আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,800 views
in খাদ্য ও পানীয় (Food & Drink) by (43 points)
আসসালামুয়ালাইকুম।
আমরা নতুন একটা বাসায় ভাড়া উঠেছি। এই বাসায় এসে আমরা খেয়াল করি বাসার সবগুলো বাথরুম পশ্চিমমুখি করা। এই অবস্থায় আমরা বাধ্য হয়েই বাথরুমগুলো ব্যবহার করছি। এতে কি আমরা গুনাহগার হব? আমরা বাড়ির মালিকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলব। তবে উনি রাজি না হলেও আমরা খুব শিগ্রই বাসাটি ছাড়তে পারছি না।  এমন অবস্থায় আমাদের করনীয় কি হতে পারে?


আর বাসাটার থেকে ক্বিবলা টা একটু বাঁকানো। মানে ওয়াল বরাবর ২৫-৩০ ডিগ্রি বাঁকানো। এজন্য কি আমার একদম ক্বিবলা বরাবর রেখেই নামায পড়তে হবে নাকি সামান্য ডানে বা সামান্য ডানে ক্বিবলা থাকলেও সমস্যা হবে না?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো কিবলা দিকে মুখ,পিঠ ফিরিয়ে পেশাব পায়খানা করা নাজায়েজ। 
 হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
حَدَّثَنَا مُسَدَّدُ بْنُ مُسَرْهَدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، رِوَايَةً قَالَ " إِذَا أَتَيْتُمُ الْغَائِطَ، فَلَا تَسْتَقْبِلُوا الْقِبْلَةَ بِغَائِطٍ، وَلَا بَوْلٍ، وَلَكِنْ شَرِّقُوا أَوْ غَرِّبُوا " . فَقَدِمْنَا الشَّامَ، فَوَجَدْنَا مَرَاحِيضَ قَدْ بُنِيَتْ قِبَلَ الْقِبْلَةِ فَكُنَّا نَنْحَرِفُ عَنْهَا وَنَسْتَغْفِرُ اللهَ

আবূ আইয়ূব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘তোমরা পায়খানায় গিয়ে কিবলামুখী হয়ে পায়খানা-পেশাব করবে না, বরং পূর্ব অথবা পশ্চিমমূখী হয়ে বসবে।’’ আবূ আইয়ূব (রাঃ) বলেন, আমরা সিরিয়ায় গিয়ে দেখতে পেলাম, সেখানকার শৌচাগারগুলো কিবলামুখী করে বানানো। সেজন্য উক্ত স্থানে আমরা একটু বেঁকে বসতাম এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইতাম।
বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ পায়খানার সময় ক্বিবলাহমুখী না হওয়া, হাঃ ১৪৪,আবু দাউদ ০৯)
,
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا أَتَيْتُمُ الْغَائِطَ فَلاَ تَسْتَقْبِلُوا الْقِبْلَةَ بِغَائِطٍ وَلاَ بَوْلٍ وَلاَ تَسْتَدْبِرُوهَا وَلَكِنْ شَرِّقُوا أَوْ غَرِّبُوا " . فَقَالَ أَبُو أَيُّوبَ فَقَدِمْنَا الشَّأْمَ فَوَجَدْنَا مَرَاحِيضَ قَدْ بُنِيَتْ مُسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةِ فَنَنْحَرِفُ عَنْهَا وَنَسْتَغْفِرُ اللَّهَ

আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন মলত্যাগ করতে যাও, তখন মলত্যাগ বা পেশাবের সময় কিবলাকে সামনে বা পেছনে রেখে বসো না, বরং পূর্ব অথবা পশ্চিম দিকে ফিরে বস। আবু আইয়ূব (রাঃ) বলেন, আমরা সিরিয়াতে এসে দেখতে পেলাম এখানকার পায়খানাগুলো কিবলার দিকে করে স্থাপিত। অতএব আমরা কিবলার দিক হতে ঘুরে যেতাম এবং আল্লাহ তা'আলার কাছে ক্ষমা চাইতাম। —সহীহ। ইবনু মাজাহ– (৩১৮), বুখারী ও মুসলিম,তিরমিজি  ০৮)

قوله : (وَلكِنْ شَرِّقُوْا أَوْ غَرِّبُوْا) অর্থাৎ- তোমরা পূর্ব পশ্চিম দিকে মুখ করে পেশাব-পায়খানা কর। এ আদেশটি মূলত মাদীনাবাসী এবং যাদের ক্বিবলাহ্ (কিবলাহ/কিবলা) মাদীনাবাসীদের ক্বিবলার দিকে তাদের জন্য প্রযোজ্য।

এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যে, দিকাভিমুখী হলে ক্বিবলাহ্ (কিবলাহ/কিবলা) সামনে বা পেছনে হয় না সেদিকে মুখ করে স্বাভাবিক প্রয়োজন (তথা পেশাব-পায়খানা) পূরণ করা যা দেশভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। (অর্থাৎ- প্রত্যেক দেশের অধিবাসীরা সেদিকে মুখ করে স্বাভাবিক প্রয়োজন পূরণ করবে যে দিকাভিমুখী হবে (ক্বিবলাহ্ সামনে বা পেছনে হবে না)। হাদীসটি বাহ্যিকভাবে খোলা ময়দান ও প্রাচীর বেষ্টিত টয়লেটের মাঝে কোন পার্থক্যকরণ ছাড়াই স্বাভাবিক প্রয়োজন পূরণের সময় ক্বিবলাকে সামনে বা পিছনে করতে নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছে   
کرہ تحریما استقبال قبلة واستدبارہا ل أجل بول أو غائط (درمختار) وفي ”رد المحتار“ أي جہتہا کما في الصلاة فیما یظہر ونصّ الشافعیة علی أنہ لو استقبلہا بصدرہ وحوّل ذکرہ عنہا وبال لم یکرہ بخلاف عکسہ اھ أي فالمعتبر الاستقبال ․․․ فلیس في الحدیث دلالة علی أن المنہيّ استقبال العین کما لا یخفی الخ (رد المحتار علی الدر المختار ۱/۵۵۴، فصل في الاستنجاء، ط: زکریا) وراجع ”در ترمذی“ (۱/۱۸۹)
সারমর্মঃ কিবলা দিকে মুখ,পিঠ ফিরিয়ে পেশাব পায়খানা করা মাকরুহে তাহরিমি। 
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনারা আপাতত ঐ বাথরুম গুলো ব্যবহার করবেন,বসার সনয় বেকে বসার চেষ্টা করবেন,যদি জিবলা থেকে ৪৫ ডিগ্রি বেকে বসা যায়,তাহলে তো কোনো সমস্যাই নেই।  
আর যদি তাহা সম্ভব না হয়,তাহলে যতটুকু সম্ভব হয়,বেকে বসবেন,আর আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার করবেন।
,
পুরুষদের যেহেতু বাহিরে যেতে হয়,তাই তারা অধিকাংশ সময় বাহিরেই বাথরুম সেড়ে আসার চেষ্টা করবেন,যাতে বাসার এই বাথরুম বেশি ব্যবহার করতে না হয়।
,

(০২)
নামাযে কিবলামুখী হওয়া নামায সহীহ হবার জন্য শর্ত। কিবলামুখী না হলে নামায শুদ্ধই হবে না। 

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ     
قَدْ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ ۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا ۚ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّوا وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ ۗ وَإِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَيَعْلَمُونَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ [٢:١٤٤] 

নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে। {বাকারা-১৪৪}
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 

উলামায়ে কেরাম কিবলামুখী হবার একটি মূলনীতি বের করেছেন, তা হল বাইতুল্লাহ থেকে উভয় পাশ হিসেবে ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেলে নামায হবে না। ডান পাশে ৪৫ ডিগ্রি ও বাম পাশে ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘুরে যাবার আগ পর্যন্ত নামায শুদ্ধ হবে। তবে এর চেয়ে বেশি ঘুরে গেলে নামায হবে না। {জাওয়াহিরুল ফিক্বহ-১/২৪২-২৪৪ আহসানুল ফাতওয়া }
,
আরো জানুনঃ 
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কিবলা থেকে সামান্য ডানে বা সামান্য ডানে ২৫-৩০ ডিগ্রি বেকে নামাজ পড়া জায়েয আছে।
এতে নামাজ হয়ে যাবে। 
তবে একদম ক্বিবলা বরাবর রেখেই নামায পড়তে পাড়লে সব চেয়ে ভালো হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...