আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
2,463 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (22 points)
1. আমার দাদা দাদী নানা নানীর আপন ভাইকে আমার কি মাহরাম ব্যক্তি??? যদি   মাহরাম ব্যক্তির না হয় তাহলে তাদের সামনে কতটুকু পর্দা করতে হবে??  
2. মেয়েরা বাড়িতে থাকা অবস্থায় তাদেরকে কতটুকু পরিমাণে পর্দা করতে হবে।  অর্থাৎ কতটুকু শরীর ঢাকতে হবে। সেখানে তো সবাই মাহরাম ব্যক্তি।    
3.  কিছু কিছু আলেম বলে মেয়েদের কে নাকি ঘরের মধ্যে মাথায় কাপড় দিয়ে থাকতে হবে ঘরের মধ্যেও মাথা ঢেকে রাখতে হবে ভালো করে । যেখানে সবাই মাহরাম ব্যক্তি। ছোটবেলায় তো বাবা  কত নিজের মেয়ের কাপড় পাল্টে দিয়েছে কত। নিজের বাবা নিজের বাবার সামনেও মাথায় কাপড় দিয়ে থাকতে হবে। ঐ আলেম গুলো কি মনে করে নিজের বাবার মেয়ের  মধ্যও ফেতনার আশঙ্কা আছে। তাহলে কেন তারা এ নির্দেশ দেয়।   
4.ইসলাম  তো  পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান ।  মহান আল্লাহতো  কারও   উপর বিন্দুমাত্র জুলুম করে না ।  আর  আলেমরা  কি করে মেয়েদের উপরে  জুলুম করা ফতোয়া দিয়ে মেয়েদের উপর জুলুম করে  ।এখন গরমের দিন গুলোতে পর্দা করা অনেক কষ্টকর।  সেখানে কি ঘরের মধ্যে মাথায় কাপড় দিয়ে বসে থাকতে হবে এটা কি মেয়েদের উপর জুলুম করা হচ্ছে না। আলেমরা এসব জেনেও তারা কিসের জন্য এরকম ফতোয়া দেয়ে।  যেহেতু সেখানে সবাই মাহারম ব্যক্তি।   এমনিতেই তো মেয়েরা হাতের কবজি পর্যন্ত এবং পায়ের পাতা পর্যন্ত ঢেকে রাখে  বাড়িতে।  শুধু মাথায় কাপড় দেয় না।  কারন  সব সময় মাথায় কাপড় দিয়ে থাকা যায় না। গরমের দিনে এটা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে।

 5. এমন কি কোন হাদিস আছে যেখানে মেয়েদেরকে ঘরের মধ্যেও মাথায় কাপড় দিয়ে থাকতে হবে??

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ
القسم الأول المحرمات بالنسب وھن الأمہات والبنات والأخوات والعمات والخالات․․․ وأما العمات فثلاث․․․ وکذا عمات أبیہ عمات أجدادہ وعمات أمہ وعمات جداتہ وإن علون․․․․ وأما الخالات․․․․ وخالات آبائہ وأمہاتہ (عالم گیري: ۱/۲۷۳، ط: زکریا دیوبند)

সারমর্মঃ  বাবার চাচা,দাদার চাচা,মায়ের চাচা,নানীর চাচা,বাবার খালা মায়ের খালা

শরীয়তের বিধান মতে নানীর বোন,দাদির বোন মাহরাম। তাদের দেখা সাক্ষাৎ করা জায়েয। 
(ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৭৩)

আরো জানুন

★দাদার ভাই হচ্ছে নিজ বাবার চাচা আর বাবার চাচা মানে নিজের চাচা, যেহেতু নিজের চাচা মাহরাম।তাই বাবার চাচা তথা দাদার ভাইও মাহরাম।

★দাদীর ভাই বাবার মামা,নিজ বাবার মামা মানে নিজের মামা,তাই দাদির ভাই মাহরাম।

★ঠিক তেমনি নানির ভাই,নিজ মা'য়ের মামা,আর মা'য়ের মামা মানে নিজের মামা,তাই নানার ভাই মাহরাম।

★তেমনি নানার ভাই, নিজ মা'য়ের চাচা,আর মা'য়ের চাচা মানে নিজের চাচা,তাই নানার ভাই মাহরাম।

★পুরুষ মহিলার  জন্য মাহরাম হচ্ছে ঐসব পুরুষ বা মহিলা যাদের সাথে উক্ত পুরুষ বা মহিলার বৈবাহিক সম্পর্ক চিরতরে হারাম; সেটা ঘনিষ্ট আত্মীয়তার কারণে।
 
,
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}
,
আরো জানুনঃ 
,
(২.৩)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলাদের জন্য মাহরামের সামনে সতর হল, মাথা, চুল, গর্দান, কান, হাত, পা, টাখনু, চেহারা, গর্দান সংশ্লিষ্ট সিনার উপরের অংশ ছাড়া বাকি পূর্ণ শরীর সতর।
,
তবে মাহরামদের  সামনে যাওয়ার সময়েও সমাজ হিসেবে যা শালীন, ও তাকওয়া প্রকাশক করে এমন পোশাক পরিধান করা উত্তম।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছে  

(وَمِنْ مَحْرَمِهِ) هِيَ مَنْ لَا يَحِلُّ لَهُ نِكَاحُهَا أَبَدًا بِنَسَبٍ أَوْ سَبَبٍ وَلَوْ بِزِنًا (إلَى الرَّأْسِ وَالْوَجْهِ وَالصَّدْرِ وَالسَّاقِ وَالْعَضُدِ إنْ أَمِنَ شَهْوَتَهُ) (رد المحتار، كتاب الحظر والاباحة، فصل فى النظر والمس-9/527-528)

যার সারমর্ম হলো যদি ফিতনার   আশংকা না থাকে,তাহলে  মাহরামদের সামনে উক্ত অঙ্গ গুলো খোলা রাখা জায়েজ আছে, কোনো সমস্যা নেই।      
,
★সুতরাং বাড়িতে থাকা অবস্থায় যদি মাহরাম ছাড়া আর কেউ না থাকে,তাহলে  ফিতনার আশংকা না থাকে,তাহলে  মাহরামদের সামনে মাথা, চুল, গর্দান, কান, হাত, পা, টাখনু, চেহারা, গর্দান সংশ্লিষ্ট সিনার উপরের অংশ  খোলা রাখা জায়েজ আছে, কোনো সমস্যা নেই।      

★ প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত ""বাসায় নন মাহরাম কেউ না থাকলেও মাথায় ওড়না দিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক নয়।
বাসায় শুধু স্বামী,মাহরাম পুরুষ,আর মহিলারা থাকলেও মাথায় ওড়না দিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক নয়।
এতে কোনো গুনাহ হবেনা।
,
(৪.৫)
ঘরে গায়রে মাহরাম কোনো পুরুষ না থাকলে ""মাথায় কাপড় দিয়ে বসে থাকতে হবে""
এমন কোনো হাদীস,বিধান নেই।
,
ফিতনার আশংকা না থাকলে খোলা রাখা যাবে।
কোনো সমস্যা নেই।
,

বিস্তারিত জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
আসসালামু আলাইকুম। 
মায়ের মামা সে কিভাবে আমার মামা হলো।
এই মাসয়ালা টা আরেকটু বুঝিয়ে বলুন প্লিজ

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...