আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (70 points)
edited by
১) স্বামীকে যদি বলা হয়, তোমার সাথে আমি জান্নাতে থাকব না। অন্য  কাউকে নেব, তাহলে কি গুনাহ হবে? (স্ত্রী এটা অভিমান করে বলে)। স্বামী যদি ১ নাম্বারের কথা বলার কারণে কষ্ট পায় গুনাহ হবে? আর কষ্ট না পেলে গুনাহ হবে? স্বামীর প্রবল ইচ্ছা স্ত্রীর সাথে থাকবে।

২) যুহরের নামাজে, প্রবল বিশ্বাস ৩য় রাকাতে আছি তাই দুই সিজদাহর পর , উঠে দাঁড়িয়ে ৪র্থ রাকাতে বসি এবং অতঃপর মনে হয় সত্যিই কি পূর্বের রাকাত ৩য় রাকাত ছিল নাকি ২য় রাকাত? তাই ৪র্থ রাকাতে বসে আত্তাহিয়াতু পড়া শেষে আবার দাঁড়িয়ে ৫ম রাকাতে বসে আত্তাহিয়াতু লাস্টে দুই দিকে সালাম দিয়ে সাহু সিজদাহ দিই। আমার নামাজ কি হয়েছে?

৩) স্বামী হিদায়াতের পূর্বে অনেক মেয়েকে পছন্দ করতো এবং সেই কথা স্ত্রীকে বলেছে। এখন স্ত্রী যদি মাঝে মাঝেই ঐ মেয়েগুলোকে পূর্বে পছন্দ করার কারণে স্বামীকে বলে,  ঐ মেয়েকেই ভালোবাসো, কী পেয়েছিল্লা ওর মাঝে, এখনো  হেনতেন। যাদের পছন্দ করত তাদের নাম তুললে স্ত্রীর গুনাহ হবে?

৪) সূরা ইমরানে ও সূরা বাকারার কোনো ফজিলত আছে সহিহ হাদিসে বর্ণিত?

৫) সূরা নাবা এর ফজিলত কী?

৬) কেউ যদি বলে দ্বয়িফ হওয়া সত্ত্বেও ইয়াসিনকে যেভাবে প্রচার করা হয়, সূরা মুলক ও সূরা বাকারা, সূরা ইমরানের প্রচার সেভাবে করা হয়না। আর এভাবেই বিদ'আতের সূচনা হয়। তাহলে তাকে কী বলব?

৭) আমি একটা ফেসপ্যাক মুখে হাতে ইউস করি যা ২ মিনিট মুখে পানির সাথে মেখে রাখলে শুকিয়ে যায়। তো এটা আমি ৩০/৪০ মিনিট রাখি হাতে ফেসে। কিন্তু ওজু থাকা অবস্থায় এই ফেসপ্যাক মেখে নামাজ পড়া যাবে কি? অথবা কুরআন তিলওয়াত? আমার হাতের তালুতেও ভরে যায় এই ফেসপ্যাক, এবং তা শুকিয়ে যায় ১ মিনিটেই।  কিন্তু কোথাও ভরে না শুকনো আরকি একেবারেই । তো ওজু অবস্থায় সেই হাত দিয়ে আমি কুরআন স্পর্শ করতে পারব?(শুকনো তাই স্পর্শ  করলেও কিছু হয়না) আমার জানামতে এটাতে কোনো হারাম উপাদান নেই। ওয়াল্লাহু আলাম।

(আমি যেই ফেসপ্যাক ইউস করি সেটা হচ্ছে থানাকা ফেসপ্যাক। থানাকা (Thanaka) হলো একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা মায়ানমারের স্থানীয় গাছের ছাল থেকে তৈরি করা হয়। এটি মায়ানমারের জনগণের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। থানাকা ফেস প্যাকের মূল উপাদান হল থানাকা পাউডার, যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে খুবই কার্যকরী।)

1 Answer

0 votes
by (581,370 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রে স্ত্রীর গুনাহ হবে।

(০২)
মুগীরাহ্ বিন শু’বাহ্ (রাঃ)থেকে বর্ণিত।

وَعَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا قَامَ الْإِمَامُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ فَإِنْ ذَكَرَ قَبْلَ أَنْ يَسْتَوِي قَائِما فليجلس وَإِنِ اسْتَوَى قَائِمًا فَلَا يَجْلِسْ وَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيِ السَّهْو» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইমাম দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার পর (প্রথম বৈঠকে না বসে তৃতীয় রাক্’আতের জন্যে) উঠে গেলে যদি সোজা দাঁড়িয়ে যাবার পূর্বে মনে হয় তাহলে সে যেন বসে যায়। আর যদি সোজা দাঁড়িয়ে যায় তবে সে বসবে না (এবং শেষ বৈঠকে) দু’টি সাহু সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করবে। (মিশকাত-১০২০,আবূ দাঊদ ১০৩৬, ইবনু মাজাহ্ ১২০৮, ইরওয়া ৪০৮)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ফরয নামাযের শেষ রাকাতে বৈঠক না করে ভুলে দাঁড়িয়ে গেলে অতিরিক্ত রাকাতের সিজদা না করা পর্যন্ত স্মরণ হওয়ামাত্র বৈঠকে ফিরে আসবে এবং সাহু সিজদার মাধ্যমে নামায সম্পন্ন করবে।

কিন্তু অতিরিক্ত রাকাতের সিজদা করে ফেললে নামাযটি আর ফরয থাকবে না। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

৪ রাকআত বিশিষ্ট ফরজ নামাজে ৪র্থ রাকআতের তাশাহুদ পড়ে ভুলে দাড়িয়ে গেলে সেক্ষেত্রে সেজদার আগে মনে পড়লে সেজদাহ না করে বৈঠকে গিয়ে সেজদায়ে সাহু আদায় করে নামাজ শেষ করে দিতে হবে।

৫ম রাকাতের সেজদাহ করে থাকলে সেক্ষেত্রে 
৬ষ্ঠ রাকাতও আদায় করে নিবে।
এক্ষেত্রে ফরজ নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
আর দুই রাকাত নফল হবে।
ফরজ নামাজটি আর আদায় করতে হবেনা।

হ্যাঁ যদি ৪র্থ রাকআতে বৈঠক না করেই দাঁড়িয়ে যায়,সেক্ষেত্রে তার নামাজের ফরজিয়্যাত বাতিল হয়ে যাবে।

পুনরায় ফরজ নামাজ আদায় করতে হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যেহেতু ৪র্থ রাকাতে বৈঠক করেছিলেন,সুতরাং আপনার ফরজ নামাজ আদায় হয়ে গিয়েছে।

ফরজ নামাজটি পুনরায় আদায় করতে হবেনা।

(০৩)
মানবিক কারণে এ জাতীয় কথা স্ত্রীরা বলে থাকে। তবে স্বামীর খালেস দিলে তওবা করে হেদায়াতের পথে ফিরে আসার পর এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করা এবং এতে যদি স্বামী কষ্ট পায় সেক্ষেত্রে বারবার এ ধরনের কথা বলা কোনভাবেই সমীচিন নয়।

(০৪)
এ দুটি সুরা কিয়ামতের কঠিন দিনে সুপারিশ করতে উপস্থিত হবে। 

আবু উমামা বাহিলি (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা কোরআন তিলাওয়াত করবে। কেননা কিয়ামতের দিন তা তিলাওয়াতকারীর জন্য শাফায়াতকারী হিসেবে উপস্থিত হবে। তোমরা দুটি সমুজ্জ্বল সুরা বাকারা ও আলে ইমরান তিলাওয়াত করবে। কেননা এ দুটি কিয়ামতের দিনে উপস্থিত হবে, যেন দুটি মেঘখণ্ড কিংবা দুটি ছায়াদানকারী কিংবা যেন দুটি ডানা বিস্তারকারী পাখির ঝাঁক, যারা তাদের তিলাওয়াতকারীদের পক্ষে সাহায্যকারী হবে। তোমরা সুরা বাকারা তিলাওয়াত করবে। কেননা তা তিলাওয়াত করায় বরকত রয়েছে এবং তা বর্জন করা আফসোসের। কারণ বাতিলপন্থীরা (জাদুকররা) তার সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারবে না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৭৪৭)

নাওয়াস ইবনে সামআন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, কোরআন ও আহলে কোরআন যারা দুনিয়ায় তা অনুসারে আমল করেছে, সেই কোরআনপন্থীরা (কিয়ামতের দিন) আসবে এমন অবস্থায় যে তাদের আগে আগে থাকবে সুরা বাকারা ও আলে ইমরান। এরা উভয়েই তাদের ধারকদের পক্ষে (আল্লাহর দরবারে) বিতর্ক করবে। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৮৮৩)

(০৫)
সুরা নাবার ফজিলত সম্পর্কে একটি দুর্বল হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সুরা নাবা পাঠ করবে আল্লাহ তাকে কিয়ামতের দিন ঠাণ্ডা পানীয় দ্বারা তৃপ্ত করবেন।’ (তাফসিরে কাশশাফ : ৬/৩০৩)

(০৬)
আপনি নিজের মত আমল চালিয়ে যাবেন। এবং সূরা বাকারা সূরা আল ইমরানের যেহেতু ফজিলত অনেক,সুতরাং উক্ত দুটি সূরার আমলেও আপনি করার চেষ্টা করবেন।

বিজ্ঞ মুহাদ্দীসিনের কেরাম ও ফুকাহায়ে কেরামদের মতে ফাজায়েলের ক্ষেত্রে জয়ীফ হাদীসের উপর আমল করা যাবে।
এটিকে বিদ'আত বলার অবকাশ নেই।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৭)
প্রশ্নের বিবরন মতে ওজু থাকা অবস্থায় এই ফেসপ্যাক মেখে নামাজ পড়া যাবে, কুরআন তিলাওয়াত করা যাবে,কুরআন স্পর্শ করা যাবে। কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...