আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
108 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
edited by
(১) আসসালামুয়ালাইকুম। আমার এক বান্ধবী ছিল সে বান্ধবী কম বোন বেশি ছিলো তার সাথে আমার অনলাইনে পরিচয় হয় করোনা টাইমে তো ২০২১ সালের শেষের দিকে হঠাৎ সে আমার সাথে কথা বলা অফ করে দেয় তখন আমাদের এইচএসসি পরীক্ষা চলছিলো তো আমি ভেবেছিলাম পরীক্ষার পর হয়তো কথা হবে তার সাথে আমার কিন্তু এর পর তার সাথে আমার আর কথা হয় নি ব্যাপারটা আমাকে খুবই কষ্ট দেয় আর যেহেতু সে আমার সাথে কথা বলতে চায় না তাই তার সিদ্ধান্ত কে সম্মান জানিয়ে আমিও আর তাকে মেসেজ দেই নি। আমার সাথে ১.৫ বছরের পরিচয় হবে অফলাইনে যদিও দেখা হয়েছে আমাদের অনেক কিন্তু এর পর আমি জানতে পারি তার সাথে যাদের ১২/১৪ বছরের বন্ধুত্ত ছিলো তাদের সবার সাথেও সে কথা বলা অফ করে দিয়েছে আমার মতো করে। তবে সে মাঝে মধ্যে আমার অন্য একজন বান্ধবীর কাছে আমার খোঁজ খবর নিতো কিন্তু আমার সাথে কখনো কথা বলেনি আজ ৩.৫ বছর মতো আমি এখনো তাকে অনেক মিস করি এবং আল্লাহর কাছে তার কল্যাণ কামনা করে দোয়া করি। আমার প্রশ্ন হলো এইযে তার সাথে আমার যোগাযোগ অফ হয়েগিয়েছে এতে কি আমার গুনাহ হচ্ছে? আমি শুনেছি ৩ দিনের বেশি কথা অফ রাখলে অমুসলিম হয়ে যায় আর ইসলামের তো আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার ব্যাপারে ও বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমার কোন বোন নেই সে আমার কাছে বোনের মতোই ছিলো। তার সাথে যোগাযোগ না করায় কি আমার গুনাহ হবে? তাহলে কি আমার এখন তার সাথে যোগাযোগ করা উচিত?

(২) হায়েয এর জন্য ভঙ্গ করা রোজা আদায় না করে যদি পরবর্তী রোজা চলে আসে সেক্ষেত্রে কি গুনাহ হবে? আমি এযাবৎকাল জানতাম না যে হায়েযের জন্য রোজা ভাঙ্গলে তা আদায় করতে হয় পরে তো আমার কি এখন উমরি কাযা নামাজের মতো রোজায় পালন করতে হবে? এবিষয়ে ইসলামী বিধান কি?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم  

(০১) 
হাদীস শরীফে এসেছে 
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: لَا تَبَاغَضُوا، وَلَا تَحَاسَدُوا، وَلَا تَدَابَرُوا، وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا، وَلَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পরস্পরকে ঘৃণা করো না, পরস্পর হিংসা করো না, একে অপরের গোয়েন্দাগিরী করো নাম বরং আল্লাহর বান্দারা পরস্পর ভাই ভাই হয়ে যাও। যে কোনো মুসলিমের জন্য তার কোনো ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশী সম্পর্ক বিচ্ছেদ করা জায়িয নয়।
(আবু দাউদ ৪৯১১)
,
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، يَلْتَقِيَانِ فَيُعْرِضُ هَذَا، وَيُعْرِضُ هَذَا، وَخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ

আবূ আইয়ূব আল-আনসারী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিমের জন্য তার কোনো ভাইয়ের সঙ্গে (ঝগড়া করে) তিন দিনের বেশী সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকা বৈধ নয়। দু’ জন পথিমধ্যে মুখোমুখি হলে একজন এদিকে এবং অপরজন অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এ দু’ জনের মধ্যে যে প্রথমে সালাম দেয় সে-ই উত্তম।।
(আবু দাউদ ৪৯১১)

অপর এক হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আউফ ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, কিছু লোক এসে আয়েশা (রা.)-কে বলল, আপনি যে অমুক জিনিস বিক্রি করেছেন কিংবা কাউকে দান করে দিয়েছেন, এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) বলেছেন, ‘যদি খালাম্মা আমার কথা না মানেন, তাহলে আমি তাঁর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে দেব। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে আয়েশা (রা.)-কে যে পরিমাণ ভাতা দেওয়া হয়, তা কমিয়ে দিয়ে শুধু খরচ চালনার পরিমাণ অর্থ দেব।’ আয়েশা (রা.) জিজ্ঞেস করেন, ‘সে কি এ কথা বলেছে?’ লোকেরা বলল, হ্যাঁ, তিনি এ কথাই বলেছেন। অতঃপর আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, ইবনে জুবাইরের সঙ্গে আর কখনো কথা বলব না।’ এরপর তিনি তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকে। 
ইবনে জুবাইর (রা.) আয়েশা (রা.)-এর কাছে সুপারিশকারী পাঠিয়েছেন। কিন্তু আয়েশা (রা.) কারো কোনো সুপারিশ মানতে চাননি এবং শপথও ভাঙতে চাননি। বিষয়টি ইবনে জুবাইরের (রা.) জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে। পরে আয়েশা (রা.)-কে ওই হাদিস স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, যে হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন দিনের বেশি কোনো মুসলমানের সঙ্গে রাগ করে কথা বলা বন্ধ রাখা বৈধ নয়।’ সবাই মিলে আয়েশা (রা.)-কে জোর দিয়ে বলে যে আপনি যা করছেন সেটা গুনাহ। তখন তিনি কেঁদে ফেলেন এবং বলেন, ‘আমি কসম খেয়ে ফেলেছি এবং কসম অত্যন্ত কঠিন বিষয়।’ শেষ পর্যন্ত তিনি কসম ভঙ্গ করে ইবনে জুবাইরের সঙ্গে কথা বলেন এবং কসমের কাফফারাস্বরূপ ৪০ জন দাস মুক্ত করে দেন। পরবর্তী জীবনে আয়েশা (রা.) তাঁর এ ভুলের কথা মনে হলেই কাঁদতেন এবং এত বেশি পরিমাণে কাঁদতেন যে চোখের পানিতে তাঁর ওড়না ভিজে যেতো।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সাথে শরয়ী ওযর ব্যাতিত  তিন দিনের বেশি কথাবার্তা বন্ধ রাখা, সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই। 
(কিতাবুল ফাতওয়া ৬/২১৭)

এটা যদি তাদের সামনা সামনি না হওয়ার কারনে হয়,যে সামনা সামনি,দেখা সাক্ষাৎ  যেহেতু আমাদের  হচ্ছেনা,তাই কথা বলার সুযোগও হচ্ছেনা।
তাহলে তো কোনো সমস্যা নেই। 
তবে দেখা সাক্ষাৎ হওয়ার পরেও বিনা কারনে কাহারো সাথে কথা বার্তা বলা বন্ধ করে দেওয়া,সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই।    
হ্যাঁ যদি শরয়ী ওযর থাকে,তাহলে কোনো সমস্যা নেই।  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সামনা-সামনি দেখা সাক্ষাৎ হলে এড়িয়ে যাওয়া যাবেনা।
কমপক্ষে সালাম হলেও দিতে হবে।

তবে দেখা সাক্ষাৎ না হলে সেক্ষেত্রে মোবালে কল দিয়ে কথা বলা আবশ্যক নয়।
হ্যাঁ সে কল দিলে কল রিসিভ করে কমপক্ষে সালাম বিনিময় করতে হবে।

(০২)
নিয়ম হলো পরবর্তী বছরের রমাদানের আগেই কাজা আদায় করে নেয়া।
তারপরেও কেহ আদায় না করলে সেক্ষেত্রে জীবনের যেকোনো সময় আদায় করতে পারে।
এক্ষেত্রে একাধিক বছরের কাজা রোযা হলে কোন বছরের কাজা রোযা,সেটির নিয়ত করতে হবে।

(০৩)
যার পাস্ট নাই তাকে বিয়ে করতে বা বিয়ে করার চেষ্টা করাটা আপনার জন্য গুনাহ হবেনা। আর তাকে ঠকানো হবেনা। 

অনেকেই যেই কথাটি বলে,এটা সঠিক নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...