আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in পবিত্রতা (Purity) by (44 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
১. আমার বাসার ওয়াশরুমের কমোড ছোট আর পাইপের দিকটা এমন যে পাইপের উপর থেকে পানি পড়লে পাইপের জমে থাকা পানিতে ড্রপ করে আবার বাউন্স করে উপরে উঠে আসে। তখন শরীরে লাগার মতো অনুভব হয়।বসার পর ভালোভাবে দেখা যায় না কোনটা লাগলো আর কোনটা লাগে নাই অহেতুক সন্দেহ। এমতাবস্থায় কিভাবে পবিত্র হবো?ধুইতে গেলে দেখা যায় প্রতিবার অর্ধেক গোসল করা লাগে।

২. কখনো কখনো দেখা যায় আজেবাজে চিন্তার কারণে লিঙ্গ উত্থিত হলে বীর্য লিঙ্গে চলে এসেছে এরকম দৌড়াদৌড়ি অনুভব হয়।  বাহিরে কিছু বের হয় না।আবার কখনো কখনো আমি আটকে রাখি তখনও বাহিরে কিছু দেখা যায় না।এরকম অবস্থায় কি আমার গোসল ফরজ হবে? আমি অবশ্য লিঙ্গ চাপ দিয়ে বা মৈথুন করে দেখি না যে আসলেই সেটা বীর্য কিনা। আবার এরকম হওয়ার পর প্রসাব করলে পাইপে জমে থাকা প্রসাবে  সাদা ফেনা হয়। এগুলা কি বীর্য? এসকল ক্ষেত্র গুলোতে কি গোসল ফরজ হবে?

৩. ঘুম থেকে ওঠার পর মনে হয় লজ্জাস্থান ও আশেপাশের কাপড় সামান্য ভিজা ভিজা। বীর্যের মতো গাঢ় না। পানি লাগলে যেরকম ভিজা মনে হয় সেরকম।কিন্তু খুব সামান্য। এটা বোঝা যায় না এটা মযি, ওদি, ঘাম, না প্রসাব। বাহিরে কিছু দেখা যায় না।এরকম হলে ইগনোর করে ওজু নামাজ চালিয়ে যাই।এরকম কি করা যাবে?

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
এক্ষেত্রে শরীরে লাগার মতো অনুভব হওয়ার পর সেই স্থানে হাত দিয়ে ভেজা পেলে সেক্ষেত্রে শরীরের উক্ত স্থান ভালোভাবে ধোয়া লাগবে।

প্রতিবার টয়লেটের পর অর্ধেক গোসল করা লাগলেও করতে হবে,তারপরেও নাপাকি নিয়ে সালাত আদায় করা যাবেনা।

(০২)
এমতাবস্থায় বীর্য লিঙ্গের মাথার চলে আসার পর যদি এমনিতেই বের না হয়,সেক্ষেত্রে গোসল ফরজ হবেনা।

তবে এক্ষেত্রে যদি আপনি লিঙ্গের মাথা চেপে রাখেন,বীর্য বের হতে না দেন,সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে পেশাবের পর সাদা কিছু বের হলে গোসল ফরজ হবে।

তবে পেশাবের পর সাদা কিছু বের না হয়ে এমনিতেই সাভাবিক পেশাব বের হওয়ার পর পেশাব জমা হওয়ার স্থানে ফেনা তৈরী হলে  গোসল ফরজ হবেনা।

(০৩)
স্বপ্নদোষ হলে গোসল ফরজ হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত উম্মে সালমা রাযি থেকে বর্ণিত,

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ أَنَّهَا قَالَتْ جَاءَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ امْرَأَةُ أَبِي طَلْحَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ : ( إِنَّ اللَّهَ لَا يَسْتَحْيِي مِنْ الْحَقِّ هَلْ عَلَى الْمَرْأَةِ مِنْ غُسْلٍ إِذَا هِيَ احْتَلَمَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَمْ إِذَا رَأَتْ الْمَاءَ )

তিনি বলেন,হযরত আবু তালহা রাযি এর স্ত্রী উম্মে সুলাইম রাযি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট এসে বললেন,ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! নিশ্চয় আল্লাহ হককে প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না,মহিলার উপর কি গোসল ফরয হবে, যখন মহিলার স্বপ্নদোষ হবে?
রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,হ্যা মহিলার উপরও গোসল ফরয হবে,যখন মহিলা পানিকে দেখবে।(সহীহ বোখারী-৩৭৩,সহীহ মুসলিম-৪৭১)

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ خَالِدٍ الْخَيَّاطُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ الْعُمَرِيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللهِ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الرَّجُلِ يَجِدُ الْبَلَلَ وَلَا يَذْكُرُ احْتِلَامًا قَالَ " يَغْتَسِلُ " . وَعَنِ الرَّجُلِ يَرَى أَنَّهُ قَدِ احْتَلَمَ وَلَا يَجِدُ الْبَلَلَ قَالَ " لَا غُسْلَ عَلَيْهِ " . فَقَالَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ الْمَرْأَةُ تَرَى ذَلِكَ أَعَلَيْهَا غُسْلٌ قَالَ " نَعَمْ إِنَّمَا النِّسَاءُ شَقَائِقُ الرِّجَالِ "

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে ঘুম থেকে জেগে (বীর্যপাতে দরুণ কাপড়) ভিজা দেখতে পায় অথচ স্বপ্নদোষের কথা তার স্মরণ হচ্ছে না। তিনি বললেন, তাকে গোসল করতে হবে। এটাও জিজ্ঞাসা করা হল যে, এক ব্যক্তির তার স্বপ্নদোষ হয়েছে বলে মনে পড়ছে, অথচ কাপড়ে কোন ভিজা দেখতে পেল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে গোসল করতে হবে না। উম্মু সুলাইম (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! নারীরাও (পুরুষের) অনুরূপ কিছু দেখতে পেলে তাদেরও কি গোসল করতে হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, নারীরা তো পুরুষের মতই।
তিরমিযী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ কেউ জাগ্রত হয়ে কাপড় ভিজা পেলো কিন্তু স্বপ্ন দোষের কথা স্মরণ হচ্ছে না, হাঃ ১১৩), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ কারো স্বপ্ন দোষের কথা মনে হচ্ছে কিন্তু কাপড় ভিজা দেখলো না হাঃ ৬১২), আহমাদ (৬/২৫৬), দারিমী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, কেউ কাপড় ভিজা দেখলো কিন্তু স্বপ্ন দোষের কথা স্মরণ করতে পারলো না, এরূপ অবস্থায় করণীয় কি? হাঃ ৭৫৬,আবু দাউদ ২৩৬),

স্বপ্নদোষের কারণে গোসল ফরয হবে।মনে থাকুক বা নাই থাকুক।যদি জাগ্রত হওয়া পর বীর্যের আছর পরিলক্ষিত হয়,তাহলে এক্ষেত্রে গোসল ফরয হবে।
অন্যথ্যায় নয়।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রে স্বপ্নদোষ এর কথা স্বরন থাকলে গোসল ফরজ হবেনা।

স্বপ্নদোষ এর কথা স্বরন না থাকলে ফরজ গোসল আদায় করবেন।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...