আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
95 views
in সালাত(Prayer) by (2 points)
1. ইমাম সাহেব যখন সূরা ফাতহা শেষ করে ভিন্ন সূরাতে চলে গেলেন, তখন নামাজে আমি শামিলা হলাম, যেহেতু তিনি সূরা পড়ছেন, আমি সানা পড়ব কখন?
2. ফরজ নামাজের তৃতীয় রাকাত থেকে মুসল্লিদের হুকুম কি? সে নি:শব্দে সূরা পড়বে? যদি আমি পড়িই, তখন দেখা যাচ্ছে, আমি কোন এক আয়াতের অর্ধেকে আসছি, এমতাবস্থায় ইমাম রুকুতে চলে গেছেন, তখন আমিও চলে যাব আয়াত শেষ না করে?
3. আমি যদি তৃতীয় বা চতুর্থ রাকাতে জামাত পাই, ইমাম সাহেবের নামাজ শেষের পরে, আমি কি প্রথম রাকাত থেকে যেভাবে নামাজ পড়ে অর্থাৎ সানা, তাতপর সূরা ফাতিহা, য়াতপর অন্য সূরা মিলিয়ে, রাকাত শেষ করব এবং পরবর্তী যত রাকাত মিস করেছি তা আদায় করব? কনফিউশান হয়েছে, এক বুজুর্গ ব্যক্তি বলেছেন উল্টো করে নামাজ আদায় করা, অর্থাৎ আগে তৃতীয়, তারপর দ্বিতীয় এভাবে।
4. কখন কখন সিজদাহ সাহু দিতে হয় এরকম কোন তালিকা প্রদান করলে উপকৃত হতাম।
5. যোহরের সালাত আদায়ের সময়ে, মসজিদে যেতে যেতে জামাত দাড়িয়ে গেলে, আগে তো অবশ্যই জামাত ধরব, প্রশ্ন হল, জামাতের পরে কি আগে দুই রাকাত সুন্নত আদায় করব নাকি আগে চার রাকাত সুন্নত যেটা ফরজের আগে আদায় করার কথা ছিল সেটা?
6. ফরজ নামাজ আদায়ের পড়ে আমলের কোন লিষ্ট থাকলে ভাল হয়, একবার কোন এক মসজিদে একটি তালিকা আমার নজরে আসে, ফরজের পড়ে, মাথায় হাত রেখে আস্তাগফিরুল্লাহ ৩ বার, তারপর আল্লাহু আকবার ৩ বার, আল্লাহুম্মা আন্তাস ছালাম ওয়া মিনকাস ছালাম ৩ বার, আয়াতুল কুরসি ১ বার, সুরা ইখলাস ১ বার (ফজর ও মাগরিবে ৩ বার), সুরা ফালাক ১ বার (ফজর ও মাগরিবে ৩ বার), সুরা নাস ১ বার (ফজর ও মাগরিবে ৩ বার), ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, ৩৩ বার সুবাহান আল্লাহ ৩৩, আল্লাহু আকবার ৩৪ বার। এভাবেই আমল করে আসছি, প্রশ্ন হল, এগুলোর কোন অথেন্টিক রেফারেন্স আছে প্লিজ? এবং সম্পূরক প্রশ্ন হল, যোহর, মাগরিব ও এশা তে তো ফরজের পড়ে আরও নামাজ আছে, সেক্ষেত্ত্রে উক্ত আমল গুলো কি সম্পূর্ণ নামাজ শেষে করা যাবে কিনা, নাক ফরজের পড়েই করতে হবে?
7. প্রস্রাবের ফোটা পড়লেই সেই স্থান নাপাক হয় বলে জানি, সেই স্থান ধুয়ে আবার উযু করে সালাত আদায় করতে হয় বলে জানি, কিন্তু আমার মনে হয় আমার প্রস্রাবের ফোটা শেষ হচ্ছেই না, এমনও হয়, প্রস্রাব শেষে উযুও করেছি, এরপর মনে হচ্ছে আরেকটু রয়ে গেছে, আবার বসেছি, কয়েক ফোটা এসেছেও, তারপর আবার উযু করে সালাতে গিয়েছি, এই অনুভুতি শেষ হয় না আমার, সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। ঠিক কতক্ষণ পড়ে আমি চলে যেতে পারি? বা বিধানটা কি আসলে।
8. বায়ু নির্গত হলে কি, নির্গতের স্থান ধৌত করে তারপর উযু নাকি শুধুই উযু করলে হবে?
9. কছরের সালাতের বিধান কি? আমি পড়তে চাই, আমি চাকরি সুত্রে ঢাকা থাকি, বাবা মা চট্টগ্রামে, আমি সেখানে বেড়াতে গেলে প্রায়ই বিমানে যাই, আলহামদুলিল্লাহ আমার যেহেতু শারিরীক কোন কষ্টই হয় না, আমি সম্পূর্ণ নামাজ আদায় করি, কিন্তু আমার বাবা, আলহামদুলিল্লাহ একদম শারিরীকভাবে বেশ সুস্থ, তিনি আমার বাসায় আসলে কছর আদায় করেন। একটু পরিষ্কার করে বললে উপকৃত হব।
10. জুমার নামাজ নিয়ে প্রায়শই মনে সন্দেহ আসে, আমাকে ক্রমটা বলে দিলে উপকৃত হব, মসজিদে গিয়েই চার রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ি, তারপর ফরজ, এবং শেষে আবার চার রাকাত সুন্নত পড়ি, এভাবেই পড়ে আসছি, কিন্তু মাঝে মাঝেই শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে,  ফরজের আগে নামাজ পড়ি না, বা ফরজের পড়ে সুন্নত দুই রাকাত পড়ি, আসল বিধানটা জানাবেন প্লিজ।
11. জুমার দিনে নবী (সা:) এর উপর দরুদ পড়তে হয়, এতদিন আমি নামাজে সাধারণত যেই দরুদ পড়ে, সেটাই পড়তাম, আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ...............ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ, কিন্তু সেদিন দেখলাম, আল্লাহুম্মা সাল্লি ওয়া সাল্লিম আলা নাব্যিয়িনা মুহাম্মদ পড়লেই আমার আমল হিয়ে যাবে এরকম লিখা আমি পেয়েছি, প্রশ্ন হল, অথেনটিক দরুদের কোন তালিকা আছে? যদি ছোট কোন দরুদ পড়লেই আমার আমল হচ্ছে, তাহলে তো এটা অনেকবার পড়া সহজতর।

1 Answer

0 votes
by (607,050 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
তাকবিরে বলে নামাজ শুরু করার পর ছানা পড়া সুন্নাত।

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ. تَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ. وَلاَ إِلهَ غَيْرُكَ

উচ্চারণঃ সুব‘হা-নাকাল্লা-হুম্মা, ওয়া বি‘হামদিকা, ওয়া তাবা-রাকাসমুকা, ওয়া তা‘আ-লা- জাদ্দুকা, ওয়া লা- ইলা-হা গাইরুকা।

অর্থঃ “আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, হে আল্লাহ, এবং আপনার প্রশংসাসহ। আর মহাবরকতময় আপনার নাম, মহা-উন্নত আপনার মর্যাদা। আর কোনো মা’বুদ নেই আপনি ছাড়া।”

আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) সালাত শুরু করে এই তাসবীহ পাঠ করতেন।

(সহীহ ইবনু খুযাইমাহ ১/২৩৯, মুসতাদরাক হাকিম ১/৩৬০, ৩৬১, ৬৪৫, সুনানুত তিরমিযী ২/১০, ১১, ৩৪৭, সুনানু আবী দাউদ ১/২০৬।)

আরো জানুনঃ- 

আল্লামা আলাউদ্দিন হাসক্বাফী রাহ বলেন,
(إلا إذا) شرع الإمام في القراءة سواء (كان مسبوقا) أو مدركا (و) سواء كان (إمامه يجهر بالقراءة) أو لا (ف) إنه (لا يأتي به) لما في النهر عن الصغرى: أدرك الإمام في القيام يثني ما لم يبدأ بالقراءة، وقيل في المخافتة يثني،
যখন ইমাম ক্বেরাত শুরু করে দিবেন,চায় মুক্তাদি মাসবুক হোক বা মুদরিক হোক বা ইমাম ক্বেরাতকে জোরে পড়ুক অথবা আস্তে পড়ুক,তখন মুক্তাদি ছানা পড়বে না।নাহর কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,মুক্তাদি ইমামকে ক্বিয়াম অবস্থায় পেলো,তখন ইমাম ক্বিরাত শুরু না করার পূর্ব পর্যন্ত মুক্তাদি ছানা পড়তে পারবে,কেউ কেউ বলেন-নিম্নস্বরের ক্বিরাত হলে ছানা পড়বে। (আদ্দুর্রুল মুখতার-১/৪৮৮,ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-২/১২২)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1980

ফরজ নামাজ চলাকালিন ইমাম সাহেব যখন সুরা ফাতেহা পাঠ করে কোনো কারন বশত নামাজে দেরি হলে তখন নামাজে শুরু করে আল্লাহ আকবর বলে নামায শুরু করা হবে।তখন ছানা পড়তে হবে না।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি ছানা পড়বেননা।

তবে আপনি যদি মাসবুক হোন,অর্থাৎ এক/কয়েক রাকাত নামাজ ছুটে গিয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে ইমামের সালাম ফিরানোর পর নিজের অবশিষ্ট নামাজ পূর্ণ করার জন্য দাঁড়িয়ে গিয়ে ছানা পড়বেন।

(০২)
মুক্তাদীরা এক্ষেত্রে পুরোপুরি চুপ থাকবে।
কোনো কিছুই পড়বেনা।

এটিই হানাফি মাযহাবের ফতোয়া। 

(০৩)
মাসবুক ব্যক্তি ইমাম সাহেব উভয় দিকে সালাম ফিরানোর পর দাঁড়িয়ে বাকি নামায আদায় করবে। 
এক্ষেত্রে সে একাকী নামায আদায়কারীর হুকুমে চলে যাবে। অর্থাৎ কোন কারণে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হলে সেজদায়ে সাহু দিতে হবে। নামায ভঙ্গের কারণ হলে, নামায ভেঙ্গে যাবে ইত্যাদি। 

আর কেরাতের ক্ষেত্রে প্রথম দিককার রাকাতের হুকুম আরোপিত হবে। অর্থাৎ যদি এক রাকাত না পায়, তাহলে দাঁড়িয়ে সানা পড়বে, তারপর ফাতিহা ও সূরা মিলাবে এভাবে বাকি নামায পূর্ণ করবে। আর যদি দুই রাকাত না পায়, তাহলে প্রথম রাকাতে, সানা, ফাতিহা, সূরা মিলিয়ে নিয়মমাফিক পূর্ণ করবে, তারপর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর সূরা মিলাবে। আর যদি তিন রাকাত না পায়, তাহলে প্রথমে দুই রাকাত পূর্বের মত পড়বে। আর তৃতীয় রাকাতে শুধু ফাতিহা পড়বে কিন্তু সুরা মিলাবে না।

মোটকথা, রাকাত হিসেবে প্রথম রাকাত আদায়কারীর মত নামায আদায় করবে। 

কিন্তু বৈঠক হিসেবে ধর্তব্য হবে শেষ। তথা এক রাকাত না পেলে, এক রাকাত পূর্ণ করেই শেষ বৈঠক আদায় করবে নিয়মমাফিক। আর দুই রাকাত না পেলে তা পূর্ণ করে শেষ বৈঠক আদায় করবে। এভাবে তিন রাকাত ও চার রাকাতের একই হুকুম।

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৫)
জামাতের পরে আগে দুই রাকাত সুন্নত আদায় করবেন। এরপর জোহরের ফরজের পূর্বের চার রাকাত সুন্নায় আদায় করবেন।

(০৬)
এক্ষেত্রে আয়াতুল কুরসি ও তিন কুল পড়ার কথা হাদীসে আছে।
ইহা ছাড়া প্রশ্নে উল্লেখিত অধিকাংশ আমলই বুযুর্গানে দ্বীনের বলে দেয়া আমল।
যাহা আবশ্যকীয় মনে না করে আদায় করতে পারেন।
তবে এটিকে দ্বীনের অংশ মনে করা যাবেনা।

(০৭)
আপনি নামাজের ওয়াক্তের শুরু হতে পেশাবের ফোটা বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। 
নামাজের ওয়াক্তের শেষ দিকেও যদি ফোটা আসা বন্ধ না হয়,সেক্ষেত্রে মা'যুর হিসেবে এই অবস্থাতেই নামাজ আদায় করবেন।

পরামর্শ থাকবে, আপনি মূলত নামাজের আগে পেশাব করবেননা।
নামাজের পরে পেশাব করবেন।

(০৮)
শুধু উযু করলেই হবে।

(০৯)
আপনার স্থায়ী বাসা কোনটা? ঢাকা নাকি চট্টগ্রাম? অর্থাৎ আপনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে আজীবন কোথায় থাকতে চান? ঢাকাতে? নাকি চট্টগ্রামে? 

যদি আপনার স্থায়ী বাসা ঢাকাতে হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে চট্টগ্রামে যাওয়া আসা এবং চট্টগ্রামে গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে সেখানে এবং যাতায়াত পথে আপনি কসরের নামাজ আদায় করবেন।

আর যদি আপনার স্থায়ী বাসা চট্টগ্রামে হয় সেক্ষেত্রে আপনি চট্টগ্রামে যাতায়াতপথে শুধুমাত্র কসরের নামাজ আদায় করবেন,তবে চট্টগ্রাম বাসায় যাওয়ার পর সেখানে পূর্ণ নামাজই আদায় করবেন।

এক্ষেত্রে আপনার বাবার মাসালাটিও ঠিক এমনই হবে অর্থাৎ আপনার বাবার স্থায়ী বাসা আসলে কোনটা? তার ভিত্তিতেই উপরের নিয়ম অনুপাতে মাসয়ালা হবে।

(১০)
আপনি যেভাবে নামাজ আদায় করছেন,সেটিই সঠিক,আলহামদুলিল্লাহ। 

তবে জুম'আর নামাজের পর চারা রাকাত সুন্নাত আদায় করে আরো ২ রাকাত সুন্নাত আদায় করার পরামর্শ থাকবে। 

(১১)
যেকোনো দরুদ পড়লেই হবে।
কোনো সমস্যা নেই।
,
তবে জুম'আর দিন আসরের নামাজের পর নিজ স্থান ত্যাগ না করে এক বিশেষ দরুদ শরীফ ৮০ বার পড়ার আমল রয়েছে।
যেটি আপনি প্রশ্নের শেষ দিকে উল্লেখ করেছেন।

উক্ত আমলটিও আপনি করতে পারেন।

আরো জানুনঃ-


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...