আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
223 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (26 points)
আমার একটা বিয়ের প্রস্তাব আসে সেখানে পাত্র আমাকে এই প্রশ্ন করে।আমার প্রশ্ন ৪০ দিনের চিল্লা বিদয়াত হবে কিনা এবং মহিলাদের মাস্তুরাত জামায়াত সম্পর্কে জানতে চাই।জায়েজ কিনা?


বিয়ের পর পাত্র প্রতি বছর ১ চিল্লা বা ৪০ দিন তাবলীগ জামাতে সময় দেয়ার জন্য বের হতে চাইলে আপনার অনুভূতি কেমন হবে?

তাবলীগ জামাতে সময় দেয়া উদ্দেশ্য হলো নিজে কিভাবে ঈমান ওয়ালা আমল ওয়ালা মুখলিস দ্বীনের দায়ি হতে পারি এবং সমগ্র দুনিয়ার মানুষ কিভাবে হেদায়েত পেয়ে যায় সেই তলব অন্তরে পয়দা করা।

আপনার কি দ্বীনের দায়ি হওয়ার আগ্রহ আছে?

মাসতুরাত জামাত সম্পর্কে আপনি কিছু জানেন কি?
মাসতুরাত জামাতে স্বামী ও স্ত্রী জোরা, বা মা ও ছেলে জোরা অর্থাৎ এরকম ৫-৭ জোরা একত্রিত হয়ে জামাত বদ্ধ হয়ে সর্বনিম্ন ৩ দিন থেকে ৭ , ১০, ১৫ বা আরও বেশী সময়ের জন্য কোন এলাকায় দাওয়াতের নিয়তে যাওয়া হয়।
পুরুষ রা পুরা সময় মসজিদে অবস্থান করেন এবং পুরুষদের মসজিদে এসে বয়ান শোনার দাওয়াত দেন অপরদিকে মহিলারা পর্দাশীল একটি বাড়িতে অবস্থান করেন যে বাড়ির পুরুষ ব্যক্তি ও মসজিদে থাকেন।

মহিলারা সেই এলাকার সকল নারীদের নিকট দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দেন।

আমি  আমার জীবনসঙ্গীকে সাথে নিয়ে দ্বীনের দায়ি হিসেবে মৃত্যু অবধি কাজ করতে চাই এবং এই কাজের প্রতিদান একমাত্র আল্লাহর কাছেই আশা করি।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

মুহাক্কীক আলেমদের মতে ৪০ দিনের চিল্লা বিদয়াত নয়।

তাবলিগে যাওয়া সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ   

মাস্তুরাত জামাতের বিধানঃ-
মহিলাদের দায়িত্ব হল ঘরে অবস্থান করে সাধ্যমত দ্বীনের খেদমত করা,এবং সন্তানের তা'লিম তারবিয়্যাতের ব্যবস্থা সহ স্বামীর ঘরের হেফাজত করা।

পুরুষের দায়িত্ব হল,বাহিরে অবস্থান করে ব্যবসা-বাণিজ্য,চাকুরী ইত্যাদি সহ যাবতীয় বাহিরের কাজ আঞ্জাম দেয়া।

বর্তমান সময়ে যেহেতু নিজ ঈমান-আমল কে হেফাজত করা এবং সাথে সাথে অন্যকে আ'মলের প্রতি উৎসাহিত করা অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়।অনেক সময় অন্যর অা'মলকে চর্মচক্ষু দ্বারা অবলোকন করার পরই নিজের জন্য আ'মল করা সহজসাধ্য হয়। তাই এই হেকমতের প্রতি লক্ষ্য রেখে তাবলীগ সমস্ত শর্তকে যত্নের সাথে পালনের নিমিত্তে ফুকাহায়ে কিরাম মাস্তুরাত জামাতের অনুমতি দিয়ে থাকেন।

তবে যদি কোনো শর্ত ছুটে যায় বা কোনো শর্তকে যত্নের সাথে আ'মলে নিয়ে আসা না হয়,তাহলে সেক্ষেত্রে মাস্তুরাত জামাতে যাওয়া বৈধ হবে না।

এক্ষেত্রে ফুকাহায়ে কিরাম নিম্নোক্ত জিহাদ ভিত্তিক কিছু হাদীস দ্বারা উক্ত মাস্তরাত জামাতের দলীল দিয়ে থাকেন।যদিও হাদীস গুলো জিহাদ বিষয়ে এসেছে,তথাপি এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে,

আমরা দেখছি পর্দার বিধান আরোপিত হওয়ার পরও মহিলা সাহাবিগণ জিহাদের ময়দানে অংশ নিয়েছেন,তাই তা'লিম তারবিয়্যাত এর মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও শরয়ী শর্তের ভিত্তিতে মহিলাদের জন্য ঘরের বাহিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

 হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,

عن حديث عائشة، كل حدثني طائفة من الحديث، قالت: «كان النبي صلى الله عليه وسلم إذا أراد أن يخرج أقرع بين نسائه، فأيتهن يخرج سهمها خرج بها النبي صلى الله عليه وسلم، فأقرع بيننا في غزوة غزاها، فخرج فيها سهمي، فخرجت مع النبي صلى الله عليه وسلم بعد ما أنزل الحجاب»

তিনি বলেন,যখন রাসূলুল্লাহ সাঃ সফরে বাহির হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করতেন,তখন নিজ স্ত্রীগণের মধ্যে লটারী দিতেন।লটারির মাধ্যমে যার নাম বের হত তাকে নিয়ে সফরে বের হতেন।একবার একটি যুদ্ধে যাওয়ার জন্য আমাদের মধ্যে লটারি দিলে লটারিতে আমার নাম উঠে আসল,তাই আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাথে যুদ্ধে বের হলাম।এটা ছিলো পর্দা ফরয হওয়ার পরের ঘটনা।

সহীহ বুখারী-(শামেলা)২৮৭৯

মহিলাদের জন্য শরিয়তের বিধান হল, বাড়িতে অবস্থান করা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে বের না হওয়া। নবিজি সা. ইরশাদ করেন, মহিলা গোপনীয় বস্তু, সুতরাং যখন সে বাহিরে বের হয়, শয়তান তার দিকে দৃষ্টি দেয়। তাকে এবং তার দ্বারা অন্যদেরকে বিপদগামী করে। -মিরকাত: ৬:২৮২

এজন্য ফকিহগণ অতীব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মহিলাদের ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করেছেন। তারা নামায, রোযা, ওযু, গোসল ইত্যাদির মাসআলা-মাসায়েল মাহরাম বা স্বামী থেকে জেনে নিবে। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে স্বামী কিংবা অভিভাবকের অনুমতিতে পূর্ণ শরয়ি পর্দা রক্ষা করে বাহিরে যেতে পারবে। অবশ্য তাবলীগে যাওয়া মহিলাদের উপর ফরয বা ওয়াজিব না হওয়ায় স্বাভাবিক অবস্থায় তাদের তাবলীগে না যাওয়া উচিত। তদুপরি বর্তমানে বদদ্বীনের সয়লাব চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়া এবং স্বামী কিংবা মাহরামের কাছ থেকে দ্বীনের বিভিন্ন বিষয় জানা সম্ভব না হওয়ায় মহিলাগণ নিম্নোক্ত শর্ত সাপেক্ষে তাবলিগে যেতে পারবেন-

১. নিয়ত শুদ্ধ করা।

২. স্বামী কিংবা অভিভাবকের পূর্ণ অনুমতি থাকা।

৩. সুগন্ধিযুক্ত আতর, সেন্ট ইত্যাদি ব্যবহার না করা।

৪. মাহরাম সাথে থাকা।

৫. সর্বদা পূর্ণ শরয়ি পর্দা রক্ষা করা।

৬. অবস্থান স্থলে পর্দার এমন ব্যবস্থা থাকা, যাতে সেখানে পর পুরুষের যাতায়াত মোটেও না হয়।

৭. তালিম নিচু স্বরে করা; যাতে তাদের আওয়াজ পর পুরুষ শুনতে না পায়।

৮. স্বামী ও সন্তানদের হক নষ্ট না করা।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত)

বিস্তারিত জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
edited
কোনো শর্ত ছুটে যায় বলতে?মহিলাদের মাস্তুরাত জামাতে যাবার শর্তগুলো কি?
আর মহিলাদের মাস্তুরাতে জামাতে অংশগ্রহণ কোন ধরনের আমলের মধ্যে পড়ে সুন্নাত/নফল?
by (565,890 points)
শর্তাবলী জবাবে উল্লেখ আছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 252 views
...