أي فيه أذان وإقامة، وإلا فحكمه كالمسافر صدر الشريعة.
(قوله: إذ أذان الحي يكفيه) لأن أذان المحلة وإقامتها كأذانه وإقامته؛ لأن المؤذن نائب أهل المصر كلهم كما يشير إليه ابن مسعود حين صلى بعلقمة والأسود بغير أذان ولا إقامة، حيث قال: أذان الحي يكفينا، وممن رواه سبط ابن الجوزي فتح: أي فيكون قد صلى بهما حكما، بخلاف المسافر فإنه صلى بدونهما حقيقةً وحكمًا؛ لأن المكان الذي هو فيه لم يؤذن فيه أصلا لتلك الصلاة كافي. وظاهره أنه يكفيه أذان الحي وإقامته وإن كانت صلاته فيه آخر الوقت تأمل، وقد علمت تصريح الكنز بندبه للمسافر وللمصلي في بيته في المصر، فالمقصود من كفاية أذان الحي نفي الكراهة المؤثمة. قال في البحر: ومفهومه أنه لو لم يؤذنوا في الحي يكره تركهما للمصلي في بيته، وبه صرح في المجتبى، وأنه لو أذن بعض المسافرين سقط عن الباقين كما لايخفى".
সারমর্মঃ
মহল্লার আযান ইকামতই তার জন্য যথেষ্ট, মহল্লার আযান ইকামত তার আযানের মতো।   
কেননা মুয়াজ্জিন শহর বাসীদের প্রতিনিধি।  


قال في الدر (مع الرد، کتاب الصلاة باب الأذان: ۲/۶۳، ط: زکریا دیوبند): وکرہ ترکہما معًا․․․ بخلاف مصل ولو بجماعة في بیتہ بمصر أو قریة لہا مسجد فلا یکرہ ترکہما إذ أذان 
الحي یکفیہ: لأن أذان المحلة وإقامتہا کأذانہ وإقامتہ․․․ اھ 
সারমর্মঃ
 শহরে নিজ বাসায় অথবা গ্রামে (যেই গ্রামে মসজিদ আছে) জামা'আত করলে আযান ইকামত ছেড়ে দেওয়া মাকরুহ নয়।
কেননা মহল্লার আযাম ইকামতই যথেষ্ট।  

وقال في الہدایة (کتاب الصلاة، باب الأذان: ۱/ ۷۶)؛ فإن صلی في بیتہ في المصر یصلي بأذان وإقامة لیکون الأداء علی ہیئة الجماعة وإن ترکہما جاز․․․ اھ
সারমর্মঃ 
যদি কেহ শহরে নিজ বাসায় নামাজ পড়ে,তাহলে আযান ইকামত দিয়েই নামাজ পড়বে।
যাতে করে তার নামাজ জামা'আতের সহিত নামাজের ছুরতে হয়ে যায়।
যদি উভয়টি ছেড়ে দেয়,তাহলেও জায়েজ আছে।  
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আযান ইকামত দেওয়া জরুরি নয়।    

(২.৩)
মুক্তাদী যদি মাত্র ১জন হন তাহলে অবশ্যই তাকে ইমামের ডান পার্শ্বে ইমামের সাথে একই বরাবরে দাঁড়াতে হবে।

যদি মুক্তাদি দুই বা তার অধিক হয়,তাহলে ইমামের পিছনের কাতারে দাড়াবে। (ইমাম আর তাদের দাড়ানোর মাঝে এক কাতার সমপরিমাণ দূরত্ব থাকবে,যার মাঝে তারা ঠিকঠাক ভাবে সেজদাহ আদায় করতে পারে।)

আরো জানুনঃ 

যদি জায়গা প্রশস্ত না হয়,তাহলে দুইজন মুক্তাদি ইমামের এক দুই কদম পিছনে ইমামের ডানে বামে দাড়াতে পারবে।
জামিয়া বিন নুরি পাকিস্তানের 144010200401 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।
,
(০৪)
সর্বনিম্ন একজন মুক্তাদি নিয়ে জামা'আত করা যাবে।
সেই সময় মুক্তাদি ইমামের সাথেই ডান দিকে দাড়াবে।
এক কদম সমপরিমাণ ইমামের ডানে দাড়াবে।

 
(০৫)
শুধু মহিলা মুক্তাদি নিয়ে জামা'আত করা  যাবে।
,
মহিলাদের ঘরে একাকী নামাজ পড়া উত্তম।
তবে মহিলা যদি উক্ত জামা'আতে শরিক হয়,তাহলে পিছনে পর্দার আড়ালে শরীক হতে পারবে।
এই শর্তের সাথে যে ইমাম তাহারও নিয়ত করবে।
,
(০৬)
হ্যাঁ এই ভাবে মুক্তাদিরা নিয়ত করবে।
ইমামতির ছওয়াব পেতে ইমামকেও এমন নিয়ত করতে হবে।
,
 মুক্তাদি যদি মহিলাও হয়,তাহলে ইমামের জন্য তার ইমামতির নিয়ত করা শর্ত।
নতুবা সেই মহিলার নামাজ আদায় হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...