আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
78 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহু
এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চাচ্ছি যা খুবই আর্জেন্ট আমার জন্য সিদ্ধান্ত   গ্রহণের ক্ষেত্রে..
আমি এবার অনার্স কমপ্লিট করলাম ফাইনাল শেষ রেজাল্টও দেওয়া শেষ।।  তবে কোনোভাবে আমি চাচ্ছি না এই সহশিক্ষা এই জাহলিয়াতে আর থাকতে  এমএস করব না আমি।  কিন্তু আমার পরিবার আমাকে কোনোভাবে বুঝতেছে না তারা মানসিক টর্চার এমনকি ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল, রাগারাগি, চিল্লাচিল্লি, সুইসাইড এর ভয় দেখানো এসব চলছেই আমি এতসব মানসিক টর্চার মেনে নিতে পারছি না।। দুর্বল হয়ে যাচ্ছি একবার ভাবি এইসব থেকে বাচতে এমএস করব, আরেকবার মাথায় আসে নাহ সবকিছু আল্লাহর জন্য তো আমি এসব সহ্য করেই চেষ্টা করে যায় বুঝানোর।
এভাবে পেরেও উঠছি না অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি জ্বর নানা রকম সমস্যা।। বাবা মার মাঝে ঝগড়া রাগ তাদের না খেয়ে থাকা।  সবকিছু দুর্বল করে দিচ্ছে।। বাট আমি এগুলোর কারণে যে মাস্টার্স করব এমনটা কখনোই না।। সেটা আমি করতে পারব না৷  সেখানে গেলেও মানসিক রোগী হয়ে যাব ঐসব আর মানতে পারব না এতকিছু বুঝার পরেও।। কিন্তু তাদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কি এসব ঠান্ডা করে আমি যাব সেখানে পরে ফিরে আসব?
বলে রাখি আমি বিবাহিত। তবে সেখানে এখনও তুলে নেওয়া হয়নি বাবা মাও দিবে না ।। মাস্টার্স করব চাকরি করব এরপর সংসার।। রেজাল্ট ভালো থাকায় টিচারশিপের সুযোগ থাকায় স্যার রা পর্যন্ত বাসায় আসছে আরও আমার সবকিছু এলোমেলো করে দিয়ে গেছে। আমার বাবা মা পরিবার ইসলামিক জ্ঞান নেই বললেই চলে। তারা দুনিয়াবি কথা ভাবে।। তাদের মেয়ের ভালো পজিশন নাম ডাক।। তবে বলে নেই একসময় তা আমিও ভাবতাম হয়তো।। পারিবারিক অবস্থাও ভালো নয়।।  আমি বড় মেয়ে, ছোট ভাই এডিক্টেড টাকা নষ্ট করে অনেক, ছোট বোন প্রতিবন্ধী।।  তাদের সব ভরসায় আমি।। কিন্তু রিজিক তো আল্লাহ নির্ধারিত।। সেটা আমি নি কিছু না করলেও তো চলমান থাকবে।। কিছু করার মতো মানসিকতা আমার নাই।। বয়সও হয়ে গেছে সংসারে এখও ডুকতে পারিনি। তাহলে সেই সংসারই আমি কবে করব।। তাদের এসব মাথা ব্যথা নাই।
এখন আমি কি এই অবস্থা থেকে বের হতে মিথ্যা বলব যে আমি এমএস করব আমার ইচ্ছামতো টিচার দিয়ে যেখানে পর্দা থাকবে মহিলারা থাকবে এসব বুঝিয়ে বের হয়ে হাজবেন্ডের কাছে চলে যাব? ধোকা দিব? সেই সাহসটাও পাচ্ছি না? তবে আমি মেনেও নিতে পারব না আমি আবার এসব জাহলিয়াতে ফিরে যাব সহশিক্ষা কনটিনিউ করব।
আমার জাওজ এখানে আমাকে নিতে আসলেও দিবেনা।। বরং সব দোষ জাওজের দিচ্ছে তার জন্য আমি এসব করছি।।  আসলে আরও টর্চার গালাগালি তারওপর করে এমএস করাতে রাজি করাবে ।। তাই সেদিক থেকেও আসা যাবে না।।।
এখন আমার কি করা উচিত যদি একটু কোনো আলেম পরামর্শ দিতেন।। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তার বিধানমতে আমার কি করা উচিত।। মিথ্যা বলে জাওজের কাছে যাব নাকি এইভাবেই এইসব সহ্য করব না মানা আগে পর্যন্ত??
এখানে যতদিক আছি মানসিক টর্চার করেই যাবে আমাকে মানানোর জন্য।। এমনকি আমার ক্ষতি বা তাদের নিজের ক্ষতি করে হলেও।। সেসবও আমি ভয় পাই।।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহিলাদের জন্য স্বামীর অনুমতি ব্যাতিত ঘর থেকে বের হওয়া,প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করা  নাজায়েজ। 

প্রয়োজন, অপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নি, যার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়।

 আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭) 

الترغيب والترهيب للمنذري (3/ 37):
"وروي عن ابن عباس رضي الله عنهما أن امرأة من خثعم أتت رسول الله صلى الله عليه وسلم، فقالت: يا رسول الله! أخبرني ما حق الزوج على الزوجة؟؛ فإني امرأة أيم فإن استطعت وإلا جلست أيماً! قال: فإن حق الزوج على زوجته إن سألها نفسها وهي على ظهر قتب أن لا تمنعه نفسها، ومن حق الزوج على الزوجة أن لا تصوم تطوعاً إلا بإذنه فإن فعلت جاعت وعطشت ولا يقبل منها، ولا تخرج من بيتها إلا بإذنه فإن فعلت لعنتها ملائكة السماء وملائكة الرحمة وملائكة العذاب حتى ترجع، قالت: لا جرم ولا أتزوج أبداً". رواه الطبراني".
সারমর্মঃ
ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে রেওয়াত,
খাসয়াম গোত্রের এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলো ইয়া রাসুলুল্লাহ সাঃ, 
মহিলাদের উপর স্বামীর হক কি কি?
রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেন,,,,,,,,,,,
ঘর থেকে বের হবেনা,হ্যাঁ স্বামী অনুমতি দিলে বের হবে,যদি অনুমতি ছাড়াই বের হও,তাহলে ঘরে ফিরে আসা পর্যন্ত আসমানের ফেরেশতা,রহমতের ফেরেশতা,আযাবের ফেরেশতা তার জন্য লা'নত করেন,,,,

শরীয়তের বিধান হলো স্বামীর বৈধ আদেশ পালন করা ওয়াজিব।  

হাদীস শরীফে  এসেছে-

একবার এক নারী সাহাবী রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে। যাওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন, জী, আছে। নবীজী বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন? সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন, فانظري أين أنت منه، فإنما هو جنتك ونارك
 হাঁ, তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম। (মুআত্তা মালেক, হাদীস ৯৫২; মুসনাদে আহমাদ, ৪/৩৪১ হাদীস ১৯০০৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২৭৬৯; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ১৪৭০৬)

অপর হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
إذا صلت المرأة خمسها ، وصامت شهرها ، وحصنت فرجها ، وأطاعت زوجها قيل لها : ادخلي الجنة من أي أبواب الجنة شئت
নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত  নামায ঠিকমত আদায় করবে, রমযানের রোযা রাখবে,  আপন লজ্জাস্থানের হেফাযত করবে,  স্বামীর আনুগত্য করবে তখন সে  জান্নাতের যেই দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। (সহীহ ইবনে হিব্বান,  হাদীস ৪১৬৩)

আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার স্বামী আপনাকে নিয়ে যেতে আগ্রহী। তিনি আপনাকে সহশিক্ষা কন্টিনিউ করতে দিতে চাচ্ছেননা।

সুতরাং এক্ষেত্রে আপনি যদি স্বামীর কাছে চলে যান,সহশিক্ষা কন্টিনিউ না করেন,সেক্ষেত্রে এমতাবস্থায় বাবা মার আদেশ অমান্যের দরুন আপনার গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...