আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
edited by
অনলাইনে আমল নিয়ে এখন অনেক প্রতিযোগিতা হয়। অনেকেই লাভবান হন।আমলে অভ্যস্তততা আসে।প্রথমে রিয়ার ওয়াসওয়াসা বা কোর্সের চাপেই আমল করা হলেও পরবর্তীতে সেই কোর্স শেষ হয়ে গেলেও আমলের ধারাবাহিকতা চলে আলহামদুলিল্লাহ। ইতিমধ্যেই দুরুদ প্রতিযোগিতা নিয়ে কাফেলা শুরু হয়েছে।কোটিবার দুরুদ পড়ে কোটিপতি দুরুদওয়ালী হওয়া।উদ্দেশ্য সবাই যাতে নবীপ্রেমী হয়,দুরুদ পড়ে বেশি বেশি।আলহামদুলিল্লাহ খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে এইখানে ১৫দিনে টোটাল  ১৫হাজারবার দুরুদ পড়তে হবে।একদিনে কয়েক ধরনের দুরুদ পড়তে হয় আর একেক সময় একেক সংখ্যকবার  দুরুদ পড়তে হয়। ১৫দিনে ১৫হাজার পড়া শেষ করতে হবে।এইক্ষেত্রে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অনেকেই পূর্বের তুলনায় দুরুদে নিজের জিহবা সিক্ত রাখছে।যারা হয়তো পূর্বেও এতো দুরুদ পড়েনায়।তারা এখন বেশি বেশি দুরুদ পড়তে অভ্যস্ত হচ্ছে।তবে সবার মাঝে নিয়ত কেমন জানা নেই।রিয়ার ভাব আসতেই পারে।তবে আমার বুঝামতে আমলের প্রথমে রিয়ার ভাব আসবেই।পরে আমলে পরিণতি হলে রিয়া থাকবে নাকি জানা নেই।আবার অনেকেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য ১৫হাজার বার দুরুদ কমপ্লিট করছেন।অর্থাৎ দুরুদের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য টাস্ক কমপ্লিট করছেন।ভালো কাজে প্রতিযোগিতা করা যায় জানি।কিন্তু বুঝতেছি না এই ধরনের প্রতিযোগিতা কল্যাণকর কিনা।এক প্রিয় বোন পোস্ট লিখেছেন এভাবে দুরুদ প্রতিযোগিতা করলে নিয়ত ঠিক থাকেনা।ইখলাসের সহিত দুরুদ পড়া উচিত।উনার কথাও ঠিক।তবে আমার ভয় হচ্ছে যদি পোস্ট টা পড়ে কেউ এরকম আমলী প্রতিযোগিতা থেকে মাহরুম হয়ে গেলে?বা কেউ এই অভ্যস্ততায় না আসলে যে দিনে বেশি বেশি দুরুদ ও পড়া যায়?সবসময় অবশ্য মনযোগ থাকেওনা।এইক্ষেত্রে যতবারই পড়ব ততবার কি মনোযোগ ধরে রাখা বাধ্যতামূলক?নিচে উনার পোস্ট টা দেওয়া হলো(গীবতের উদ্দেশ্যে না ফিকির থেকেই পোস্ট টা দিচ্ছি এবং ফতোয়া জানতে চাচ্ছি)।দুইটার মধ্যে কোনটা সঠিক বুঝতে পারছিনা।অর্থাৎ এভাবে প্রতিযোগিতার আয়োজন কি করা যায় নাকি নিমোক্ত পোস্টের লিখাটাই ঠিক?(পোস্ট কপি করা, বোনটার সম্মানের জন্য এইখানে নাম উল্লেখ করিনি)

"দুরুদের প্রতিযোগিতায় আসলেই কি ইখলাস ধরে রাখা যায়?"

ইদানীং দুরুদের প্রতিযোগিতার আয়োজন দেখি বেশি।কোথাও কোথাও দিনে পাঁচ হাজার বার দুরুদ পড়তে হবে সেই কথাও দেখি। অবশ্যই বেশি বেশি দুরূদ পড়ার ফজিলত অস্বীকার করার মতো না। অবশ্যই জীবনে দুরুদের আমল যে যতবেশি করে তার জন্য তত বেশি বরকত, রহমত, নাজাত আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আপনার আমার মতো আর পাঁচটা সাধারণ মুসলিমের জন্য এইসব প্রতিযোগিতা কতখানি উপকারী তা নিয়ে সন্দেহ হয়।

একটা মানুষ যে ধরা যাক দিনে ১০০ বার দরুদ পড়ে। যদি সে দিনে ৫ হাজার বার দুরুদ পড়তে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে ধীরে সুস্থে আগাতে হবে। দেখা যাচ্ছে দিনে ৫০ বার করে দুরুদ পড়া বাড়াবে রোজ, ধারাবাহিকতা রাখবে। এভাবে আস্তে আস্তে দিনে ৫০০,১০০০,২০০০ এমনকি ৫ হাজার হওয়াটাও অস্বাভাবিক না। বরং সময়, চেষ্টা এবং ধারাবাহিকতা থাকলে এটা অবশ্যই সম্ভব।
কিন্তু যে এক লাফেই একের পরিবর্তে এক হাজার দুরুদ পড়া শুরু করে তার ক্ষেত্রে নবীﷺ প্রেম কতটুকু কাজ করে আর প্রতিযোগিতায় জেতার নেশা কতটুকু কাজ করে? একজন গড়পড়তা মুসলিমের পক্ষে কি ইখলাস, মনোযোগ ধরে রাখা সম্ভব এমন ক্ষেত্রে? আমার পক্ষে তো সম্ভব হয় না।

হ্যাঁ, যে দীর্ঘদিন অধ্যাবসায়ের ফলে আস্তে আস্তে দুরুদে অভ্যস্ত হয়েছে তার জন্য ইখলাস, মনোযোগ দুটোই রাখা সম্ভব। কারণ প্রতিযোগিতা হোক বা না হোক সে এই পরিমাণ দুরুদ পাঠেই অভ্যস্ত। কিন্তু ধরা যাক, যদি প্রতিযোগিতা না হতো তাহলে দিনে ১০০ বার দুরুদ পড়া আমি কি এক লাফে পাঁচ হাজারে যেতাম? কখনোই না।
আর যে আসলেই দিনে পাঁচ হাজার+ দুরূদ পড়ে ভাবুন তো সে কি এসব অনর্থক প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে, তার কি এত ফালতু সময় আছে? সে তো মোবাইল থেকেই শতহাত দূরে থাকা বাসিন্দা হওয়ার কথা। কারণ, মোবাইলে যে সময় দেয় তার নসিবে তো এতো দুরূদ পড়া জোটে না।
উপরন্তু সে তো এটাও ভয় করবে যে, দুরুদ পড়ার বিনিময়ে এই যে আমি দুনিয়াবী পুরস্কার নিচ্ছি, আখিরাতে আল্লাহ তাআলা যদি বলেন, এই কারণেই তো তুমি দুরুদ পড়েছো এবং তার পুরস্কার দুনিয়াতেই পেয়েও গেছো। এখন আবার কীসের পুরস্কার আশা করো? হতে পারে না সেই ভয়?
হ্যাঁ, দুরুদ বেশি বেশি পড়ার অভ্যাস আমরা করবো। কিন্তু দয়া করে নিজের নিয়ত, আর ইখলাসটা পরীক্ষা করে নিবেন, বোনেরা। আস্তে আস্তে পরিমাণ বাড়ান, এতেই বরকত পাবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলার কাছে পরিমাণের চাইতে মান সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। তোতাপাখির মতো আওড়ে যাওয়া হাজার হাজার দুরুদের চাইতে ইখলাসপূর্ণ গোটা কয়েক দুরুদ হয়তো রবের কাছে বেশি প্রিয় ইনশাআল্লাহ।

এজন্য প্রতিযোগিতা বা পুরষ্কার দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়বেন না, বোন। সব প্রতিযোগিতা আমাদের জন্য উপকারি না। ধারণা নিন সেই প্রতিযোগিতা থেকে, এরপর নিজের সাথে প্রতিযোগিতা করুন। নিজের নিয়ত, ইখলাস ঠিক থাকবে এমনভাবে সাজান নিজের সাথে করার সেই প্রতিযোগিতা ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য, কথাগুলো নিজের আর পরিচিত বোনদের অভিজ্ঞতা থেকেই বলা। সবারই মনে খচখচ হয়েছে নিয়ত নিয়ে। মাস দুয়েক আগেও এতো দুরুদের প্রতিযোগিতা দেখেছি বলে মনে পড়ে না। দুআ করি আল্লাহ তাআলা আমাদের কবুলযোগ্য নেক আমল করার তৌফিক দান করুন, আমীন সুম্মা আমীন।

©
by (7 points)
আমিও এ সম্পর্কে জানতে চাই।শুধু মুখে দূরূদ পড়লেই কী সওয়াব পাওয়া যাবে ইখলাসের সাথে না পড়লেও।কারণ ম্যাক্সিমাম এরই প্রতিযোগিতায় টার্গেট পূরন করাই থাকে মূল লক্ষ্য, এখান ইখলাসের সাথে তো সবসময় পড়া হয়না।
আবার কিছু কিছু প্রতিযোগিতায় হিউজ হাদিয়ার ব্যবস্থা রয়েছে

1 Answer

0 votes
by (547,020 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো কোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে ফিস যদি না থাকে,এবং যদি শরীয়ত বিরোধী কোনো কর্মকান্ড তাতে না থাকে,
তাহলে ছেলেদের জন্য তাতে অংশ গ্রহন জায়েয। তবে যদি ফিস থাকে,তাহলে জায়েয হবে না। কেননা তখন এটা জুয়া হয়ে যাবে,যা পরিস্কার হারাম।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا  [٢:٢١٩]

তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে,তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়। [সূরা বাকারা-২১৯]

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٥:٩٠]
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ [٥:٩١]

হে মুমিনগণ,এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে? [সূরা মায়িদা-৯০-৯১]

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
দরুদের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ এর জন্য যদি কোনো ফি না থাকে,সেক্ষেত্রে উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া ও পুরস্কার নেয়া জায়েজ।

এক্ষেত্রে পুরস্কার লাভের আশায় কেউ যদি এখানে পার্টিসিপেট করে তাহলে সে গুনাহগার হবেনা।

উল্লেখ্য, এটা শরীয়তের বিধান বলা হলো।
তবে কেহ যদি প্রশ্নে উল্লেখিত আলোচনার আলোকে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর প্রতি মুহাব্বতের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ না করে এমনিতেই নিজে নিজে নিয়মিত  অধিক পরিমান দরুদ শরীফ পাঠ করে,তাহলে তাহা অনেক উত্তম হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...