আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
238 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম, উস্তাদ।
কিছু বিষয় এ জানার ছিল,,

১.একাকিত্ব আল্লাহ তায়ালার এক বিশেষ নিয়ামত, একা থাকলে গীবত মুক্ত থাকা যায়,গুনাহ কম হয়।যথেষ্ট বিনয়ের পর ও কেউ যদি বাজে আচরণ করে,কষ্ট দেয়,দূর্বল মনে করে আঘাত করে তবে কি তাদের থেকে দূরত্ব মেইনটেইন করা যাবে,মানে কম কথা বলা যাবে কি,,এই মুহুর্তে করনীয় কি?
২.পরিপূর্ণ পর্দা মেইনটেইন এর ক্ষেত্রে,নিকাব পরিহিত অবস্থায় বাসায় বা বাইরে পরিচিত কারো সাথে কথা বলা বা উনি যদি কোন প্রশ্ন করেন,উত্তর দেয়া যাবে কি?
৩.আমার নানার আপন ভাই,উনি অনেক বয়স্ক,বয়স ৬০+ হবে। উনার সামনে নিকাব ছাড়া যাওয়া যাবে কি?
৪.আমরা যারা জেনারেল লাইনে পড়াশুনা করি, অনেক সময় ক্লাসে,ভাইভা তে আমাদেরকে মাস্ক /নিকাব খুলতে বাধ্য করা হয়,এই অবস্থায় আমাদের কি করা উচিত?
৫.প্রশ্ন টা এক বোনের,,আলহামদুলিল্লাহ, তিনি কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী চলার চেষ্টা করেন,হালাল হারাম মেইনটেইন করেন।আপুর মা,তিনিও নামাজ পরেন,আলহামদুলিল্লাহ। তবে তিনি এখনো পরিপূর্ণ ভাবে দ্বীনের বুঝ পান নি,তবে সন্তানদের দ্বীন পালনে সর্বোচ্চ সাপোর্ট দেন।উনার রাগ একটু বেশি।মাঝে মাঝে তিনি তার সন্তানদের প্রতিও অবিচার করেন,বকা দেয়া,বাজে বিহেভ করেন। সবসময় তার নিজের আত্মীয়দের প্রায়োরিটি দেন বেশি,বাবার আত্নীয়দের অনেক কম,কারণ তারা এক সময় তাকে  অনেক কষ্ট দিত যা তিনি ভুলতে পারেননি। এছাড়াও আরো অনেকভাবে তিনি পরিবারে অধিকার খাটান,ব্যাপারটা এমন যে উনি যা বলবেন তাই ঠিক।পরিবারে সমস্যার মেইন টপিক হলো আত্নীয়স্বজন।বান্দার হক এই বিষয় আপু কিছু বলতে গেলে,বুঝাইতে গেলে অল্পতেই  তার মা তাদের উপর রেগে যান,অসন্তুষ্ট হন।বাস্তবিকপক্ষে সন্তান এটা  বলতে চায় যে,এটা জুলুম হচ্ছে, ভুল হচ্ছে, অন্যায় হচ্ছে।ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে বুঝানোর চেষ্টা করেন।কিন্তু তিনি কোনভাবেই মানতে রাজি না।উল্টো আপুর উপর রাগ হন।এমন কিছু বলেন যার এক পর্যায়ে আপুও উচু গলায় কথা বলেন।যার ফলে উনার মা কষ্ট পান।কিন্তু তিনি  কষ্ট দিতে চান না,অবাধ্য হতে চান না,তিনি চান তার মা ভুল বুঝতে পেরে নিজেকে শুধরে নিক,দ্বীনের পথে আসুক।রাগের মাথায় আপু তখন কথা বলে ফেলেন। এই অবস্থায় কি আপু অন্যায় মেনে নিয়ে চুপ থাকবে,এখন উনার কি করা উচিত??
৬ নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা উত্তম পরিকল্পনাকারী,এমন একটা জিনিস আমরা চাইছি,যা বাস্তবিকভাবে কল্লাণকর মনে হচ্ছে,এক্ষেত্রে প্রথমে দুয়া করছি,হে আল্লাহ আপনি যা ভালো মনে করেন তাই করুন।কিন্তু হঠাত করেই মন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, আবার দুয়া করছি,হে আল্লাহ এই জিনিসটা পাইয়ে দিন,এতে কল্লাণ দিন।এমনটা করা কি ঠিক হবে, একারনে আমার গুনাহ হচ্ছে কি?
by
আসসালামু আলাইকুম, উস্তাদ মায়ের আপন চাচা যদি মাহরাম হন,তাহলে মায়ের চাচাতো ভাই,আমার মামা,উনার সামনে পর্দার বিধান কি,,
আর নিকাব পড়ে ব্রু কি,ডাকতেই হবে,এই বিষয় টা ক্লিয়ার বুঝতে পারলে উপকৃত হতাম।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হ্যাঁ, তাদের থেকে দূরত্ব মেইনটেইন করা যাবে, কম কথা বলা যাবে।
তবে সামনা-সামনি হলে কমপক্ষে সালাম বিনিময় অবশ্যই করবেন।

(০২)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উপরোক্ত আয়াত সমূহে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে, আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। যা পরিস্কার ভাষায় জানাচ্ছে যে, প্রয়োজন ছাড়া মেয়েদের সাথে কথা বলা জায়েজ নয়।

দ্বীনী বা বৈধ কোন জরুরী বিষয় থাকলে পর্দার আড়ালে থেকে কম কথায় শেষ করে নিবে। অযথা কথা বলা হারাম।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রয়োজনীয় কথা হলে ফিতনার আশংকা না থাকলে সেক্ষেত্রে এভাবে কথা বলা যাবে।
তবে কন্ঠস্বর নরম না করে শক্ত করার চেষ্টা করবেন,কম কথায় শেষ করে দিবেন। অযথা কথা বলা বা প্রয়োজন অতিরিক্ত কথা বলা জায়েজ নেই।

(০৩)
সে আপনার মাহরাম,সুতরাং তার সামনে নেকাব ছাড়া যাওয়া যাবে।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৪)
অগত্যা নেকাব খুলতে হলে ইস্তেগফার পাঠ চালিয়ে যাবেন।
পরবর্তীতে খালেস দিলে তওবা করে নিবেন।

(০৫)
তিনি জোড় গলায় কথা না বলে হিকমতের সাথে আস্তে-ধীরে সাবলীল ভাষায় শান্ত ভাবে মাকে বুঝাবে।

(০৬)
এতে কোনো সমস্যা নেই।
এতে আপনার গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...