(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ الإِسْلاَمَ بَدَأَ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا كَمَا بَدَأَ فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ " . وَفِي الْبَابِ عَنْ سَعْدٍ وَابْنِ عُمَرَ وَجَابِرٍ وَأَنَسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
ইসলামের শুরু হয়েছে যখন তা ছিল গরীব (আগন্তুক, অচেনা, অপরিচিত) অবস্থায়।। এটা আবার ফিরে যাবে সে গরিব অবস্থায়। আর সুসংবাদ হচ্ছে গুরাবাদের (অচেনা, অপরিচিতদের) জন্য।” [মুসলিম
কিতাবুল ঈমান ]
হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে
হাদীসে ইসলামকে তুলনা করা হয়েছে একাকী জীবন-যাপনকারী একজন প্রবাসী ব্যক্তির সঙ্গে যার সাথে তার পরিবারের অন্য কেউ থাকে না। অর্থাৎ- ইসলামের সূচনালগ্নে মুসলিমদের সংখ্যা ছিল অত্যন্ত কম। অনুরূপভাবে ইসলামের মাঝে নানা রকমের ত্রুটি বিচ্যুতি ফিতনাহ্-ফাসাদ ও বিদ্‘আদ অনুপ্রবেশের ফলে এবং ঈমানের ঘাটতির কারণে ইসলাম বিলুপ্ত হতে হতে অতি অল্প সংখ্যক মানুষের মধ্যে থাকবে। প্রাথমিক অবস্থায় যেমন ছিল তেমনি সবশেষে আবার সেভাবে পবিত্র স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিবে।
বলা হলো, “হে আল্লাহ্র রসূল (সঃ), কারা গুরাবা?” তিনি (সঃ) বললেন, “যারা অপরিচিত/বান্ধবহীন অবস্থায় যখন লোকেরা ইসলামের মধ্যে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে ,সে সময় এর সংশোধন করবে।” [মুসনাদ আহমদ ৩৭৭৫, ৮৮১২ ]
أحب شيء إلى الله تعالى الغرباء، قيل: ومن الغرباء؟ قال: الفرارون بدينهم، يبعهثم الله يوم القيامة مع عيسى ابن مريم عليهما السلام
আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় বস্তু হচ্ছে গুরাবারা। জিজ্ঞেস করা হলো, গুরাবা কারা? তিনি বললেনঃ যারা তাদের দ্বীন নিয়ে পলায়ন করে তারা। তাদেরকে আল্লাহ্ তা'আলা কিয়ামতের দিন ঈসা ইবনু মারইয়াম (আঃ)এর সাথে উঠাবেন।
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ الدِّينَ لَيَأْرِزُ إِلَى الْحِجَازِ كَمَا تَأْرِزُ الْحَيَّةُ إِلى جُحْرِهَا وَلَيَعْقِلَنَّ الدِّيْنُ مِنَ الْحِجَازِ مَعْقِلَ الْأُرْوِيَّةِ مِنْ رَأْسِ الْجَبَلِ إِنَّ الدِّيْنَ بَدَأَ غَرِيبًا وَّسَيَعُوْدُ كَمَا بَدَأَ فَطُوْبىْ لِلْغُرَبَاءِ وَهُمُ الَّذِيْنَ يُصْلِحُوْنَ مَا اَفْسَدَ النَّاسُ مِنْ بَعْدِىْ مِنْ سُنَّتِىْ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
‘আমর ইবনু ‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিঃসন্দেহে দীন (ইসলাম) হিজাযের (সউদী ‘আরবের) দিকে এমনভাবে ফিরে আসবে যেভাবে সাপ (পরিশেষে) তার গর্তের দিকে ফিরে আসে এবং দীন হিজাযেই আশ্রয় নিবে যেভাবে পার্বত্য মেষ পর্বত-শিখরে আশ্রয় নিয়ে থাকে। দীন নিঃসঙ্গ প্রবাসীর (গরীবীর) ন্যায় যাত্রা শুরু করেছে, আবার তা ফিরে আসবে যেভাবে যাত্রা শুরু করেছিল। অতএব অপরিচিতের জন্য সুসংবাদ রয়েছে, তারা ঐসব লোক যারা আমার পর লোকেদের দ্বারা নষ্ট করা সুন্নাতকে পুনঃ জারী করে।
(তিরমিযী ২৬৩০,মিশকাতুল মাসাবিহ ১৭০।)
,
★সুতরাং উল্লেখিত শর্ত যার মধ্যে পাওয়া যাবে,সে এই হাদীসের অর্থ অনুযায়ী গুরাবা বলে সাব্যস্ত হবে।
,
যদি কেহ নিজেকে গুরাবা বলে দাবী করে,ইহার দ্বারা নিজেকে জান্নাতি বলে আখ্যায়িত করা হয়না।
,
(০২)
ইচ্ছাপূর্বক ভাবে এমনটি করা মাকরুহে তাহরিমি।
আর ভুলক্রমে হলে কোনো সমস্যা নেই।
,
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 457)
"وكذا كل صلاة أديت مع كراهة التحريم تجب إعادتها.
قالوا: يجب الترتيب في سور القرآن، فلو قرأ منكوساً أثم، لكن لا يلزمه سجود السهو؛ لأن ذلك من واجبات القراءة لا من واجبات الصلاة، كما ذكره في البحر في باب السهو".
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (2/ 80)
"(بترك) متعلق بيجب (واجب) مما مر في صفة الصلاة (سهواً)
(قوله: بترك واجب) أي من واجبات الصلاة الأصلية، لا كل واجب؛ إذ لو ترك ترتيب السور لا يلزمه شيء مع كونه واجباً، بحر"
সারমর্মঃ
যদি কেহ সুরার তারতিবকে ছেড়ে দেয়,তাহলে কোনো কিছুই লাযেম আসবেনা।
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নামাজ মাকরুহ হবেনা।
,
(০৩)
যদি কেউ রমজানের কোনো রোযাকে ছেড়ে দেয়,বা শরয়ী উযর যেমনঃ অসুস্থতা,সফর,হায়েয-নেফাস ইত্যাদির কারণে ভেঙ্গে ফেলে তখন উলামায়ে কেরামের ঐক্যমতে উক্ত রোযাকে কা'যা করা ওয়াজিব।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।(সূরা বাক্বারা১৮৫)
আরো জানুনঃ
,
যদি অসুস্থ হওয়ার তার কাজা আদায় করার শক্তি না রাখে,তাহলে সে ফিদিয়া দিবে।
প্রতি রোযার পরিবর্তে একজন গরীবকে দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু’ কেজি গমের মূল্য সদকা করবে। এটাকে বলা হয় ফিদিয়া ।
যদি ফিদিয়াহ আদায় করার পর মৃত বরনের আগে সুস্থ হয়ে যায়,তাহলে আবার কাজা আদায় করতে হবে।