১.আমি বাবার বাসায় ছিলাম আমার স্বামী আমাকে বাসায় আসতে বলে তখন আমি বলি আমি ১দিন পরে যাব তখন আমার স্বামী রাগ করে বলে "তুমি ওই বাসায়ই থাকো আর আসা লাগবে না"(বাসায় এসে তাকে এটা নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে তুমিতো তোমার বাবার বাসাতেই বেশি থাকো,তাইলে থাক ওইখানেই।আমিতো অন্য কিছু মনে করে বলিনি)
২. একদিন দুজন মিলে ঘর পরিষ্কার করার সময় কথার ফাকে আমি বলি 'তুমি যদি আর একটা বিয়ে কর তবে আমি যামুগা' তখন আমার স্বামী বলে 'যাওগা'
উনাকে জিজ্ঞাসা করলে তালাকের নিয়ত নেই বলে।
৩.আমার স্বামীকে আমি অন্য কোনো পুরুষের সাথে তুলনা করলে তিনি আমাকে বলতো "তবে তাকেই বিয়ে করতা আমাকে করস কেন/ যাও তাকেই বিয়ে করগা/যাও তাইলে বিসিএস ক্যাডার বিয়ে করোগা(আমি তাকে বিসিএস প্রস্তুতি নিতে বলায়)"
পরে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে আমার এই কথায় খুব বেশি হলে আমার গুনা হবে কারণ স্বামী থাকা অবস্থা মেয়েরা অন্য বিয়ে করতে পারেনা। অর্থাৎ তার তালাকের নিয়ত ছিলো না এমনটাই খুজায়। তখন আমিও কেনায়া বাক্য সম্পর্কে জানতাম না। কেনায়া বাক্য যে নিয়তের উপর নির্ভর করে তাও জানতাম না। আমার স্বামীও জানতেননা। ইউটিউবে একটা ভিডিও দেখেছিলাম তার ভিত্তিতেই স্বামীর এইসব কথার দ্বারাও যে তালাক হয় এইটুকু বুঝেছিলাম। তখন আমি স্বামীকে আমার সন্দেহের কথা বলি তিনিও একটু টেনশনে পরে যায় তারপর আমার স্বামী বলে যদি কিছু হয় তবে তো আমার সাথে আর থাকতে পারবা না।(কারণ এমন কথা অনেকবার বলেছে) তখন দুইজনেই টেনশনে পরে যাই আর ইউটিউব/ফতোয়া সাইডে এই বিষয়ে কোনো কিছু পাওয়া যায় কিনা খুজতে থাকি। তখন আমার স্বামী আমার হাত ধরে আমি তাকে আমার হাত ধরতে দিই না বলি যে ধইর না (ধরতে দেইনা কারণ যে বিষয় নিয়ে সন্দেহে আছি তালাক পতিত হলো কিনা সেটা আগে সমাধান হোক)। তখন আমার স্বামী ওড়না এগিয়ে দিয়ে বলে "নাও তাইলে পর্দাও করো"(তখন আমার মনে হয়েছিলো আমার স্বামী এই কথা দ্বারা আমার হাত ধরতে না দেওয়াকে রিজেক্ট করেছে)
তখন আমি তার হাত থেকে ওড়না ফেলে দিয়ে তাকে ঘেষে বসে পরি। তারপর আমরা ফতোয়া বিভাগ থেকে কেনায়া বাক্য সম্পর্কে জানতে পারি যে তা নিয়তের উপর নির্ভরশীল। তখন আমার স্বামী বলে আমার তো তালাকের কোনো নিয়ত ছিলো না।
পরে জানতে পারি 'পর্দা করো' এটাও কেনায়া শব্দ। এতো এক্ষেত্রে যে আমার স্বামী ওড়না এগিয়ে দিয়ে বলল যে "নাও তাইলে পর্দাও কর" এটাও কেনায়া শব্দ।
আমি এটা নিয়েও উনাকে জিজ্ঞাসা করেছি উনি তালাকের নিয়ত অস্বীকার করেছে।
বলেছে একটা সমস্যা হয়েছে সমাধান হোক এই জন্য বলেছে।
৪/ স্বামী যদি অভিমান করে বলে "আমার কেউ নাই/আমিতো একাই/আমার বরো কেউ আছে না,আমি কে।
উনাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়নি।
এইসব কথা যখন বলে তখন তালাকের কোনো নিয়ত বুঝা যায়নি তবে স্ত্রীর উপর অভিমান বুঝা গেছে।
৫.স্বামী যদি বলে আমি কে? স্ত্রী বলে " আমার হাসবেন্ড" তখন স্বামী যদি মাথা নেড়ে না করে মুখে কিছুই উচ্চারণ করেনা তবে কি সমস্যা হবে? স্ত্রী সাথে সাথে এইটা ধরে ফেলে আর জিজ্ঞাসাসূচক প্রশ্ন করে স্বামী তালাকের উদ্দেশ্য অস্বীকার মুলক আচরণ / শব্দ করে(উহু এই জাতীয়)
৬.স্ত্রী কিছু হলেই চলে যাব চলে যাব বলে।
স্বামী স্ত্রীকে বলে তুমি চলে গেলে তোমারই সমস্যা হবে,তুমিই আফসোস করবা, আমার কিছুই হবেনা,তখন স্ত্রী প্রশ্ন করে আমি চলে গেলে তোমার কিছুই হবে না? তখন স্বামী উত্তরে বলে 'না'
(উল্লেখ যে এই কথপোকথন কোনো ঝগড়ার সময় না। কিছু হলেই স্বামীকে ছেড়ে চলে যাবার কথা বলে তাই পরবর্তীতে স্বাভাবিক সময় স্বামী স্ত্রীকে বুঝায় চলে গেলে বাস্তবতা কি হবে)
৭. স্ত্রী স্বামীকে যদি বলে আজ থেকে তোমার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই.
(স্ত্রী তালাকের অধিকার প্রাপ্ত নয়)
স্বামী উত্তরে তখন কিছুই বলে না তবে পরে দু:খ করে বলে এটা তুমি কি বললা।
স্ত্রীর এমন কথায় কিছু হবে ওস্তায?
৯. স্ত্রী যদি চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্বামীকে তার দেওয়া মোহর ফিরিয়ে দিতে চায় কিন্তু স্বামী কোনো ভাবেই ফিরত নেয়না তবে কি কোনো সমস্যা হবে?(স্ত্রী তালাকের অধিকার প্রাপ্ত নয়)
১০.স্বামীর শারীরিক দুর্বলতার জন্য সে হীনমন্যতায় ভুগে আর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করে এভাবে আর কতোদিন আমার সাথে থাকবা? উত্তরে স্ত্রী কিছু বলেছিলো নাকি চুপ ছিলো স্পষ্ট মনে না থাকলে করনীয় কি?এতে কি তালাক পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে?
১১. স্ত্রী কোনো কারণে রাগ করে থাকলে স্বামী তার কাছে এসে জড়িয়ে ধরলে স্ত্রী যদি বলে যাও আমার কাছে আসবা না, ভালোলাগছে না,যাও এখান থেকে/ আমাকে ধরবা না/ আর কোনোদিন আমার কাছে আসবা না/ কোনোদিন আমাকে ধরবা না/সহবাস না করার কথা বলে।তখন স্বামী স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে(জড়িয়ে ধরা থেকে)দূরে গিয়ে বসে আর বলে আচ্ছা যাও আর না আসলাম/না ধরলাম/ আমার কোনো সমস্যা নাই আমি থাকতে পারব(সহবাস না করে)/ যাও আর কোনোদিন আসবনা/আর কোনোদিন করবনা(সহবাস করবে না বুঝিয়েছে মুখে সহবাস উচ্চারণ করেনি)
স্বামীর এই ক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত না থাকলে কি কোনো সমস্যা হবে?
(স্বামী রাগান্বিত অবস্থা উত্তর দেয়নি রবং স্ত্রীর রাগ ভাংগানোর চেষ্টা করছিলো)
১৩. শাশুড়ীর সাথে সমস্যা হয়েছিলো, তাই স্বামী স্ত্রীকে বলে" রেডি হও,চলো বাসায় দিয়ে আছি/বাসায় যাওগা" স্ত্রী রেডি হয় আর কান্না করে বলতে থাকে তুমি ভালো থেকো আমার জন্য দোয়া কইরো আমিও তোমার জন্য দোয়া করি, তুমি যেনো ভালো কাওকে পাও আমাকেও যেনো আল্লাহ ভালো কাউকে মিলিয়ে দেন।
(আজকে চলে গেলে স্ত্রী একবারেই চলে যাবে এমনই বুঝায় স্বামীকে)।তখন স্বামী বলে আমিতো বলেছি আমি" নিয়ে যাব" (যেখানে চাকরি করে সেখানে ভাড়া বাসায় রাখবে)
স্বামী আর সেদিন বাবার বাসায় দিয়ে আসেনা। আর স্ত্রীর কাছে মাফ চায়।
(অনেকদিন পর এইনিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে বাসায় সমস্যা কেমনে থাকবা এই বাসায় তাই দিয়ে আসতে চেয়েছিলাম,তালাকের ইচ্ছা অস্বীকার করে)
১৪. স্ত্রী কিছুদিন বাবার বাসায় আসতে চাইলে স্বামী যদি বলে "চলে যাবা/সত্ত্যি আমাকে রেখে চলে যাবা/ যাও, যাবাই যখন তখন তাড়াতাড়ি মায়া ত্যাগ করাই ভালো/যাও যাবাই তো যাও"
এখানে তালাকের নিয়ত বুঝা যায়নি। কথাগুলো প্রায়ই বলে। স্ত্রী কিছুদিনের জন্য যাবে তাই তার কষ্ট হচ্ছে ভালোলাগছে না এই অনুভূতির প্রকাশ বুঝা যায়।যখন পড়াশোনার চাপ থাকে তখন যাওয়ার তারিখ হলে খুশি হয়েও বলে যাও যাও যাও। মানে আমি বাসায় গেলে সে মনোযোগ দিয়ে একা ঘরে পড়তে পারে।
(এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি)
১৫. বাড়িতে মিস্ত্রি কাজ করছিলো,আমি খেয়াল করিনি,রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। মিস্ত্রি হয়তো আমাকে বেপর্দা অবস্থায় দেখে ফেলে,এটা আবার আমার স্বামী দেখে,তো তিনি আমার সাথে খুব রাগান্বিত হন,আমি তার কাছে ক্ষমা চাই,বলি যে আমি খেয়াল করিনি ভুল হয়ে গেছে আর হবেনা। কিন্তু তিনি তবুও মাথা গরম করে আমার সাথে কথা বলে,তো আমিও এক পর্যায়ে মাথা গরম করে ফেলি আর বলি বাসায় চলে যাব তখন আমার স্বামী বলে যাওগা।
স্বামীকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়নি।
১৬.স্ত্রী স্বামীর সাথে রাগ করে কথা বন্ধ করে রাখে তখন স্বামী কোনো খাবার স্ত্রীকে ভালোবেসে জোর করে খাওয়াতে চায় কিন্তু স্ত্রী খেতে চায় না তবুও স্বামী জোড় করতে থাকে তখন স্ত্রী বলে "অধিকার দেখাবানা"। তখন স্বামী যদি বলে 'আমি অধিকার দেখাইনা আমার বরো অধিকার আছে না'
এবিষয়ে উনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো উনি তালাকের নিয়ত অস্বীকার করে ।
১৭. পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের সাথে সমস্যা হলে তার প্রেক্ষিতে স্বামী যদি জিজ্ঞাসা করে এখন কি চাও/করবে?(যেহেতু বাসায় সমস্যা হচ্ছে তো এই বাসায় থাকবে নাকি তোমাকে নিয়ে অন্য কোথাও চলে যাব,এই উদ্দেশ্যে প্রশ্নটা করা)
উত্তরে স্ত্রী যদি বলে আমি থাকব না(মানে স্বামীর সাথেই আর থাকবে না)
স্বামী: আমার সাথেই থাকবা না?(অবাক হয়ে)
স্ত্রী:না
স্বামী : তাইলে আমি আর কি করতে পারি( হতাশ হয়ে)
এই কথোপকথনে কি কোনো সমস্যা হবে ?স্বামীকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়নি।
১৮. স্ত্রীকে বাবার বাসা থেকে শশুড় বাড়িতে নিয়ে আসার সময় রাস্তায় স্ত্রী স্বামীর সাথে মেজাজ দেখায় তখন স্বামী রেগে বলে 'যাও ওই বাসাতেই যাও, ওইখানে থাকলেই ভালো থাক" (বাবার বাসায় থাকলে স্ত্রী স্বামীর সাথে ভালো ব্যবহার করে কিন্তু শশুড়বাড়িতে শাশুড়ীর সাথে মনমালিন্যর জন্য স্বামীর সাথে খারাপ ব্যবহার হয়ে যায়।
এই বিষয়েও জিজ্ঞাসা করা হয়নি।
১৯. স্ত্রীর তালাকের অধিকার না থাকলেও কি স্ত্রী নিজের উপর তালাক নিতে পারবে?
২০. অনেক সময় স্ত্রী স্বামীকে ফোন দিলে স্বামী খুনসুটির সুরে স্ত্রীকে বলে "আপনি কে, কে আপনি,আপনাকেতো চিনিনা" উত্তরে স্ত্রীও মজা করে বলে"অপরিচিতা"
এই ধরবের কথপোকথন প্রায়ই হয়।
স্বামী বলে চিনিনা/চিনলাম না তাই স্ত্রীকে তুমি করে বললে স্ত্রীও মজা করে বলে অপরিচিত মানুষকে আপনি করে বলতে হয়।
ওস্তায এমন কথপোকথনে কি কোনো সমস্যা হবে/এমন কথপোকথনে মজা করা কি ঠিক?
২১.স্বামী স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে ছিলো, রাত ৩:৩০ শের দিকে স্ত্রীর উঠে পরবে তাই স্বামীকে বলে "ছাড় আমি উঠব"
তখন স্বামী স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে (জড়িয়ে ধরা থেকে)অন্য পাশ ফিরতে ফিরতে বলে"যাও তোমাকে ছেড়ে দিলাম" স্ত্রী সাথে সাথেই কথাটি ধরে আর জিজ্ঞাসা করে কিন্তু সে তালাকে নিয়তে ছেড়ে দেওয়া বুঝাইনি বলে জড়িয়ে ধরা থেকে ছেড়ে দেওয়ার বুঝিয়েছে।
২২.স্ত্রী রাগ করায় স্বামী স্ত্রীর বাহু শক্ত করে ধরে। স্ত্রী তখন স্বামীর হাত থেকে নিজেকে ছুটানোর চেষ্টা করতে থাকে আর মুখে বলে" ছাড়"
ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে স্বামী স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে দূরে গিয়ে দাঁড়ায় আর মুখেও বলে "যাও,ছেড়ে দিলাম,"
ছেড়ে দেওয়ার পরও স্ত্রী সেখানেই দাড়িয়ে থাকে তাই তিনি আবারও বলে"ছেড়ে দিছি তো"
অনেকদিন পর এই বিষয়ে স্বামীকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে "আমিতো ধরেছিলাম, ধরা থেকে ছেড়ে দিছি সেটা বলেছি"
তালাকের নিয়ত অস্বীকার করে।
একেক সময় একেকটা মনে পরে। তখন স্বামীকে জিজ্ঞাসা করি সেই কথা কেনো বলেছিলা,ওই কথাটা কেনো বলেছিলা।তাই তিনি আমার উপর খুবই বিরক্ত।প্রথম দিকে তিনি খুব শান্তভাবে আমাকে বুঝাতো,একদিন বলেছে 'আমি তোমাকে তালাকের উদ্দেশ্যে কিছুই কখনো বলিনি'
আর একদিন বলেছে 'তোমাকে তালাক দিলাম এই কথা কি সরাসরি কোনোদিন বলেছি, উত্তরে আমি বলেছি যে 'না'
তখন তিনি বলেছে অস্পষ্ট বিষয় নিয়ে তাহলে এমন কেনো করছ'
আবার একদিন বলেছে "আমাকে শয়তান খুচায় আর তুমি শয়তানের খুচা খেয়ে আমাকে খুচাও । শয়তান তোমাকে খুচিয়ে মজা পায় তুমিও শয়তানের খুচা খেয়ে মজা পাও।
আবার একদিন বলতাছে আমি নাকি অসুস্থ আর আমি তাকে বার বার এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করায় নাকি সেও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এখন আমাকে কিছু বলতে গেলেই নাকি তার মনে হয় কি নিয়তে বললাম।
তারপর লাস্ট যেদিন এবিষয়ে একটা কথা জিজ্ঞাসা করেছি তখন সে খুব রেগে গেছে আর বলেছে 'এইবিষয়ে আর কোনো কথা বললে কিন্তু উলটা পালটা কথা মুখ দিয়ে বের হয়ে যাবে,এক বিষয় নিয়ে প্রতিদিন ভালোলাগেনা'
তারপর থেকে আমি আর তাকে কিছুই জিজ্ঞাসা করতে সাহস পাইনা
ওস্তায,আল্লাহর আইনে আমার বিয়েটা বৈধ আছে তো??