আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
97 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (6 points)
আমার স্ত্রী মাঝে মাঝে আমি শুয়ে থাকলে পায়ের পাতা, নখ ইত্যাদিতে চুম্বন করে। এটা আমার প্রতি তার ভালো লাগা ও মোহাব্বত থেকেই করে। আমিও এটাকে উপভোগ করি। কিন্তু অহংকার করিনা।

একদিন সেও শুয়ে থাকা অবস্থায় সে যেরকম চুম্বন করত আমাকেও একইভাবে করতে বলে। এতে আমি অসম্মতি জানালে সে মন খারাপ করে।

( আমি একটা উদাহরণ দিয়েছিলাম হাদীসের সারমর্মেঃ অনুমতি থাকলে স্ত্রীর স্বামীকে সেজদার বিধান থাকত। কিন্তু স্বামীর বেলায় এরকম কিছু ইংগিত নেই যেটা সমানে সমান। এটা শোনার পর সে আরও মন খারাপ করে, কিছুক্ষণ বুঝিয়েছি সবসময় সব কিছু সমানে সমান হয়না। মান মর্যাদা, অধিকার, সম্মান এমনকি ইগোর বিষয়টা সমান হয়না। একেক বিষয় কারও বেলায় কম কারও বেলায় বেশি আবার সমানও হয়।)

তবে হক আদায়, মর্যাদা প্রদানে এবং সম্মান দিয়ে চলার বিষয় সে আমার অবদানকে স্বীকার করবে, শুধু উক্ত বিষয়ে সে ধরে নিয়েছে আমি ইগোকে প্রাধান্য দিয়েছি।

জানার বিষয় হলো
স্ত্রীর জন্য স্বামীর পায়ে এভাবে চুম্বন জায়েজ কিনা?

স্ত্রীও যদি স্বামীর থেকে এভাবে চুম্বন প্রত্যাশা করে আর এতে স্বামী অসম্মতি জানালে কোন দোষনীয় হবে কিনা বা এখানে ইগোবোধ যুক্তিযুক্ত কিনা?
by (6 points)
উত্তরের অপেক্ষায় আছি।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মা-বাবা বা কোন নেককার বুজুর্গের হাত-পা ও কপালে বরকতের নিয়তে চুমা দেওয়াকে অধিকাংশ  ফুকাহায়ে কেরাম জায়েয মনে করেন।তবে মাথা নূয়ে পায়ে চুমা দেওয়া সম্পর্কে ফুকাহাদের মধ্যে মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।অধিকাংশের মতে বৈধ রয়েছে।কিন্তু পায়ে ধরে শশুড়-শাশুড়ি কে সালাম বা সম্মান প্রদর্শনকে কেউ -ই বৈধ মনে করেন না।(জাওয়াহিরুল ফিকহ,১/২০০)
.
আর পায়ে চুম্বনের বিষয়ে  
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 52492 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে

ইলম এবং বুযুর্গীর কারনে হাত পায়ে চুমো দেওয়া জায়েজ আছে,তবে সেজদার ছুরত হয়ে গেলে তাহা নাজায়েজ। 
তবে সতর্কতা মূলক তাদেরও কদমবুচি না করা উচিত। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

دَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى بْنُ الطَّبَّاعِ، حَدَّثَنَا مَطَرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْأَعْنَقُ، حَدَّثَتْنِي أُمُّ أَبَانَ بِنْتُ الْوَازِعِ بْنِ زَارِعٍ، عَنْ جِدِّهَا، زَارِعٍ وَكَانَ فِي وَفْدِ عَبْدِ الْقَيْسِ قَالَ: لَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ فَجَعَلْنَا نَتَبَادَرُ مِنْ رَوَاحِلِنَا، فَنُقَبِّلُ يَدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرِجْلَهُ 

উম্মু আবান বিনতু ওয়াযি ইবনু যারি (রহঃ) থেকে তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি (দাদা) আব্দুল কাইসের প্রতিনিধি দলের একজন ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা মদীনায় এসে আমাদের আরোহী থেকে দ্রুত নেমে এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে ও পায়ে চুমু দিলাম।
(আবু দাউদ ৫২২৫)


حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي زِيَادٍ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِي لَيْلَى، حَدَّثَهُ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، حَدَّثَهُ وَذَكَرَ، قِصَّةً قَالَ: فَدَنَوْنَا يَعْنِي مِنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَبَّلْنَا يَدَهُ 

আব্দুর রাহমান ইবনু আবূ লাইলাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) তার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। অতঃপর পুরো ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটবর্তী হয়ে তাঁর হাতে চুমু দিলাম।
(আবু দাউদ ৫২২৩,ইবনু মাজাহ)

আদাবুল মুফরাদ গ্রন্থে এসেছেঃ
  
975 – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ قَالَ: حَدَّثَنَا مَطَرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْأَعْنَقُ قَالَ: حَدَّثَتْنِي امْرَأَةٌ مِنْ صَبَاحِ عَبْدِ الْقَيْسِ يُقَالُ لَهَا: أُمُّ أَبَانَ ابْنَةُ الْوَازِعِ، عَنْ جَدِّهَا، أَنَّ جَدَّهَا الْزَّارِعَ بْنَ عَامِرٍ قَالَ: قَدِمْنَا فَقِيلَ: ذَاكَ رَسُولُ اللَّهِ، فَأَخَذْنَا بِيَدَيْهِ وَرِجْلَيْهِ نُقَبِّلُهَا

[قال الشيخ الألباني] :  ضعيف الإسناد

ইমাম বুখারী রহঃ এর কাছে মুসা বিন ইসমাঈল বলেন, তার কাছে মাতার বিন আব্দুর রহমান আলআনাক বলেছেন, তার কাছে উম্মে আবান বলেছেন, তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেছেন, তার দাদা ওয়াযি বিন আমির বলেন, আমি একদা রাসূল সাঃ এর খেদমতে গিয়া হাজির হলাম। আমাকে বলা হল ইনিই হচ্ছেন আল্লাহর রাসূল। আমরা তখন তাঁর হস্তদয় ও পদদ্বয় ধরিয়া চুমু খেলাম। {আলআদাবুল মুফরাদ, ইসলামী ফাউন্ডেশন অনুবাদের হাদীস নং-৯৮৭, আরবী কিতাবের হাদীস নং-৯৭৫}
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,   
কদমবুচি সংক্রান্ত মাসআলাটি নিয়ে বিজ্ঞ ফুক্বাহায়ে কেরাম এবং মুহাদ্দিসীনে কেরামের মাঝে মতভেদ রয়েছে।

একদল বলেছেন সম্মানার্থে জায়েজ আছে পদচুম্বন করা। কিন্তু তারা সাথে সাথে এ শর্তারোপ করেছেন যে, যেন চুমু খেতে গিয়ে রুকুর সূরত বা সেজদার সূরত না হয়ে যায়। যদি রুকু বা সেজদার সূরত হয়ে যায়, তাহলে তা জায়েজ হবে না। {আলমুজতাবা-৪/২০৫, আলমুহীতুল বুরহানী-৮/১১৮, ফাতাওয়া আলমগীরী-৫/৩৬৯}

আরেক দল ফক্বীহ ও মুহাক্কিকীনদের মতে তা জায়েজ নয়। কারণ বর্তমান প্রচলিত কদমবুচিতে রুকুর হালাত এবং সেজদার হালাত হওয়া স্পষ্ট। সেই সাথে এটি বিধর্মীদের প্রতীক। তাই তা হারাম।

আমরা বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় মতটিকেই প্রাধান্য দিয়েছি। কারণ কদমবুচি করা এ উপমহাদেশে মৌলিকভাবে হিন্দুদের রুসুম। আর কদমবুচি করতে গিয়ে রুকু বা সেজদার হালাত তৈরী হয়েই যায়। আর যারাও কদমবুচিকে জায়েজ বলেছেন তাদের মতেও রুকু সেজদার হালাত হয়ে গেলে কদমবুচি করা জায়েজ নয়।

উপরোক্ত কারনে বর্তমান প্রচলিত কদমবুচিকে নাজায়েজ বলা হয়।

★সুতরাং সতর্কতামূলক আমরা বলবো যে কদমবুচি করা যাবেনা।   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্ত্রী যদি মাথা নিচু না করে আপনার কদমবুচি তথা পায়ে চুম্বন (হাত দিয়ে পা স্পর্শ করে হাত চুম্বন) করে হয়,তাহলে তাহা নাজায়েজ নয়।
তারপরেও সতর্কতামূলক আমরা বলবো যে কদমবুচি করা যাবেনা।

তবে মাথা নিচু করে পা চুম্বন করা নাজায়েজ।

বিস্তারিত জানুনঃ 

★স্ত্রীও যদি স্বামীর থেকে এভাবে চুম্বন প্রত্যাশা করে, আর এতে স্বামী অসম্মতি জানালে কোন দোষনীয় হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...