আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহ।

এক বোনের প্রশ্ন-

আমার বিয়ে বন্ধের জাদুর সমস্যা ছিল।এখানেও সমস্যার কথা বলে প্রশ্ন করেছিলাম তদবীর নেয়া বিষয়ে আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ উত্তমভাবে দোয়া কবুল করেছেন।কিন্তু জীন এখনো শরীর থেকে জায়নি।কষ্ট হয় অনেক।বিয়ে হলো নয় দিন রুকিয়াহ পরিপূর্নভাবে করার সময় মিলছেনা।বিয়েটা কোনো রুকিয়াহ বা তদবীরে হয়নাই।একদম আল্লাহ সঠিক সময়ে দুয়ার বরকতে দিয়েছেন।কিন্তু বিয়ের দিন শশুরবাড়ি থেকে দেয়া আংটি হাত থেকে পরে যায়।পরে আবার কয়দিন হাতে দিলে আবারো পরে যায়। অনেক খোজার পরও পাচ্ছিনা।উনারা শুনলে দায়িত্বঙ্গানহীন মনে করবে।অথচ পুকুরের মধ্যে থেকেও কানের বালা ইন্নালিল্লাহ,দোয়া ইউনুস পরে পাইছি।আজ ৩-৪দিন ধরে তন্ন তন্ন করে খুজেও পাচ্ছিনা।নতুন উপহার, নতুন সংসার জি জবাব দিব যদি না পাই।বিয়ের আগেও অনেকের অপমান সহ্য করছি।এখনও অনেকে হিংসা করে ভালো বিয়ে হওয়াতে।কটাক্ষ করে কথা বলছে আত্মীয় স্বজন।জীন শয়তান, মানুষ শয়তান সবাই হিংসা করে এগুলো সবাইকে বলাও যায়না।এখন মাসজিদের এক হুজুর উনি বলছে একদিনের মধ্যে না পাইলে তদবীর লাগবে।উনি বিয়ের তদবীর দিছিল (পানি,তেল পড়া,তাবিজ,হাজতের নামাজ,রোজা রাখা ইত্যাদি) আমি ভয়ে ফেলে দিছি দেইনি।আপনাদের কাছে প্রশ্ন করার পর তাবিজ খুলে রাখতে বলছেন।তাবিজ খুলে দেখি কুরআানের ফজীলতপূর্ন কয়েকটা আায়াত আর একটা নকশা।এরপর নষ্ট করেছি।আমার রুকিয়াহ চলমান ছিল।এখন উনি যেহেতু কুরআন দিয়ে তাবীজ দেয় উনার থেকে আংটি হারানোর জন্য তদবীর নেয়া যাবে? সবাই বলে সংসার টিকানো ফরজ।আগে বলতো বিয়ে ফরজ, তাবিজ নিতে হবে।তবে এখন কেউ জোরাজুরি করবেনা।বলছে নিজে ম্যনেজ করলে করো।আমি সুরা ইউসুফ পরতেছি,দুরুদ, ইস্তেগফার, দোয়া ইউনুস পরতেছি।আর সেল্ফ রুকিয়াহ করতে মন চায়না।৩ বছর ধরে চলতেছে।এখন তো সময়ও পাবোনা।ঐ হুজুর কি তদবীর দেয় জানিনা।তবে আগেই জেনে রাখতে চাই।একটা রুমের মধ্যে ছিলাম।রুম থেকে বের হয়ে খাবার খেয়ে ট্যাপে হাত ধুয়ে হাত উচু করে দেখি আংটি নেই।এখন সন্দেহ হচ্ছে জীন সরাইছে।ও চায় আমার সংসারে ঝামেলা করতে।হাস্যকর লাগলেও এটা ভাবা ছাড়া কিছু দেখছিনা।আজেবাজে স্বপ্ন দেখায়।আমার জীবনটা কি এই কষ্ট আর মানুষ,শয়তানের হিংসার মধ্যে দিয়ে যাবে।অনেক দোয়ার পর আল্লাহ নিজের মতো শশুর বাড়ি দিয়েছেন।এখনোও সারাজীবন বাকি।শুরুতেই এমন হলে তো আমার ইমেজ নষ্ট হয়ে যাবে তাদের মাঝে।আমাকে  সুপরামর্শ দিবেন

1 Answer

0 votes
by (696,300 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আপনাকে ঘরোয়া ভাবে কিছু রুকইয়ার পরমার্শ দিচ্ছি,
(১)সকল প্রকার ফরয ওয়াজিব ইবাদত যত্নসহকারে পালন করা।এবং সকল প্রকার হারাম ও নাজায়ে কাজ হতে বেঁচে থাকে।
(২) অধিক পরিমাণ কুরআন তেলাওয়াত করা।
(৩)দু'আ, জায়েয তাবীয ও যিকিরের মাধ্যমে নিজেকে হেফাজতের চেষ্টা করা।

নিম্নোক্ত দু'আকে সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে পড়া।
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ، فِي الْأَرْضِ، وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ،


আরো জানুনঃ- http://ifatwa.info/1093

প্রত্যক নামাযের পর ঘুমাইবার সময় এবং সকাল সন্ধ্যা আয়াতুল কুরসী পড়া।এবং ঘুমাইবার সময় ও সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে সূরা নাস,সূরা ফালাক্ব ও সূরা ইখলাস তিনবার করে পড়া।এবং প্রতিদিন নিম্নোক্ত দু'আটি একশতবার করে পড়া।


لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيئ قدير،

প্রতিদিন সকাল সাতটা করে খেজুর খাওয়া।মদিনার খেজুর হলে ভালো(এলাজে কুরআনী-০৩)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/10103

তাবিজে কুরআনের আয়াত, আল্লাহর নাম, দুআয়ে মাসুরা বা শিরকমুক্ত অর্থবোধক থাকলে তা  জায়িজ।  কেননা এসব তাবিজের ক্ষেত্রে মুয়াসসার বিজজাত তথা আরোগ্যের ক্ষমতা আল্লাহ তাআলাকেই মনে করা হয়। যেমন ডাক্তার প্রদত্ত ঔষধের ক্ষেত্রে মুয়াসসার বিজজাত আল্লাহকে মনে করার কারণে তা নাজায়িজ নয়। যদি মুয়াসসার বিজজাত ঐ ঔষধকে মনে করলে ঔষধ সেবনও হারাম হবে।
.
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُعَلِّمُهُمْ مِنَ الْفَزَعِ كَلِمَاتٍ: «أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ» وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ يُعَلِّمُهُنَّ مَنْ عَقَلَ مِنْ بَنِيهِ، وَمَنْ لَمْ يَعْقِلْ كَتَبَهُ فَأَعْلَقَهُ عَلَيْهِ

আমর ইবনে শুআইব তাঁর পিতা ও তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে,রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেন,তোমাদের কেউ যখন ঘুম অবস্থায় ঘাবড়িয়ে উঠে,সে যেন  أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ দো’আটি পাঠ করে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর তাঁর উপযুক্ত সন্তানদের তা শিক্ষা দিতেন এবং ছোটদের গলায় তা লিখে লটকিয়ে দিতেন।{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৮৯৫}

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
https://ifatwa.info/20919/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
কুরআন সুন্নাহের আলোকে শরীর বা ঘর বন্ধ করার নিয়ম হল, চার কুল ও সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত এবং সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পড়ে শরীর বা ঘরের দরজাসমূহে ফু দেওয়া। বিশেষ করে সূলা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে ফু দেওয়া। 

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি উপরোক্ত পদ্ধতিতে ঘর বন্ধ করার আমল করতে পারেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا الْمُفَضَّلُ بْنُ فَضَالَةَ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ كُلَّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ ثُمَّ نَفَثَ فِيْهِمَا فَقَرَأَ فِيْهِمَا(قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ)وَ (قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ) وَ (قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ) ثُمَّ يَمْسَحُ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ

‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, প্রতি রাতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় যাওয়ার প্রাক্কালে সূরাহ ইখ্লাস, সূরাহ ফালাক ও সূরাহ নাস পাঠ করে দু’হাত একত্র করে হাতে ফুঁক দিয়ে যতদূর সম্ভব সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। মাথা ও মুখ থেকে আরম্ভ করে তাঁর দেহের সম্মুখ ভাগের উপর হাত বুলাতেন এবং তিনবার এরূপ করতেন। 
[বুখারী শরীফ ৫০১৭.৫৭৪৮, ৬৩১৯] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৪৮)

এর পরেও কাজ না হলে পরামর্শ দিবো,ভালো কোনো বিশুদ্ধ আকিদার মুদাব্বিরের শরণাপন্ন হওয়ার।মুদাব্বির মানে যিনি কুরআন হাদীস থেকে সেহেরের চিকিৎসা করে থাকেন।যাকে রুকইয়ায়ে শরঈয়্যাহ বলা হয়।

★পাশাপাশি স্বামীকে আংটি হারানোর বিষয়ে বলতে পারেন। এতে সমস্যা মনে করলে সেক্ষেত্রে নিজ বাবাকে বলে সেরকমের একটি আংটি বানিয়ে নিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...