আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
105 views
in সালাত(Prayer) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম
১) আমি সালাতের যে রুকনের তাসবিহ/দুয়া পারিনা সেইখানে শুধু আল্লাহ আল্লাহ বলি, এক্ষেত্রে কি আমার সালাত হবে?

২) দুই সিজদাহর মধ্যসময়ে যে তাসবিহ বা দুয়া আছে সেইটা মনে থাকেনা, তাই শুধু আল্লাহ আল্লাহ বলি আমার কি সালাত হবে নাকি ভেংগে যাবে?

৩) ইমাম সাহেবের সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ শুনে মুক্তাদীর রব্বানা লাকাল হামদ এর সাথে যে অতিরিক্ত কিছু শব্দ যোগ করে পড়ার ফজিলত রয়েছে সেই দুয়াটুকু জানতে চাই। সম্পূর্ণ টা আমার মনে নেই। আমাকে জানাবেন (বাংলা উচ্চারণ সহ)।

৪) আমি ইমাম সাহেবের সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ শুনে রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ বলি (রব্বানা এর পরে ওয়া যুক্ত করি)। আমার সালাত কি হবে?

৫) তারাবিহর সালাতে অনেক ইমাম সাহেব যে তাড়াতাড়ি তিলাওয়াত করেন, এতে মুক্তাদীর সালাতে কোনো সমস্যা হবে কি?

৬) এক আলেম বলেছিলেন ইমাম সাহেব ৪জি স্পীডে তিলাওয়াত করলে বাসায় এসে নিজেই বউ-বাচ্চা নিয়ে তারাবি পড়বেন। আমি জানতে চাই এইটা কি সঠিক কিনা? যদি সঠিক হয় তাহলে আমার প্রশ্ন আমি তো হাফেজ না, তাহলে তারাবিহ কিভাবে আদায় করবো? যে সূরা গুলো পারি সেইগুলাই কি বারবার তিলাওয়াত করবো?

৭) আমি আজকে এশার সালাতের জামায়াতে ভুল করে দরুদ পড়ে ফেলেছিলাম। তো তখন আমি সালাত ভেংগে আবার পুনরায় শুরু করি। আমার সালাত হয়েছে? আর যদি তখন সালাত কন্টিনিয় করে যেতাম আমার কি সালাত আদায় হতোনা?

৮) সূরায়ে তারাবিহ আর খতমে তারাবিহ বলতে কি বুঝানো হয়?

৯) আমি ছেলে। আমার প্রায় প্রতি রাতে ফজরের কিছুক্ষণ পূর্বে কোন যৌন চিন্তা না করলেও যৌনাংগ থেকে হালকা পানি বের হয়, আমি বুঝিনা যে এটা বীর্য না কি। এতে কি গোসল ফরজ হবে?

১০) যৌনচিন্তা করার ফলে বা না করার ফলে যদি বীর্য বের হয় রোজা ভেংগে যাবে?

১১) কাপড়ের কোনো অংশে নাপাকি লাগলে শুধু সেই অংশ ধুয়ে ফেললেই তো কাপড় পাক হবে?

১২) নাপাক কাপড় ধুয়ার জন্য কি তিনবার ধুয়া আবশ্যক?

১৩) নাপাক কাপড় ধুয়ে শুকিয়ে দিলে সম্পূর্ণ শুকানোর পূর্বে কি ব্যাবহার করা যাবে? মানে তখন কি কাপড় পাক হবে? নাকি তখনো নাপাক থাকবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক্ষেত্রে আপনার সালাত আদায় হবে।

(০২)
আপনার সালাত হবে।

(০৩)
‘‘(আল্লাহুম্মা) রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, হামদান কাসীরান ত্বাইয়্যিবান মুবারাকান ফীহ’’

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نُعَيْمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْمُجْمِرِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ يَحْيَى الزُّرَقِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ الزُّرَقِيِّ، قَالَ كُنَّا يَوْمًا نُصَلِّي وَرَاءَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَلَمَّا رَفَعَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ قَالَ " سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ " . قَالَ رَجُلٌ وَرَاءَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم اللهُمَّ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ فَلَمَّا انْصَرَفَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنِ الْمُتَكَلِّمُ بِهَا آنِفًا " . فَقَالَ الرَّجُلُ أَنَا يَا رَسُولَ اللهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " لَقَدْ رَأَيْتُ بِضْعَةً وَثَلَاثِينَ مَلَكًا يَبْتَدِرُونَهَا أَيُّهُمْ يَكْتُبُهَا أَوَّلَ "

রিফা‘আহ ইবনু রাফি‘ আয-যুরাকী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে সলাত আদায় করছিলাম। সে সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু‘ হতে মাথা উঠিয়ে সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ্ বললে এক ব্যক্তি বলে উঠেন- ‘‘আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, হামদান কাসীরান ত্বাইয়্যিবান মুবারাকান ফীহ’’। সলাত শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই দু‘আ পাঠকারী কে? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি দেখলাম, তিরিশেরও অধিক মালায়িকাহ্ (ফিরিশতা) তা সর্বাগ্রে লিপিবদ্ধ করার জন্য প্রতিযোগিতা করছে।

বুখারী (অধ্যায়ঃ আযান, অনুঃ কুনূত, হাঃ ৭৯৯), বায়হাক্বী (অধ্যায়ঃ সালাত, অনুঃ রুকু‘ থেকে মাথা উঠানোর সময় দু‘আ ২/৯৫), ইবনু খুযাইমাহ (৬১৪)।
,
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادٌ، عَنْ قَتَادَةَ، وَثَابِتٍ، وَحُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَجُلاً، جَاءَ إِلَى الصَّلاَةِ وَقَدْ حَفَزَهُ النَّفَسُ فَقَالَ اللَّهُ أَكْبَرُ الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلاَتَهُ قَالَ " أَيُّكُمُ الْمُتَكَلِّمُ بِالْكَلِمَاتِ فَإِنَّهُ لَمْ يَقُلْ بَأْسًا " . فَقَالَ الرَّجُلُ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ جِئْتُ وَقَدْ حَفَزَنِي النَّفَسُ فَقُلْتُهَا . فَقَالَ " لَقَدْ رَأَيْتُ اثْنَىْ عَشَرَ مَلَكًا يَبْتَدِرُونَهَا أَيُّهُمْ يَرْفَعُهَا " . وَزَادَ حُمَيْدٌ فِيهِ " وَإِذَا جَاءَ أَحَدُكُمْ فَلْيَمْشِ نَحْوَ مَا كَانَ يَمْشِي فَلْيُصَلِّ مَا أَدْرَكَهُ وَلْيَقْضِ مَا سَبَقَهُ " .

মূসা ইবনু ইসমাঈল ........... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি দ্রুত গতিতে মসজিদে আগমনের ফলে খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়ে সে বলল, “আল্লাহু আক্বার আলহামদু লিল্লাহি হামদান কাছীরান তাইয়েবান মুবারাকান ফীহ্। নামায শেষে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করেনঃ তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি এই দু’আ পাঠ করেছে? ঐ ব্যক্তি খারাপ কিছু বলে নাই। তখন ঐ ব্যক্তি বলে, ইয়া রাসূলুল্লাহ! মসজিদে আগমনের পর ক্লান্ত হয়ে আমি এই দু’আ পাঠ করি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি দেখতে পাই যে, বারজন, ফেরেশতা প্রতিযোগীতামূলকভাবে উক্ত দু’আ সর্বাগ্রে অল্লাহ তা’আলার নিকটে নেওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়েছে। রাবী হুমায়েদের বর্ণানায় আরও আছে যে! মসজিদে জামাআতে নামায আদায়ের সময় প্রত্যেক মুসল্লীর জন্য স্বাভাবিক পদক্ষেপে আগমন করা উচিত। অতঃপর সে ব্যক্তি ইমামের সাথে নামাযের যে অংশ প্রাপ্ত হয় তা আদায়ের পর যদি নামাযের কিছু অংশ ছুটে গিয়ে থাকে- তা ইমামের সালাম ফিরানোর পর একাকী আদায় করবে।
(আবু দাউদ ৭৬৩)

(০৪)
আপনার সালাত হবে। 

(০৫)
এক্ষেত্রে নামাজ ভেঙ্গে যাওয়ার মতো অর্থ বিকৃত হলে ইমামের পাশাপাশি মুক্তাদীদেরও সালাত ভেঙে যাবে।

(০৬)
হ্যাঁ, এই ভাবে বাসায় তারাবিহ এর সালাত আদায় করতে পারেন।
যেই সুরা গুলি আপনার মুখস্ত আছে,শুধু সেই সুরাগুলি দিয়েই তারাবিহ আদায় করতে পারবেন।

তবে এক্ষেত্রে ইশার নামাজ মসজিদে জামায়াতের সাথেই আদায় করবেন।

(০৭)
আপনার সালাত হয়েছে।
এক্ষেত্রে আপনি যেহেতু মুক্তাদী ছিলে,তাই আপনার নামাজ হয়ে যেতো।

(০৮)
যেই তারাবিহতে পুরো কুরআন তিলাওয়াত করা হয়,সেই তারাবিহকে খতম তারাবিহ বলে।

আর যেই তারাবিহ নামাজে পুরো কুরআন তিলাওয়াত করা হয়না,সেটা সুরা তারাবিহ।

(০৯)
স্বপ্নের মধ্যে এমনটি হলে গোসল ফরজ হবে।

(১০)
এক্ষেত্রে হস্তমৈথুন বা কাহারো সাহায্যে মৈথুন করা ছাড়াই বীর্য বের হয়ে গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবেনা।

(১১)
শুধু সেই অংশ শরীয়তের নিয়ম অনুপাতে তিন বার করে ধুয়ে ও প্রত্যেক বার নিংড়িয়ে নিলে পাক হয়ে যাবে।

(১২)
হ্যাঁ, আবশ্যক। 
এক্ষেত্রে প্রত্যেক বার নিংড়িয়ে নেয়াও আবশ্যক। 

তবে প্রবাহিত পানিতে ধোয়া হলে বিধান আলাদা।

যদি প্রবাহমান পানি যেমন, নদী, পুকুরে বা টেপের পানিতে এত বেশি করে ধোয়া হয়, যাতে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয়ে যায় তাহলে তা পাক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তিনবার নিংড়িয়ে ধোয়া জরুরি নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(১৩)
এক্ষেত্রে সেই কাপড় শরীয়তের নিয়ম অনুপাতে তিন বার করে ধুয়ে ও প্রত্যেক বার নিংড়িয়ে নিয়ে থাকলে সম্পূর্ণ শুকানোর পূর্বে ব্যাবহার করা যাবে। তখন সেটা পাক হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (15 points)
+1
৩) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি দেখলাম, তিরিশেরও অধিক মালায়িকাহ্ (ফিরিশতা) তা সর্বাগ্রে লিপিবদ্ধ করার জন্য প্রতিযোগিতা করছে।

আমি অতিরিক্ত হামদান কাসীরান ত্বয়িবান মুবারাকান ফীহ যোগ করে পড়লে কি আমার জন্যও তিরিশের অধিক মালায়িকাহ সর্বাগ্রে লিপিবদ্ধ করার জন্য প্রতিযোগিতা করবে? নাকি এইটা শুধু সেই সাহাবীর জন্য খাস কারামাহ ছিলো?
by (678,880 points)
+2
হ্যাঁ, আপনি উক্ত ফজিলত পাবেন,ইনশাআল্লাহ 
by (15 points)
৯) সব সময় স্বপ্নের মধ্যে না, মাঝে মধ্যে জাগ্রত অবস্থায় ও এমন হয়ে যায়। ঘুম ভাংগার পরে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকি বিছানায় ঘুমাই না, শুধু শুয়ে থাকি কিছুক্ষণ পরে যৌনাংগ দিয়ে তরল পদার্থ বেরিয়ে যায় এক্ষেত্রে গোছল ফরজ হবে? আমি নিশ্চিত হতে পারিনা এটা কি বীর্য কিনা? যৌন চিন্তা না করলেও এমন হয়ে যায়।
by (678,880 points)
উত্তেজনার সহিত বের না হলে এক্ষেত্রে গোসল ফরজ হবেনা 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 51 views
0 votes
1 answer 45 views
0 votes
1 answer 49 views
0 votes
1 answer 67 views
...