আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in সালাত(Prayer) by (20 points)

السلام عليكم ورحمة الله وبركاته أستاذ

 

গতকাল আমি আর আমার ভাই(বয়স তার ১৭) আসরের নামাজ বাসায় আদায় করি তাকে ইমামতি দাঁড় করিয়ে,{প্রায় সময় এভাবে আমি-আমার ছোট ভাই-মাঝেমধ্যে আব্বুসহ বাসায় জামাত করি-কখনো বৃষ্টির ফলে বাড়ীর সামনে পানি উঠে যাওয়াতে-অসুস্থতায়, জামাতের প্রস্তুতি নিতে নিতে মসজিদের জমাত ছুটে যাবে এই প্রবল আশংকায়}

এতে কয়েকটি মাস'আলা জানতে চাই,

১। নাবালেক ইমামের পিছনে কি সব রকমের নামাজ(ফরজ/ওয়াজিব/সুন্নত/নফল) বালেকের ইক্তিদা হয় না?/নামাজ হয় না?চাই সে হাফিজ হোক না কেন?

২। নাবালেকের বয়সের সময়সীমা ইসলামি শরীয়ায় কতটুকু সময়/কত বছর পর্যন্ত থাকে?

৩। নাবালেক নিজেরা নিজেদের নিয়ে জামাত করতে পারবে কিনা?

৪। এভাবে প্রায়সময় বাসায় জামাত করে ফেলাটা কেমন?-অনেকসময় প্রায় মাদ্রাসাগুলোতেই দেখি মসজিদ ২মিনিটের দূরত্বে থাকলেও তারা নিজেরা নিজেদের সুবিধামতো নিজেদের মাঝে জামাত করে ফেলে-এ বিষয়েও জানাবেন দয়া করে,

৫। আমার ছোট ভাইয়ের পিছনে ইক্তিদা করায় নামাজ সহীহ হবে কিনা?

মূল মাস'আলায় আসি, গতকাল আসরের নামাজে আমার প্রবল ধারণা ছিলো সে ২য় বৈঠক দেয় নাই,তার প্রবলধারণা ছিলো দিয়েছে, আমার লোকমা দেওয়ায় সে গ্রহণ করে শেষ বৈঠকে সাহু সিজদা দিয়ে নামাজ শেষ করে, পরে আমাকে জানায় তার প্রবল ধারণা সে অবশ্যই দিয়েছে, ফলে তার মতে ৫রাকাত হয়ে গেলো এবং সেই রাকাতেই সিজদায় সাহু দিলো, আমার প্রবল ধারণামতে ২য় রাকাতে বৈঠক না করায় ৪র্থ রাকাতে সিজদায় সাহু দিয়েছে

- এখন এতে নামাজ শুদ্ধ হয়েছে কিনা? নাকি দোহরাতে হবে?

-এতে কার প্রবলধারণা গ্রহণ করতে হবে-(নামাজে এবং নামাজের বাহিরে)

-সে যেহেতু আমার লোকমা গ্রহণ করেছে এক্ষেত্রে সহীহ কারটা ধরা হবে?

- এগুলোর বিস্তারিত মাসায়েল জানাবেন দয়া করে,

এক জায়গায় পেয়েছি,

 "নামাযে রা'কাত বা সেজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে,যে ঐ ব্যক্তির কি এটা প্রথম হয়েছে না মাঝেমধ্যে এমন হয়।যদি প্রথমবার বা কদাচিৎ হয়ে তাহলে উনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে পড়ে নিবেন।

(মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ২/২৮)"

এটি কি তবে প্রায়সময় যেহেতু আমাদের ভূল হয় না- উপরের হাদীসের বিধান কি আমাদের উপর বর্তাবে?

আবার এটি আমাদের ইচ্ছাকৃত কোনো ভূল নয়, এমন ভূল যা আমাদের সন্দেহে পতিত করে অনিচ্ছাকৃতভাবেই।

বিষয়গুলো বিস্তারিত খোলাসা করে মাস'আলা জানাবেন আশা করছি,

জাযাকাল্লাহু খাইরান উস্তায।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
নাবালেগের ইমামতি সহীহ নয়। 
চাই সে হাফেজ হোক বা গায়রে হাফেজ হোক।
কোনো নামাজই তার ইমামতিতে সহীহ নয়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
উমর বিন আবদুল আযীয ও আতা রাহ. বলেন, নাবালেগ ছেলে যেন প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে ইমামতি না করে। ফরয নামাযেও নয়, অন্য নামাযেও নয়।

(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩৫২৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৫১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৮৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫৯; রদ্দুল মুহতার ১/৫৭৭)

الاختيار لتعليل المختار (1/ 58):
"قال: (ولاتجوز إمامة النساء والصبيان للرجال) أما النساء فلقوله عليه الصلاة والسلام: «أخروهنّ من حيث أخرهنّ الله»، وإنه نهي عن التقديم. وأما الصبيّ فلأنّ صلاته تقع نفلاً فلايجوز الاقتداء به، وقيل: يجوز في التراويح؛ لأنها ليست بفرض، والصحيح الأول؛ لأنّ نفله أضعف من نفل البالغ فلايبتنى عليه".
সারমর্মঃ যেহেতু নাবালেগের নামাজ নফল হবে,(কারন নামাজ তার উপর ফরজ নয়)
তাই তাই তার ইকতেদা করা জায়েজ নেই ।
  
الفتاوى الهندية (1/ 85) :
"وإمامة الصبي المراهق لصبيان مثله يجوز، كذا في الخلاصة ... المختار أنه لايجوز في الصلوات كلها، كذا في الهداية وهو الأصح. هكذا في المحيط وهو قول العامة وهو ظاهر الرواية. هكذا في البحر الرائق".

সারমর্মঃ গ্রহণযোগ্য মত হলো কোনো নামাজেই নাবালেগ এর ইমামতিতে জায়েজ নেই।  

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
ছেলেদের বালেগ হওয়ার আ'লামত হল, স্বপ্নদোষ, বীর্যপাত, অথবা ছেলে এমন বয়সে উপনীত হওয়া যে, তার বীর্য গর্ভ ধারণ করার উপযুক্ত হয়ে গেছে। আর মেয়েদের বালেগা হওয়ার আ'লামত হল, স্বপ্নদোষ, হায়েয, এবং গর্ভ ধারণের সক্ষম হওয়া।

উপরোক্ত কোনো আলামত পাওয়া না গেকে 
ছেলেদের বালেগ হওয়ার নিম্ন বয়স ১২ বৎসর এবং সর্বোচ্ছ ১৫ বৎসর। আর মেয়ের বালেগা হওয়ার বয়স সর্বনিম্ন ৯ বৎসর এবং সর্বোচ্ছ ১৫ বৎসর। এটা সাহেবাইন রাহ এর মাযহাব। এটাই সর্বাধিক পছন্দনীয়। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
এক্ষেত্রে তাদের উপর যেহেতু নামাজ ফরজ নয়। তাই এভাবে শেখার জন্য নামাজ আদায় করলে তাতে দোষ নেই।

(০৪)
বাসায় জামা'আত করলে যদিও জামা'আতের সাথে নামাজ আদায়ের ছওয়াব পাওয়া যাবে।
তবে বিনা ওযরে মসজিদে জামা'আতে শরিক না হয়ে এইভাবে ঘরে জামা'আতের অভ্যাস গড়ে তোলা জায়েজ নেই।  
এতে গুনাহ হবে।

হাদীস শরীফে বিনা ওযরে মসজিদে এসে জামা'আত ছেড়ে দেওয়ার উপর কঠিন হুমকি এসেছে।

 حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ أَبِي جَنَابٍ، عَنْ مَغْرَاءٍ الْعَبْدِيِّ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ سَمِعَ الْمُنَادِيَ فَلَمْ يَمْنَعْهُ مِنَ اتِّبَاعِهِ عُذْرٌ " . قَالُوا وَمَا الْعُذْرُ قَالَ خَوْفٌ أَوْ مَرَضٌ " لَمْ تُقْبَلْ مِنْهُ الصَّلَاةُ الَّتِي صَلَّى

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের আযান শুনা সত্ত্বেও কোনরূপ ওজর ছাড়া (বিনা কারণে) জামা‘আতে সলাত আদায়ে বিরত থাকে তার অন্যত্র (একাকী) সলাত কবুল হবে না। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ওজর কি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ভয়-ভীতি অথবা অসুস্থতা। 
আবূ দাঊদ ৫৫১, আল জামি‘ ৫৬৩৪, দারাকুত্বনী ১৫৫৭।
বায়হাক্বী ‘সুনানুল কুবরা’ (৩/৭৫), হাকিম (১/পৃঃ ২৪৫), দারাকুতনী (১/পৃঃ ৪২১), 

وسئل الحلواني عمن یجمع بأہلہ أحیاناً، ہل ینال ثواب الجماعۃ؟ فقال لا، ویکون بدعۃ ومکروہاً بلا عذر۔ (فتح القدیر ۱؍۳۴۵)
সারমর্মঃ
হালওয়ানি রহঃ কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো যে কেহ তার পরিবার নিয়ে মাঝে মাঝেই ঘরে জামা'আত করে,সে কি জামা'আতের ছওয়াব পাবে?
তিনি বলেছিলেনঃ না, এটি বিদ'আত ও মাকরুহ হবে।      

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৫)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার ছোট ভাইয়ের বয়স যেহেতু ১৭ বছর  সুতরাং তার পিছনে ইক্তিদা করায় নামাজ সহীহ হবে। 
এতে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (20 points)
"মূল মাস'আলায় আসি, গতকাল আসরের নামাজে আমার প্রবল ধারণা ছিলো সে ২য় বৈঠক দেয় নাই,তার প্রবলধারণা ছিলো দিয়েছে, আমার লোকমা দেওয়ায় সে গ্রহণ করে শেষ বৈঠকে সাহু সিজদা দিয়ে নামাজ শেষ করে, পরে আমাকে জানায় তার প্রবল ধারণা সে অবশ্যই দিয়েছে, ফলে তার মতে ৫রাকাত হয়ে গেলো এবং সেই রাকাতেই সিজদায় সাহু দিলো, আমার প্রবল ধারণামতে ২য় রাকাতে বৈঠক না করায় ৪র্থ রাকাতে সিজদায় সাহু দিয়েছে

- এখন এতে নামাজ শুদ্ধ হয়েছে কিনা? নাকি দোহরাতে হবে?

-এতে কার প্রবলধারণা গ্রহণ করতে হবে-(নামাজে এবং নামাজের বাহিরে)

-সে যেহেতু আমার লোকমা গ্রহণ করেছে এক্ষেত্রে সহীহ কারটা ধরা হবে?

- এগুলোর বিস্তারিত মাসায়েল জানাবেন দয়া করে,

এক জায়গায় পেয়েছি,

 "নামাযে রা'কাত বা সেজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে,যে ঐ ব্যক্তির কি এটা প্রথম হয়েছে না মাঝেমধ্যে এমন হয়।যদি প্রথমবার বা কদাচিৎ হয়ে তাহলে উনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে পড়ে নিবেন।

(মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ২/২৮)"

এটি কি তবে প্রায়সময় যেহেতু আমাদের ভূল হয় না- উপরের হাদীসের বিধান কি আমাদের উপর বর্তাবে?

আবার এটি আমাদের ইচ্ছাকৃত কোনো ভূল নয়, এমন ভূল যা আমাদের সন্দেহে পতিত করে অনিচ্ছাকৃতভাবেই।

বিষয়গুলো বিস্তারিত খোলাসা করে মাস'আলা জানাবেন আশা করছি," -এই অংশের উত্তরটা উস্তাদ?

by (565,890 points)
এক্ষেত্রে উক্ত জামাতে আর কতজন নামাজ পড়েছিলো?
তাদের প্রবল ধারণা কি ছিলো?

যদি এক্ষেত্রে আপনি ছাড়াও একাধিক ব্যাক্তির প্রবল ধারণা হয় যে ইমাম ২য় রাকাতে বৈঠক করেনি,সেক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু আদায়ের দরুন নামাজ হয়ে যাবে।
by (20 points)
শুধু আমি আর আমার ভাই ছিলাম
by (565,890 points)
উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করে নিবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...