আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in সালাত(Prayer) by (54 points)
আসসালামু আলাইকুম। নিয়মিত সব ওয়াক্তের সব সালাত পড়তে খুব ইচ্ছা করে৷ কিন্তু মাঝে মাঝেই ঘুম বা ক্লান্তির কারনে সালাত কাযা হয়ে যায়৷ অনেক চেষ্টা করি। অনেক বেশি চেষ্টা করি। হয়ত আল্লাহ এই চেষ্টায় বারাকাহ দিসেন বলে অধিকাংশ দিন ঠিকঠাক সালাত আদায় করতে পারি। কিন্তু মাঝে মাঝেই ইশা ফজর ঘুমের জন্য মিস হয়ে যায়। নিজেকে মুনাফিক লাগে।
ইচ্ছা করি প্রতি দিন যে আমৃত্যু আমার আর সালাত ছুটবে না। কিন্তু তাও হয়ে যায়।
এই সমস্যা হতে বাচতে কি করতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাব,

আনাস রাযি. বলেন, রাসুল (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন,

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ

হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন। (সুহহ মুসলিম-৬৪১৮)

আনাস রাযি. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার উপর এবং আপনার আনিত শিক্ষার উপর ঈমান এনেছি। এখন আপনার মনে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো সন্দেহ আছে? ( যে বেশি বেশি এই দোয়া করেন!) রাসুল উত্তর দিলেন হ্যাঁ! সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে পড়ে আছে। আল্লাহ যেভাবে চান, এগুলোকে পরিবর্তন করেন। (তিরমিযি-২১৪০)

রাসূলুল্লাহ্ দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَن زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا

হে আল্লাহ আমাকে তাকওয়ার তওফীক দান করুন এবং নাফসকে পবিত্র করুন, আপনিই তো উত্তম পবিত্রকারী। আর আপনিই আমার নাফসের মুরুব্বী ও পৃষ্ঠপোষক। (মুসলিম ২৭২২)

সুতরাং আপনিও দোয়াটি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

يا أيها الذين آمنوا اتقوا الله وكونوا مع الصادقين 

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

আপনাকে বেশি পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করার ও শোনার পরামর্শ দিচ্ছি। এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন,

 يا أيها الذين آمنوا اتقوا الله وكونوا مع الصادقين 

আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়। (সূরা আনফাল ২)

https://ifatwa.info/31884/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

যথাসময়ে ফজরের নামাজ আদায় না করলে কি শাস্তি হবে সে সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে- হজরত আবু যুহাইর উমারাহ রুওয়াইবা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের পূর্বের নামাজ (ফজর) ও সূর্যাস্তের পূর্বের নামাজ (আসর) আদায় করবে, সে কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।’ [মুসলিম, হাদিস নং: ১০৪৯]

নিম্নে ফজরের নামাজ আদায়ে সহায়ক ৫টি পরামর্শ তুলে ধরা হলো-

১. ফজরে উঠতে দৃঢ় ইচ্ছা যদি আপনি করেন, তবে কখনোই রাত জাগবেন না। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন, যাতে একদিকে আপনার ঘুমও পূর্ণ হয়, অন্যদিকে যথাসময়ে ফজরের জন্য উঠতেও পারেন। রাসূল (সা.) এশার নামাজের পরপরই ঘুমাতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বিজ্ঞানও এই অভ্যাসের যথার্থতার প্রমাণ প্রকাশ করেছে।

২. বিছানায় যাওয়ার আগে অজু করে নিন। যদি আপনি পবিত্র অবস্থায় ঘুমাতে যান, তবে ফেরেশতারা আপনার ঘুম থেকে জাগার আগ পর্যন্ত আপনার জন্য দোয়া করতে থাকবে।

৩. রাসূল (সা.) ঘুমানোর সময় ডান কাত হয়ে, ডান হাতকে ডান গালের নিচে রেখে ঘুমাতেন। রাসূল (সা.)-এর অনুকরণে ঘুমের জন্য শোয়ার এই অবস্থা একদিকে যেমন ঘুমের জন্য সহায়ক, অন্যদিকে ফজরে যথাসময়ে ঘুম থেকে ওঠার জন্যও কার্যকর।

৪. আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে বেশি বেশি দোয়া করুন, যাতে আল্লাহ আপনাকে যথাসময়ে ফজরের নামাজ আদায়ে সামর্থ্য দান করেন। আল্লাহর কাছে যদি আপনি আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করতে পারেন, তবে আল্লাহও আপনার প্রার্থনাকে কবুল করবেন।

৫. বিছানায় যাওয়ার সময় কিছু কোরআনের আয়াত তিলাওয়াত করে নিন। বিশেষ করে সূরা সাজদাহ, সূরা মুলক, সূরা ইসরা, সূরা যুমার, সূরা কাহফের শেষ চার আয়াত, সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত ইত্যাদি এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/ বোন!

নেককারদের সোহবত গ্রহণ করুন। তাদের সাথে বেশি উঠাবসা করুন। দাওয়াত তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হতে পারেন বা কোনো হক্কানী শায়েখের কাছে যেতে পারেন এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা আপনার জন্য সহজ হবে। ঈমান ও ইসলামের পরিবেশে সময় ব্যয় করুন। আপনি আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করবেন। বিশেষ করে উপরে উল্লেখিত দুআগুলো পড়বেন ও নির্দেশনাগুলো ফলো করবেন। হক্কানী উলামা ও শায়েখদের নামাজ না পড়ার শাস্তি, জাহান্নামের শাস্তি সম্বলিত বয়ান শুনুন ও এ সংক্রান্ত গ্রন্থাবলী পড়ুন। আল্লাহ তায়ালা আমদের প্রত্যেককে সালাতের প্রতি যত্নশীল হওয়ার তাওফীক দান করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 66 views
0 votes
1 answer 43 views
...