আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
78 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম, উস্তাদ

আমার মা বাবা আমাকে মেডিকেলে পড়াতে চায়, আমি না চাইলেও এখানে প্রশ্ন করার পর আপনি বলেছিলে জেনারেল পড়া চালিয়ে যেতে এবং পাশাপাশি শরিয়াহ এর ইলম অর্জন করতে। আমি তাই করছি।

১/যদিও আমি মেডিকেলে পড়তে চাইনা, কারণ এতে আমি টিকে থাকতে পারবোনা। কিন্তু আপনার কথামত মা বাবার বাধ্য হয়ে আল্লাহ্‌র ওপর তাওয়াককুল করে পরীক্ষা দিবো এডমিশন, আল্লাহ যেখানে কল্যান কর মনে করেন সেখানে ভর্তি করিয়ে দিবেন ইং শা আল্লাহ্‌। তাই নিজে চেষ্টা করে যেখানে যেখানে দেওয়ার পরীক্ষা দিবো। এ নিয়ত কি ঠিকাছে?

২/ আমি দিনের একটা সময় ৫-৭ ঘন্টা জেনারেল পড়া পড়ি । আর বাকি অধিকাংশ সময় দ্বীনই ইলম অর্জন ও আমলে ব্যস্ত থাকি। যেদিন জেনারেল পড়া না থাকে অইদিন সারাদিন জেনারেল পড়া পড়ি না। কিন্তু আমার মা তেমন কিছু না বল্লেও আমি বুঝি সে আমার ইলম অর্জনএ সময় ব্যয় পছন্দ করছেনা। আবার সেভাবে বাধা দেয় ও না। মাঝে মাঝে বলে ,সবসময়য় না । এখেত্রে কি করনীয়?

৩/ আমার (অমুসলিমকে) দাওয়াহ দেওয়া যদি মা বাবা পছন্দ না করে সেক্ষেত্রে কি করবো?( দাওাহ দেওয়া তো থামাতে পারবোনা)

৪/ নফল ইবাদতে বা রোজায় মা বাবা অকারনে বা শুধু জেনারেল পড়ার অজুহাতে বাধা দিলে কি তা মানতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
আপনার এই নিয়ত ঠিক আছে।

(০২)
আপনি দ্বীনি ইলম অর্জনের সময় কমিয়ে দিতে পারেন।

২/৩ ঘন্টা যথেষ্ট, আলহামদুলিল্লাহ। 

(০৩)
আপনি শরীয়তের গন্ডির আওতায় থেকে দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে।

ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)

ইমাম বোখারী রহঃ হাসান বসরী রহঃ থেকে বর্ণনা করেন,
" إن منعتْه أمُّه عن العشاء في الجماعة شفقة:لم يطعها "
যদি মা তার সন্তানের কল্যাণ কামনায় তাকে অন্ধকারে এশার জামাতে যেতে বাধা প্রদান করে,তাহলে এক্ষেত্রে মায়ের আদেশকে মানা যাবে না।(সহীহ বোখারী-১/২৩০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
নফল এবং মুস্তাহাব ইবাদত সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই যে,ইহা কামিল ঈমানের পরিচায়ক এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের অন্যতম একটি মাধ্যম।এর বিপরীতে আল্লাহ তা'আলা সওয়াব প্রদান করবেন।ঐ সমস্ত নফল ইবাদত যা ফরয ইবাদতের জিনস থেকে হয়,যদি ফরয ইবাদতে কোনো প্রকার ত্রুটি থাকে,তাহলে ঐ নফল গুলো সেই ফরযের ত্রুটিকে পুরণ করে দেয়।যেমন নফল হজ্ব ফরয হজ্বের ঘাটতিকে পুরণ করে দেয়।ঠিকতেমনি নফল নামায ফরয নামযের ঘাটতিকে পূর্ণ করে দেয়।নফল সদকাহ ফরয যাকাতের ঘাটতিকে পূর্ণ করে দেয়,ইত্যাদি ইত্যাদি।সুতরাং কোনো মুসলমানের জন্য নফল এবং মুস্তাহাব ইবাদতকে পরিত্যাগ করা কখনো উচিৎ হবে না।
এখন প্রশ্ন জাগে যে,মাতাপিতা নফল ইবাদতে বাধা প্রদান করলে,সন্তানের জন্য সেই নফল ইবাদত করার বিধান কি?

★শরীয়তের বিধান হলো,মাতাপিতা যদি সন্তানের খেদমতের মুহতাজ থাকে,এবং সন্তানের কাছে সহযোগিতার আবেদন করে,অন্যদিকে যদি সন্তান এমন কোনো নফল ইবাদতে ব্যস্ত হয়ে যায় যা মাতাপিতার খেদমতের অন্তরায় থাকে,তাহলে এমতাবস্থায় মাতাপিতার খেদমতই অগ্রগণ্য হবে।সন্তানের জন্য নফল ইবাদতে লিপ্ত হওয়া জায়েয হবে না।কেননা এক্ষেত্রে মাতাপিতার খেদমতে নিজেকে ব্যস্ত রাখা ওয়াজিব।সুতরাং নফলের উপর ওয়াজিবকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

তবে যদি মাতাপিতা সন্তানের খেদমতের মুহতাজ না থাকে,বা নফল ইবাদতে বাধা প্রদানের কোনো হাজত না থাকে কিংবা এতে মাতাপিতার কোনো ফায়দা না থাকে,এবং এ ব্যাপারে শরীয়তের কোনো আকার ইঙ্গিত না থাকে,তাহলে এমতাবস্থায় মাতাপিতার উক্ত বিধিনিষেধের উপর নফল ইবাদতকে তারজিহ দেয়াই উত্তম হবে।সুতরাং মাতাপিতার আদেশকে না মেনে তখন নফল ইবাদতই উত্তম হবে।হ্যা অবশ্যই মাতাপিতার সাথে উত্তম শব্দ ব্যবহার করতে হবে। তাদেরকে হেকমতের সাথে নরম ভাষায় নফল ইবাদতের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য বুঝাতে হবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এক্ষেত্রে নফল ইবাদত বা নফল রোজা রাখতে গিয়ে আপনার জেনারেল পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটলে, রেজাল্ট খারাপ আসলে,বা মাতা পিতা ও আপনার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না আসলে,মাতা পিতার আদেশ মানার স্বার্থে নফল ইবাদত বা নফল রোজা কমানোর পরামর্শ থাকবে। 

এক্ষেত্রে তাদের আদেশ মানতে নফল ইবাদত না করা বা কম করাতে কোনো গুনাহ হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...