আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
106 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
তথ্য দিয়ে সাহায্য করবেন বলে আশাবাদী ।

একজন ভদ্র মহিলার তার প্রথম হাজব্যান্ড কে নিজে তালাক দিয়েছেন এবং সেই ডিভোর্স পেপার এ তার হাজব্যান্ড সাইন করে নাই যেহেতু হাজব্যান্ড দেশের বাহিরে থাকে।

সেই মহিলা এর পর বিয়ে করেছে অন্যত্র। এবং তার আগের হাজব্যান্ড ও অন্য জায়গায় বিয়ে করেছে ৩/৪ মাস পর ডিভোর্স পেপার সাইন করা ছাড়াই ।

মহিলার ২ জন হাজব্যান্ড এর সংসার এ ছেলে এবং মেয়ে আছে ।

মহিলার বর্তমান হাজব্যান্ড এর সাথে ঝামেলা চলছে এবং তারা ৪ বছর যাবত আলাদা বসবাস করছে। কিন্তূ তাদের ডিভোর্স হয় নি ।

এমন অবস্থায় মহিলার প্রথম স্বামী তাকে পুনরায় বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয় এবং এক পর্যায়ে সে তার প্রথম হাজব্যান্ড কে আবার বিয়ে করে কাজী ডেকে।

তার দ্বিতীয় হাজব্যান্ড এর সাথে ডিভোর্স না দিয়ে।

এখন আমার প্রশ্ন হলো ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী তার হাজব্যান্ড আসলে কে হবে যেহেতু একসাথে ২ জন হাজব্যান্ড থাকতে পারে না।

তার আসলে কি করা উচিৎ এই সম্পর্ক নিয়ে সে খুব ই চিন্তিত। এবং জানতে চায় কি করবে এখন ।

ধন্যবাদ

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।

আরো জানুনঃ- 

★শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি জেনে শুনে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দেয়, অথবা সেখানে কাজী সাহেব বা অন্য কেহ হ্যাঁ লিখে দেয়,আর স্বামী তাহা জেনে শুনে নিচে স্বাক্ষর দেয়,আর এই নিকাহ নামা বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার পরে যদি লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে। 

তবে যদি এমনটি না হয়,স্বামী যদি না জেনেই নিচে সাইন করে,সে যদি তালাকের ক্ষমতা প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা,অথবা এই নিকাহ নামা যদি বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।
 
كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
সারমর্মঃ
প্রত্যেক ঐ লেখা,যেটা নিজ হাত দিয়ে লিখেনি,নিজের মন সেদিকে ঝুকেওনি,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।
যদি সে এটা স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা।    

সুতরাং  যদি স্বামীর দস্তখত করার সময় জানা থাকে যে, কাজী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছে মর্মে উপরে লিখে দিয়েছে, একথা জানার পরও যদি স্বামী উক্ত কাগজের নিচে সাইন করে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। সেই হিসেবে স্ত্রী যদি পরবর্তীতে নিজের উপর তালাক পতিত করে থাকে, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ 
,
কোনো পুরুষের জন্য অন্যের বিবাহিতা স্ত্রীকে বিবাহ করা জায়েজ নেই,অনুরুপ ভাবে ইদ্দতপালন রত কোনো স্ত্রীকে বিবাহ করা জায়েজ নেই।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত মহিলা যে ১ম স্বামীকে তালাক দিয়েছিলো,এটা কোন অধিকারের বলে তালাক দিয়েছিলো?

তার স্বামী কি তাকে তালাকের অধিকার দিয়েছিলো?
বিবাহের কাবিননামায় স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেয়া না থাকলে বা মৌখিক তালাকের অধিকার না দিয়ে থাকলে স্ত্রী তালাকের অধিকারই পায়না।

আর যদি বিবাহের কাবিননামায় স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেয়া লেখা থাকে,সেক্ষেত্রে ১৮ নং ধারার বিষয় না জেনে না শুনে তার স্বামী ইজাব কবুলের পরেও সাইন করে থাকলে সেই স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবেনা।

হ্যাঁ যদি তিনি ১৮ নং ধারার বিষয় জেনে শুনেই নিচে সাইন করে,এক্ষেত্রে তিনি আসলেই ইজাব কবুলের আগে সাইন করেছিলেন না কি ইজাব কবুলের পরে?
বিষয়টি স্বামী থেকে জেনে নিতে হবে।
স্বামী মনে করতে না পারলে তিনি উক্ত বিবাহের সাক্ষীদের সহায়তা নিবেন,তারাও মনে করতে না পারলে সেখান আর যারা উপস্থিত ছিলো কাজী সাহেব সহ সকলের সহায়তা নিবে।

তারা যেটি বলবে,সেটির উপরেই নির্ভর করবে যে উক্ত মহিলা তালাকের অধিকার পেয়েছিলেন কিনা?

যদি সেই মহিলা তালাকের অধিকার পেয়ে থাকে,তাহলে দেখতে হবে যে সে কোন বাক্যে প্রথম হাজব্যান্ডকে তালাক দিয়েছিলো?

যদি নিজে তালাক গ্রহন করে,বা নিজেকে নিজে তালাক দেয়,বা নিজের নফসের উপর তালাক গ্রহন করে,তাহলেই কেবল তালাক হবে।
স্বামীকে তালাক দিলে তালাক হবেনা।

★সুতরাং উপরোক্ত বিবরণ অনুপাতে প্রশ্নে উল্লেখিত মহিলা যদি আসলেই তালাকের অধিকার প্রাপ্তা হয়ে থাকে,আর সেই অধিকারের বলে সে নিজেকে নিজে তালাক দিয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার পর ২য় বিবাহ করে থাকলে বর্তমান তালাক ছাড়া ১ম স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এক্ষেত্রে ১ম স্বামীর সাথে ঘর সংসার করলে তাহা যেনার সংসার হবে।

★আর যদি সেই মহিলা তালাকের অধিকার প্রাপ্তা না হয়ে থাকে,বা তালাকের অধিকার প্রাপ্তা হয়ে থাকলেও তালাক নামায় নিজেকে তালাক না দিয়ে স্বামীকে তালাক দেয়,বা ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগেই অন্যত্রে বিবাহ বসে,সেক্ষেত্রে এসব ছুরতে ঐ মহিলার  ১ম স্বামীর সাথে আগের বিবাহই বহাল রয়েছে।

১ম স্বামীর সাথে এখনকার ঘর সংসার বৈধ।
তবে এতোদিন যে ২য় স্বামীর সাথে ঘর সংসার করেছে,এটি যেনার সংসার ছিলো।

মারাত্মক গুনাহ হওয়ায় খালেস দিলে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...