আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
63 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)

sadআসসালামু আলাইকুম।

আমি বিবাহিত আমার বিয়ের আগে একজনের সাথে অল্পকিছুদিনের একটা সম্পর্ক ছিলো বিয়ের পর আর যোগাযোগ ছিলোনা,উনিও বিবাহিত।
আমার বিবাহিত জীবন ৮বছর, ওনার বিবাহিত জীবন ১০বছর,আমাদের দুইজনেরই সন্তান আছে।

২২ সালের শেষ দিকে তার সাথে আবার যোগাযোগ হয় গত একবছর প্রায় কথা হতো মাঝে মাঝে আবার অফ ও হয়ে আবার কথা হতো,।আমি বুঝতে পারতাম এটা ঠিক না আমি অন্যায় পাপ করতেছি তারপরেও মায়ায় কথায় বলতাম। এখন আমি সম্পূর্ণরুপে তার সাথে সামাজিক মাধ্যমের সকল সাইট থেকে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছি কিন্তু নিয়মিত তার ফেসবুক ক্রল করি।যতবার তার আইডি তে যাই তখন মনে হয় আল্লাহ এটা কি হচ্ছে আমি কেনো দেখলাম,পরেই আবার কিছুক্ষন পরে আবার গিয়ে চ্যাক করি কি বায়ো দিলো।

আল্লাহর ভয় কাজ করতেছে তার জন্যই যোগাযোগ বন্ধ করেছি কিন্তু কোনোভাবেই তার পোস্ট দেখা ছাড়া থাকতে পারছিনা,ব্লক করে দেই আবার সেচ্ছায় ব্লক খুলেও দেই সে জানেওনা যে আমি তার আইডিতে এতোবার যাই।

আমার কি করনীয় কিভাবে এই পথ থেকে ফিরে আসবো,শুধু মায়া কাজ করে আর অতিমাত্রায় অস্থিরতা কাজ করে যে কি বায়ো দিলো কি লিখলো এটা দেখার জন্য

অনুরোধ রইলো আমাকে পরামর্শ দেওয়ার জন্যকিভাবে আমি ফিরে আসবো এই পথ থেকে।আল্লাহর ভয় তিব্রভাবে কাজ করতেছে নিজের কাছে অনুশোচনা বোধ হচ্ছে।

1 Answer

0 votes
by (677,160 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলামে বিবাহ পূর্ব প্রেম স্পষ্ট  হারাম।
হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন-

اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْكَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه

“দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, যবানের ব্যভিচার হল অশোভন উক্তি, হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (মেশকাত ১/৩২)

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/3298/

https://www.ifatwa.info/86485 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
দুনিয়ার আগুন শরীরের শুধু বাহ্যিক অঙ্গ পোড়াতে পারে। পোড়াতে পারে না তা অভ্যন্তরীণ অঙ্গ। কিন্তু জাহান্নামের আগুনের এমন পাওয়ার থাকবে যা জাহান্নামিদের শরীর পোড়ানোর পাশাপাশি তাদের হৃৎপিণ্ডও পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এটি আল্লাহর প্রজ্ব¡লিত অগ্নি, যা তাদের হৃদয়কে গ্রাস করে ফেলবে।’ (সূরা হুমাজা : ৬-৭) দুনিয়ার আগুন লাল বর্ণের হয়ে থাকে। কিন্তু জাহান্নামের আগুন তীব্র উত্তপ্ত হওয়ার দরুণ কালো বর্ণের হবে।

আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত।রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘জাহান্নামের আগুন এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা লাল বর্ণ ধারণ করেছে। আবার এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা সাদা বর্ণ হয়েছে। তারপর এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা কালো বর্ণ হয়েছে। এখন তা গভীর অন্ধকার রাতের অন্ধকারের মতো কালো (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৪৩২০)। ‘জাহান্নামিরা যখন পিপাসায় ছটফট করবে তখন তাদেরকে গলিত পুঁজ পান করানো হবে, যা সে এক এক ঢোক করে গিলবে’ (সূরা ইবরাহিম : ১৬-১৭)।

রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘পুঁজ যখন তার মুখের নিকটে নিয়ে আসা হবে, সে তা অপছন্দ করবে। তারপর যখন আরো নিকটে নিয়ে আসা হবে, তখন তার মুখমণ্ডল পুড়ে যাবে এবং মাথার চামড়া গলে পড়ে যাবে। তারপর সে যখন তা পান করবে তখন তার নাড়িভুঁড়ি গলে ছিন্নভিন্ন হয়ে মলদার দিয়ে বের হয়ে যাবে।’ (জামে তিরমিজি :২৫৮৩)

 ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূলুল্লাহ সা: এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন, অর্থাৎ ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং পূর্ণ মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ তারপর প্রিয় নবী সা: ইরশাদ করলেন, ‘যদি জাক্কুম গাছের একটা ফোঁটা এই দুনিয়ায় পড়ে তাহলে দুনিয়াবাসীর জীবনোপকরণ বিনষ্ট হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় ওইসব লোকের কেমন দুর্দশা হবে এটা যাদের খাদ্য হবে?’ (জামে তিরমিজি : ২৫৮৫)

রাসূল সা: জাহান্নামের সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তির আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘জাহান্নামিদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ শাস্তি ওই ব্যক্তির হবে, যাকে ফিতাসহ এক জোড়া জুতা পরিয়ে দেয়া হবে। এতে তার মগজ এমনভাবে টগবগ করবে গরম পানির পাত্র যেমন টগবগ করে। সে ধারণা করবে তার থেকে কঠিন আজাব আর কেউই ভোগ করছে না। অথচ সে হবে সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি। (সহিহ মুসলিম : ৩৬৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
জাহান্নামের সবচেয়ে সহজ শাস্তির যদি হয় এমন পাওয়ার তাহলে পরকিয়ার শাস্তির পাওয়ার কেমন হবে? তা  ভাবতে হবে।

জাহান্নামের শাস্তির ভয়ে সেই ছেলেকে অন্তর থেকে পুরোপুরি ভুলে যেতে হবে।
প্রয়োজনে ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো চালানো বন্ধ করে দিতে হবে।

সে কাজ করলে তার কথা মনে হয়,যে পথে গেলে তার কথা মনে হয়,সেই পথ,সেই কাজ বন্ধ করে দিতে হবে। 

সুরা বাকারার ১৬৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّتَّخِذُ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَنۡدَادًا یُّحِبُّوۡنَہُمۡ کَحُبِّ اللّٰہِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰہِ ؕوَ لَوۡ یَرَی الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡۤا اِذۡ یَرَوۡنَ الۡعَذَابَ ۙ اَنَّ الۡقُوَّۃَ لِلّٰہِ جَمِیۡعًا ۙ وَّ اَنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعَذَابِ ﴿۱۶۵﴾

আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে, তারা তাদেরকে ভালবাসে আল্লাহ্র ভালবাসার মতই পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে সর্বাধিক ভালবাসে । আর যারা যুলুম করেছে যদি তারা আযাব দেখতে পেত, (তবে তারা নিশ্চিত হত যে,) সমস্ত শক্তি আল্লাহরই। আর নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।

অর্থাৎ কাফেররা আল্লাহকে যেমন ভালবাসে তাদের (মিথ্যা) মা’বুদদেরও তেমন ভালবাসে। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, আল্লাহ তা'আলার ভালবাসা কাফেরদের মনেও ছিল, কিন্তু তা ছিল শির্কযুক্ত। একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য নয়।

★অবৈধ প্রেম ভালোবাসাও মানুষকে অন্ধ বানায়,অনেক সময় শিরকের নিকটতম করে দেয়। 

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
যেই আল্লাহ সৃষ্টি করলেন,খাওয়ালেন,থাকার জায়গা দিলেন,চলার শক্তি দিলেন,কথা বলার শক্তি দিলেন,লক্ষ কোটি নিয়ামতে রাখলেন,সেই আল্লাহর অবাধ্যতা করে সেই আল্লাহকে মুহাব্বত না করে এই দুনিয়ার নারীর লোভে পড়ে অবৈধ প্রেমে জড়ানো কোনোক্রমেই উচিত নয়।
মহান আল্লাহর নিকটতম হওয়ার চেষ্টা করতে হবে,তাকে মুহাব্বত করতে হবে।
,  
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য করনীয় হবে,পূর্বের সেই অবৈধ প্রেম ভালোবাসা থেকে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা।
ভবিষ্যতে এহেন কাজ না করার প্রতি ওয়াদা বদ্ধ হওয়া।    

আপনি ঐ ছেলেকে পূর্ণ ভাবে ভুলে যান,যেখানে গেলে তার কথা মনে হবে,যেকাজ করলে তাকে মনে পড়বে,এহেন সমস্ত কাজ থেকে দূরে থাকুন।

প্রয়োজনে মাহরাম সহকারে মাস্তুরাত জামাতে যেতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...