প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে
আমরা প্রত্যেক মাস'আলায় প্রথমে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে মাস'আলা বলে দেওয়ার চেষ্টা করি।যদি কোথাও আমরা কুরআন ও সহিহ সুন্নাহ থেকে মাস'আলা বলে দিতে অক্ষম হয়ে যাই তখন আমরা ফুকাহায়ে কেরামদের ইজতেহাদের শরণাপন্ন হই।
যেটি ছাহাবায়ে কেরামদেরও কাজ ছিলো।
সাহাবায়ে কিরাম যারা সরাসরি রাসূল সাঃ এর কাছে ছিলেন তাদের জন্য রাসূল সাঃ এর ব্যাখ্যা অনুসরণ করা ছিল আবশ্যক। এছাড়া কারো ব্যাখ্যা নয়। কিন্তু যেই সকল সাহাবারা ছিলেন নবীজী সাঃ থেকে দূরে তারা সেই স্থানের বিজ্ঞ সাহাবীর মাযহাব তথা মত অনুসরণ করতেন। যেমন ইয়ামেনে হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ এর মত তথা মাযহাবের অনুসরণ হত। আব্দুল্লাহ বিন মাসউদের অনুসরণ করতেন ইরাকের মানুষ।
রাসূল সাঃ যখন মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ কে ইয়ামানে পাঠাতে মনস্ত করলেন তখন মুয়াজ রাঃ কে জিজ্ঞেস করলেন-“যখন তোমার কাছে বিচারের ভার ন্যস্ত হবে তখন তুমি কিভাবে ফায়সাল করবে?” তখন তিনি বললেন-“আমি ফায়সালা করব কিতাবুল্লাহ দ্বারা”। রাসূল সাঃ বললেন-“যদি কিতাবুল্লাহ এ না পাও?” তিনি বললেন-“তাহলে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নাত দ্বারা ফায়সালা করব”। রাসূল সাঃ বললেন-“যদি রাসূলুল্লাহ এর সুন্নাতে না পাও?” তখন তিনি বললেন-“তাহলে আমি ইজতিহাদ তথা উদ্ভাবন করার চেষ্টা করব”। তখন রাসূল সাঃ তাঁর বুকে চাপড় মেরে বললেন-“যাবতীয় প্রশংসা ঐ আল্লাহর যিনি তাঁর রাসূলের প্রতিনিধিকে সেই তৌফিক দিয়েছেন যে ব্যাপারে তাঁর রাসূল সন্তুষ্ট”। {সূনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৩৫৯৪, সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং-১৩২৭, সুনানে দারেমী, হাদিস নং-১৬৮, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২০৬১}
এই হাদীসে লক্ষ্য করুন-রাসূল সাঃ এর জীবদ্দশায় হযরত মুয়াজ রাঃ বলছেন যে, আমি কুরআন সুন্নাহ এ না পেলে নিজ থেকে ইজতিহাদ করব, আল্লাহর নবী বললেন-“আল হামদুলিল্লাহ”।
,
মাযহাব সংক্রান্ত জানুনঃ
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আমরা ফুকাহায়ে কেরামদের ইজতেহাদ উল্লেখের ক্ষেত্রে ফিকহে হানাফিকে অগ্রগণ্য রাখি।
কারন আমাদের IOM তথা ইসলামিক অনলাইন মাদ্রাসার অধিকাংশই ফিকহে হানাফি অনুসরণ করে থাকেন।
,
ভিন্ন মাযহাবের কেউ,বা আহলে হাদিসদের কেউ তারা তাদের মাযহাবের কারো নিকট থেকে মাস'আলা সংগ্রহ করবেন। এটাই স্বাভাবিক।
তবে আমাদের এখান থেকে সকল মাযহাবের অনুসারীগণ মাস'আলা সংগ্রহ করতে পারবেন।কেননা আমরা ইখতেলাফি মাস'আলার ক্ষেত্রে ভিন্ন মাযহাব তুলে ধরি। এবং সবাইকে যার যার মাযহাব অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দিয়ে থাকি।
কারন কোনো মাসয়ালাতে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ থাকলে আমরা সেটিও উল্লেখ করি,এবং তাদেরকে সেই মত অনুযায়ী আমল করার কথা বলে থাকি।