আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,786 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (45 points)

1) অহংকার আল্লাহর চাদর এটা নিয়ে টানাটানি   করবে নাএখানে আসলে কি বুঝানো হচ্ছে ?

 

2) নবী মোহাম্মদ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম   তিনি শুধু  মানুষের জন্যই নয় জিনদের জন্য তাতে প্রেরণ করা হয়েছে  এটা কিভাবে প্রমানিত হয়পূর্ববর্তী যত নবী রাসুল এসেছেন তারাও কি মানুষের পাশাপাশি জিনদের জন্য এসেছিলেন ?

 

3) জিন মানুষের কোন সময় ক্ষতি করতে পারেএবং কোনদিন কোন মানুষের সংস্পর্শে আসলে কিভাবে বোঝা যায় যে সে একজন মুসলিম নাকি খারাপ  জিন

1 Answer

+1 vote
by (589,230 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আবু সাঈদ আল খুদরী ও আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।
 عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَأَبِي هُرَيْرَةَ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:  الْعِزُّ إِزَارُهُ، وَالْكِبْرِيَاءُ رِدَاؤُهُ، فَمَنْ يُنَازِعُنِي عَذَّبْتُهُ 
 তারা উভয়ে বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইজ্জত ও সম্মান আল্লাহর ভূষণ এবং গর্ব ও অহংকার তার চাদর। যে লোক এ ক্ষেত্রে আমার সাথে টানা-হেঁচড়া করবে আমি তাকে অবশ্যই সাজা দিব।(সহীহ মুসলিম-২৬২০,ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৪৪১, ইসলামিক সেন্টার ৬৪৯২)

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত।
 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ:   الْكِبْرِيَاءُ رِدَائِي، وَالْعَظَمَةُ إِزَارِي ، فَمَنْ نَازَعَنِي وَاحِدًا مِنْهُمَا، قَذَفْتُهُ فِي النَّارِ   .
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, অহংকার হলো আমার চাঁদর এবং মহত্ব হলো আমার লুঙ্গি। যে কেউ এর কোনো একটি নিয়ে আমার সাথে ঝগড়া করবে, আমি তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবো।(সুনানে আবু-দাউদ-৪০৯০)

আল্লাহর সিফাত হল, উজ্জত,অহংকার,বড়ত্ব ইত্যাদি।এখানে লুঙ্গি ও চাদর দ্বারা সিফাত উদ্দেশ্য নয়,বরং উদ্দেশ্য হল,আল্লাহ তা’আলা উক্ত অহংকার ও বড়ত্ব সিফাত দ্বারা গুণান্বিত।এ সিফাত দ্বয়ের ব্যাপারে আল্লাহর সাথে কেউ শরীক হতে পারে না।যেমন চাদর ও লুঙ্গি পরিধান কারীর সাথে খাস থাকে,ঠিকতেমনি উক্ত সিফাতদ্বয় আল্লাহর সাথে খাস।এ ব্যাপারে কেউ আল্লাহর সাথে শরীক হতে পারবে না।

অহংকার আল্লাহর দ্বীদার থেকে বাঁধা প্রদান করে থাকে,যেমন চাদর তার দ্বারা লোকানো স্থানকে প্রদর্শিত হতে বাঁধা প্রদান করে।

 আবদুল্লাহ ইবনু কায়স (রাযিঃ) বলেন যে, 
عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:   جَنَّتَانِ مِنْ فِضَّةٍ آنِيَتُهُمَا، وَمَا فِيهِمَا، وَجَنَّتَانِ مِنْ ذَهَبٍ آنِيَتُهُمَا، وَمَا فِيهِمَا، وَمَا بَيْنَ الْقَوْمِ وَبَيْنَ أَنْ يَنْظُرُوا إِلَى رَبِّهِمْ ، إِلَّا رِدَاءُ الْكِبْرِيَاءِ عَلَى وَجْهِهِ فِي جَنَّةِ عَدْنٍ 
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, দু'টি জান্নাত এমন যে, এগুলোর বাসনপত্র ও সমুদয় সামগ্রী রূপার তৈরি। অন্য দুটি জান্নাত এমন, যেগুলোর পাত্রাদি ও সমুদয় সামগ্ৰী স্বর্ণের তৈরি। 'আদন নামক জান্নাতে জান্নাতীগণ আল্লাহর দর্শন লাভ করবেন। এ সময় তাদের ও আল্লাহর মাঝে তার মহিমার চাঁদর ব্যতীত আর কোন অন্তরায় থাকবে না।(সহীহ মুসলিম-১৮০,ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫ ইসলামিক সেন্টারঃ ৩৫৬)

আল্লাহ তা’আলার  চাদর ও লুঙ্গি দ্বারা এটাই মূলত উদ্দেশ্য।এটা কখনো উদ্দেশ্য হতে পারেনা যে,আল্লাহ তা’আলার চাদর ও লুঙ্গি রয়েছে।

ইমাম খাত্তাবী রাহ বলেন,
معنى هذا الكلام أن الكبرياء والعظمة صفتان لله سبحانه ، اختص بهما ، لا يشركه أحد فيهما ، ولا ينبغي لمخلوق أن يتعاطاهما، لأن صفة المخلوق التواضع والتذلل . وضرب الرداء والإزار مثلاً في ذلك ؛ يقول - والله أعلم - : كما لا يشرك الإنسانَ في ردائه وإزاره أحدٌ ؛ فكذلك لا يشركني في الكبرياء والعظمة مخلوق . والله أعلم
অহংকার ও বড়ত্ব মূলত আল্লাহ তা'আলার সিফাত।এগুলো আল্লাহর সাথে খাস।এতে অন্য কেউ শরীক হতে পারবে না।এবং কোনো মাখলুকের জন্য উচিৎ নয়,এ সিফাত গুলির নিজের মধ্যে নিয়ে আসা।কেননা মাখলুকের জন্য কাম্য হল,বিনয় ও নম্রতা।লুঙ্গি ও চাদর দ্বারা দৃষ্টান্ত দিয়ে আল্লাহ তা'আলা এটাই বুঝাতে চাইছেন যে,যেভাবে একজন মাখলুকের জন্য উচিৎ নয়,নিজ লুঙ্গি বা চাদরে ভিন্ন কাউকে শরীক করা,ঠিকতেমনি কোনো মাখলুকের জন্য উচিৎ নয়,অহংকার ও বড়ত্বে আল্লাহর সাথে শরীক করা।
(মা'লিমুস সুনান-৪/১৯৬)


(২)
(আতাউর রহমান খসরু এর লিখা থেকে সংগৃহিত)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও জিনদের মধ্যে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। কোরআন ও হাদিসের একাধিক বর্ণনা থেকে জিনদের সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর সাক্ষাৎ প্রমাণিত হয়। হাদিসের বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, রাসুল (সা.) জিন জাতির কাছে একাধিকবার দ্বিনের দাওয়াত নিয়ে যান এবং তাঁর হাতে জিনদের এক ও একাধিক দল ইসলামও গ্রহণ করে। পবিত্র কোরআনে ‘জিন’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা রয়েছে। যার শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘বলুন! আমার প্রতি ওহি অবতীর্ণ হয়েছে, জিনদের একটি দল মনোযোগ দিয়ে (কোরআন) শ্রবণ করেছে এবং বলেছে, আমরা এক বিস্ময়কর কোরআন শ্রবণ করেছি, যা সঠিক পথের নির্দেশ করে। ফলে আমরা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা আমাদের প্রতিপালকের সঙ্গে কাউকে শরিক করব না।’ (সুরা: জিন, আয়াত : ১-২)
সুরা আহকাফেও এমন একটি ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়। যেখানে স্বজাতির মধ্যে জিনদের ইসলাম প্রচারের বিবরণও এসেছে।  ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো! যখন আমি তোমার প্রতি জিনদের একটি দলকে আকৃষ্ট করেছিলাম, যারা কোরআন পাঠ শুনেছিল। যখন তারা তার নিকট পৌঁছাল, তখন তারা বলল, চুপ করে শোনো। কোরআন পাঠ শেষে তারা নিজ সম্প্রদায়ের কাছে সতর্ককারী হিসেবে ফিরে গেল। ...হে আমাদের সম্প্রদায়, আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করো। আল্লাহ তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন এবং তোমাদের মর্মন্তুদ শাস্তি থেকে রক্ষা করবেন।’ (সুরা : আহকাফ, আয়াত : ২৯-৩১)

আল্লামা ইবনে ইসহাকের সূত্রে আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) এ ঘটনাকে হিজরতের পূর্বে বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তায়েফ থেকে ফেরার পথে এক উপত্যকায় নামাজ আদায় করছিলেন। তখন জিনদের একটি দল তাঁর কোরআন তিলাওয়াত শুনে থেমে যায় এবং রাসুল (সা.)-এর ঈমানের ঘোষণা দেয়। সম্ভবত তায়েফবাসীর আচরণে তিনি যে ব্যথা পেয়েছিলেন, তার সান্ত্বনাস্বরূপ আল্লাহ তাঁর প্রতি জিনদের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেন। আল্লামা ইবনে ইসহাক ও ইবনে সাদের মতে, সেই দলে দুই গোত্রের ৭০ থেকে ৯০ জন জিন উপস্থিত ছিল।

রাসুল (সা.) যেভাবে জিনদের ভেতর দাওয়াত দেন
ড. খালেদ বিন উসমান আস-সাবত বলেন, রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে জিনদের ছয়টি পৃথক সাক্ষাতের বর্ণনা পাওয়া যায়। যার মধ্যে দুইবার মক্কায়, তিনবার মদিনায় এবং একবার মদিনার বাইরে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। কখনো তিনি একা ছিলেন আবার কখনো তাঁর সঙ্গে সাহাবিদের কেউ উপস্থিত ছিলেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো কখনো নিজে তাদের কাছে দ্বিনের দাওয়াত নিয়ে যেতেন আবার কখনো কখনো জিনরাও তাঁর কাছে আসত। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদিসে বলা হয়েছে, মক্কায় অবস্থানকালে একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমাদের ভেতর কেউ যদি জিন বিষয়ে আগ্রহী হও, তবে আমার অনুসরণ করো। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি ছাড়া আর কেউ অগ্রসর হলো না। তিনি বলেন, আমরা চলতে চলতে মক্কার একটি উঁচু স্থানে পৌঁছালাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) পা দিয়ে একটি বৃত্ত এঁকে আমাকে তার ভেতর অবস্থান করার নির্দেশ দেন। তিনি এগিয়ে গেলেন এবং দাঁড়িয়ে কোরআন খুললেন। এমন সময় অন্ধকারে চারদিক ছেয়ে গেল। রাসুল (সা.) আমার আড়াল হয়ে গেলেন। আমি তাঁর আওয়াজ শুনতে পেলাম। এরপর অন্ধকার মেঘমালার মতো খণ্ডবিখণ্ড হয়ে গেল এবং তার একটি দল অবশিষ্ট থাকল। রাসুল (সা.) তাদের সঙ্গে ফজর পর্যন্ত অতিবাহিত করেন। (মাউসুয়াতুল হাফেজ ইবনে হাজার আল হাদিসিয়্যা : ৪/৬০০)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত অপর হাদিসে পাওয়া যায়, এক রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে না পেয়ে সাহাবায়ে কেরাম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তিনি ফিরে এসে বলেন, ‘আমার কাছে একদল জিন এসেছিল। আমি তাদের সঙ্গে যাই এবং তাদের সম্মুখে কোরআন তিলাওয়াত করি।’ অতঃপর নবী (সা.) আমাদের নিয়ে যান। আমাদেরকে তাদের চিহ্ন ও তাদের আগুনের চিহ্ন দেখান। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৫০)

জীন জাতির মধ্যে নবী-রাসুল প্রেরিত হওয়ার সপক্ষে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-
অর্থ-"হে জীন ও মানব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্য থেকে কি রাসুলগণ তোমাদের কাছে আসেনি, যারা আমার নিদর্শন তোমাদের কাছে বর্ণনা করতো ও তোমাদের এ দিনের ব্যাপারে সতর্ক করতো ?" (সূরা- আনআম, আয়াত- ১৩০) ।
আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা জীন ও মানব উভয় সম্প্রদায়কে সম্বোধন করে বলেছেন- তোমাদের মধ্য থেকে আমার পয়গম্বর কি তোমাদের কাছে পৌঁছেনি? এতে বোঝা যায় যে, মানবজাতির পয়গম্বররূপে যেমন মানব প্রেরিত হয়েছেন, তেমনি মানব সৃষ্টির পূর্বে জীনজাতির পয়গম্বররূপে জীন প্রেরিত হয়েছেন ।
কিছু সংখ্যক তাফসীরকারকের মতে- মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ)-এর আগমনের পূর্বে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের নবী সে সম্প্রদায় থেকে প্রেরিত হতেন । মানব সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গোত্রের জন্য যেমন মানব নবী তদ্রূপ জীন জাতির বিভিন্ন গোত্রের জন্য জীন নবী আগমন করতেন । কেননা, পৃথিবীতে মানব সৃষ্টির হাজার হাজার বছর পূর্বে জীন জাতির অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল । তাহলে তাদের মধ্যে নবী-রাসুল না থাকলে তারা কিভাবে হেদায়েত লাভ করতো?
বিখ্যাত তাফসীরবিদ কাজি সানাউল্লাহ্ পানিপথী (রহঃ) তাফসীরে মাযহারীতে বলেছেন, ভারতবর্ষের হিন্দুরা তাদের বেদের ইতিহাস হাজার হাজার বছরের পুরনো বলে উল্লেখ করে এবং তাদের অনুসৃত অবতারকে সে যুগেরই লোক বলে উল্লেখ করে । এটা অসম্ভব নয় যে, তারা এ জীন জাতিরই পয়গম্বর ছিলেন এবং তাদেরই আনীত নির্দেশাবলী পুস্তকাকারে সন্নিবেশিত করা হয়েছে । হিন্দু সম্প্রদায়ের অবতারদের যে সব চিত্র ও মূর্তি পাওয়া যায়, সেগুলির দেহাকৃতিও অনেকটা এমনি ধরণের । কারো অনেকগুলো মুখমণ্ডল, অনেক হাত পা, কারো হাতির মত শুঁড় । এগুলো সাধারণ মানবাকৃতি থেকে ভিন্ন । জীনের পক্ষে এহেন আকৃতি ধারণ মোটেও অসম্ভব নয় । তাই এটা সম্ভব যে, তারা জাতির রাসুল কিংবা তাদের প্রতিনিধি ছিলেন এবং এ সকল প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ তাদের নির্দেশাবলীর সমষ্টি ছিল । এরপর আস্তে আস্তে অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের ন্যায় একেও পরিবর্তিত করে তাতে শিরক ও মূর্তিপূজার অনুপ্রবেশ ঘটেছে । (তাফসীরে মারেফুল কুরআন, ৩য় খণ্ড, ৫১৩ পৃঃ) ।
মানব ও জীনদের মধ্যে রাসুল প্রেরণ করা আল্লাহ্ তায়ালার ন্যায় বিচার ও অনুগ্রহের প্রতীক । তিনি কোন জাতির প্রতি এমনিতেই শাস্তি প্রেরণ করেন না, যে পর্যন্ত না তাদেরকে পূর্বাহ্ণে পয়গম্বরদের মাধ্যমে জাগ্রত (সতর্ক) করা হয় এবং তাদের নিকট হেদায়েতের আলো প্রেরণ করা হয় । (তাফসীরে মারেফুল কুরআন, ৩য় খণ্ড, ৫১৪ পৃঃ) ।
কোন কোন পণ্ডিতের মতে- হযরত আদম (আঃ)-কে দুনিয়ায় প্রেরণের পর থেকে একমাত্র মানব জাতির মধ্য থেকেই নবী-রাসুল প্রেরিত হয়েছেন । জীন জাতির মধ্যে কেউ প্রত্যক্ষভাবে রাসুল হননি এবং মানবকুলে প্রেরিত রাসুলের বাণী স্বজাতির কাছে পৌঁছানর জন্য জীনদের মধ্য থেকে কাউকে না কাউকে নিযুক্ত করা হয়েছে । তারা প্রকৃতপক্ষে মানবকুলে প্রেরিত রাসুলের বার্তাবাহক ছিল ।
এরূপ বার্তাবাহক হিসেবে জীন ক কর্তৃক আল্লাহ্র বাণী রাসুল (সঃ)-এর নিকট থেকে শ্রবন করে স্বজাতির কাছে পৌঁছানোর ঘটনা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ আছে- "জীনেরা হযরত রাসুল (সঃ)-এর বাণী এবং কুরআন শ্রবণ করে স্বজাতির কাছে পৌঁছিয়েছে।" রাসুল (সঃ)-ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও শেষ নবী । মানুষের মত জীন সম্প্রদায়ও কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর উম্মতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে মুক্তি লাভ করবে ।(শেষ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
পূর্ববর্তী নবী কি জ্বীনদেরকে দাওয়াত দিয়েছিলেন,এসম্পর্কে কুরআন হাদীসে কোনো বক্তব্য স্পষ্ট পাওয়া যাচ্ছে না।

(৩)
মানুষ যখন অপবিত্র অবস্থায় দু'আ দুরুদ ব্যতীত তার চলার পথে ব্যত্যয় ঘটায়,তখনই জ্বীন মানুষের 
ক্ষতি করার চেষ্টা করে।

সে মুসলিম কি অমুসলিম? তা বুঝতে হলে কোনো মুদাব্বির দ্বারা তাকে কথা বলাতে হবে।সে নিজেই বলে দেবে যে মুসলমান না অমুসলমান।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 267 views
...