বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
উম্মতের নিরবচ্ছিন্ন আমল দুই হাতে মুসাফাহা করার বিষয়টি লক্ষ্য করুন, যাকে তারা বেদআত ও খেলাফে সুন্নাত বলে অপপ্রচার করছে। এটি কি আসলেই প্রমাণহীন? নাকি প্রমাণ আছে।
ইমাম বুখারী রহঃ স্বীয় সহীহ বুখারীর ২ নং খন্ডের ৯২৬ নং পৃষ্ঠায় “বাবুল মুসাফাহা”নামে পরিচ্ছেদ স্থাপন করেছেন। যাতে তিনি আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ থেকে তালীকান এ বর্ণনা এনেছেন যে,
علمنى النبى صلى الله عليه وسلم التشهد وكفى بين كفيه،
অর্থাৎ “হুজুর সাঃ আমাকে তাশাহুদ শিখালেন, এমতাবস্থায় যে, আমার হাত রাসূল সাঃ এর উভয় হাতের মাঝে ছিল”।
ইমাম বুখারী রহঃ এর পর “বাবুল আখজ বিল ইয়াদাইন”তথা “উভয় হাত ধরা”নামে বাব স্থাপন করেছেন। আর তাতে হাম্মাদ বিন জায়েদ রহঃ এবং আব্দুল্লাহ বিন মুবারক রহঃ এর মুসাফাহার উল্লেখ করেছেন যে, তারা উভয় হাতে মুসাফাহা করেছেন।তারপর উভয় হাতের মুসাফাহার দলীল হিসেবে উপরোক্ত বর্ণনাটি আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ থেকে পূর্ণ সনদসহ এনেছেন যে, আমার হাত রাসূল সাঃ এর উভয় হাতের মাঝামাঝি ছিল। {সহীহ বুখারী-২/৯২৬, হাদীস নং-৫৯১০, সহীহ মুসলিম-১/১৭৩, সুনানে নাসায়ী-১/১৭৫}(আহলে হক মিডিয়া)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দুই হাত দ্বারা মুসাফাহা করাই হল, মুসাফাহার আদাব। হ্যা প্রয়োজনে এক হাত দ্বারাও করা যাবে।
(২)সালাতে মনোযোগ দেওয়ার জন্য কি চোখ বন্ধ করে রাখাও মাকরুহ। বরং বিভিন্ন রুকুনে বিভিন্ন দিকে দৃষ্টি দেওয়া সুন্নত।
(৩)যেহেতু পেশাব এমন বস্তু। যার ছিটা শরীরে লাগলে কবরের আযাব হয়ে থাকে। আর হাদীসেও লজ্জাস্থানকে ঝেড়ে পবিত্র করার কথা এসেছে। তাই যাদের পেশাব করার পর পেশাবের ছিটা ফোটা ফোটা করে পড়ে, তাদের উচিত যেকোনো ভাবে পেশাব থেকে বেছে থাকা।
প্রয়োজনে কিছুক্ষণ হেটে ও তা থেকে নিজেকে পবিত্র করতে হবে। নতুবা পেশাবের ছিটা শরীরে লাগার দরূন মারাত্মক গোনাহ হবে। যা কবরের আযাবের কারণ হবে। সেই সাথে কাপড় থাকবে নাপাক। আর নাপাক কাপড় দিয়ে নামায হয় না।
এ দৃষ্টিকোণ থেকে যাদের পেশাবের ফোটা পেশাব শেষ করার পর পড়ে না। তাদের পানি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করলেই যথেষ্ট। কিন্তু যাদের বের হয় তাদের কবরের আযাব থেকে রক্ষা পাবার আশায় কিছুক্ষণ হেটে হলেও তা থেকে পবিত্রতা অর্জন করে নেয়া জরুরী।
তবে পস্রাবের পর হাটাহাটি করাকে সুন্নাত মনে করা কখনো উচিৎ হবে না।সুন্নাত মনে করাটা বিদআত হবে।
হাটাহাটি করাটা হতে হবে নির্জনে। ননা এটা দৃষ্টিকটু একটা বিষয়।তাই যাদের ফোটাফোটা করে পস্রাব বাহির হওয়ার আশংকা রয়েছে,তারা যেন একাকি নির্জনে পস্রাব সেরে নেয়।এবং প্রয়োজনে ঢেলা কুলুপ ব্যবহার করে হেটে নেয়।
(৫)
জানাযার দোয়া:
اَلَّهُمَّ اغْفِرْلحَِيِّنَاوَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَا نَا اَللَّهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِْسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَىالاِْيمَانِ بِرَحْمَتِكَ يَاَارْ حَمَالرَّحِمِيْنَ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যেনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহীদিনা ওয়া গায়িবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ও যাকারিনা ও উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলামী ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান বেরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহীমিন।অনুবাদঃ হে আল্লাহ্ আমাদের জীবিত ও মৃত উপস্থিত ও অুপস্থিত বালকও বৃদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীলোকদিগকে ক্ষমা কর। হে আল্লাহ আমাদের মধ্যে যাহাদিগকে তুমি জীবিত রাখ তাহাদিগকে মৃত্যুর মুখে পতিত কর। তাহাদিগকে ঈমানের সাথে মৃত্যু বরণ করাইও।
লাশ যদি নাবালক ছেলে হয় তবে নিচের দোয়া পড়তে হবে
اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًاوْ اَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرً اوَذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَا فِعًا وَمُشَفَّعًا
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাজ আলহুলানা ফারতাঁও ওয়াজ আলহুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! উহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও উহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর এবং উহাকে আমাদের সুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও।
লাশ যদি নাবালেগা মেয়ে হয় তবে নিচের দোয়া পড়তে হবে।
اَللَّهُمَّ اجْعَلْهَالَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَالَنَا اَجْرً اوَذُخْرًا وَاجْعَلْهَالَنَا شَا فِعًة وَمُشَفَّعًا
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাজ আলহা লানা ফারতাঁও ওয়াজ আলহা লানা আজরাঁও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! ইহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও ইহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর। এবং ইহাকে আমাদের সুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও। দুইহাত দুইপাশে ঝুলাইয়া ইমাম সাহেব ডানে এবং বামে ছালাম ফিরাইবে।