বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(a)
মসজিদে দ্বিতীয় জামাত।
ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : " ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﺤﺐ ﺃﻥ ﺗﻜﻮﻥ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﻭﺍﺣﺪﺓ "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,মু'মিনদের জামাত যেন একটাই হয়।(সহীহ ইবনে খুযাইমাহ- সুনানু আবি দাউদ-)
ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺭﺟﻊ ﻣﻦ ﻧﺎﺣﻴﺔ ﻣﻦ ﻧﻮﺍﺣﻲ ﺍﻟﻤﺪﻳﻨﺔ ﻭﻣﺠﻤﻮﻋﺔ ﻣﻦ ﺃﺻﺤﺎﺑﻪ، ﻭﻭﺟﺪ ﺍﻟﺠﻤﺎﻋﺔ ﻗﺪ ﺍﻧﺘﻬﺖ ﻓﻘﻔﻠﻮﺍ ﺇﻟﻰ ﺑﻴﻮﺗﻬﻢ ﻭﺻﻠﻮﺍ ﻓﻲ ﺑﻴﻮﺗﻬﻢ ﻓﺮﺍﺩﻯ، ﻭﻣﺎ ﺻﻠﻮﺍ ﺟﻤﺎﻋﺔ ﺛﺎﻧﻴﺔ
রাসূলুল্লাহ সাঃ একবার মদিনার দূর থেকে আসতেছিলের,সাথে সাহাবাবর্গ ও ছিলেন।মদিনায় এসে দেখলেন যে,জামাত সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে।তখন তারা যার যার ঘরে গিয়ে নামায আদায় করলেন।কিন্তু দ্বিতীয়বার জামাতে নামায পড়েননি।(মু'জামে তাবারানি)
এজন্য উলামায়ে কেরাম বলেন,যে মসজিদের ইমাম মু'আজ্জিন নির্ধারিত আছেন,সেই মসজিদে দ্বিতীয় জামাত মাকরুহে তাহরীমি। তবে বিষয়টা মতবেদ র্পূর্ণ। উলামাদের মতপার্থক্য এতে বিদ্যমান রয়েছে।
আর যদি কোনো মসজিদ এমন থাকে,যেখানের ইমাম মু'আজ্জিন নির্ধারিত থাকেন, তাহলে সেই মসজিদে জামাতের জন্য আহবান করা ব্যতীত তথা তিন/চার জন মিলে দ্বিতীয় জামাত পড়া যাবে। রুখসত রয়েছে।
(b) নন মসজিদে দ্বিতীয় জামাত করা যাবে।
(c) এই হাদীসের ব্যখ্যা হল, মুসলমানদের জামাত একটাই হবে। এবং ঐ জামাতে সময়মত সবাইকে শরীক হতে হবে। সময়মত মসজিদের জামাতে শরীক হওয়ার জন্যই রাসূলুল্লাহ সাঃ এমনটা বলেছেন। দ্বিতীয় জামাতের সুযোগ হয়ে গেলে লোকজন এক জামাতে একত্রিত হবে না। এবং বিশৃংখা দেখা দিবে। লোকদের মধ্যে অলসতা চলে আসবে।
(d) রোযা কয়েক প্রকার, এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে,
«وَأَنْوَاعُهُ فَرْضٌ وَوَاجِبٌ وَنَفْلٌ. وَالْفَرْضُ نَوْعَانِ: مُعَيَّنٌ كَرَمَضَانَ، وَغَيْرُ مُعَيَّنٍ كَالْكَفَّارَاتِ وَقَضَاءِ رَمَضَانَ، وَالْوَاجِبُ نَوْعَانِ: مُعَيَّنٌ كَالنَّذْرِ الْمُعَيَّنِ، وَغَيْرُ مُعَيَّنٍ كَالنَّذْرِ الْمُطْلَقِ، وَالنَّفَلُ كُلُّهُ نَوْعٌ وَاحِدٌ كَذَا فِي التَّبْيِينِ.
وَسَبَبُهُ مُخْتَلِفٌ فَفِي الْمَنْذُورِ النَّذْرُ، وَفِي صَوْمِ الْكَفَّارَةِ أَسْبَابُهَا مِنْ الْحِنْثِ وَالْقَتْلِ وَسَبَبُ الْقَضَاءِ هُوَ سَبَبُ وُجُوبِ الْأَدَاءِ هَكَذَا فِي فَتْحِ الْقَدِيرِ. وَأَمَّا سَبَبُ صَوْمِ رَمَضَانَ فَذَهَبَ الْقَاضِي الْإِمَامُ أَبُو زَيْدٍ فَخْرُ الْإِسْلَامِ وَصَدْرُ الْإِسْلَامِ أَبُو الْيُسْرِ إلَى أَنَّهُ الْجُزْءُ الْأَوَّلُ الَّذِي لَا يَتَجَزَّأُ مِنْ كُلِّ يَوْمٍ كَذَا فِي الْكَشْفِ الْكَبِيرِ قَالَ فِي غَايَةِ الْبَيَانِ، وَهُوَ الْحَقُّ عِنْدِي وَصَحَّحَهُ الْإِمَامُ الْهِنْدِيُّ كَذَا فِي النَّهْرِ الْفَائِقِ.» - «الفتاوى الهندية» (1/ 194)
রোযা কয়েক প্রকার যথা- (১) ফরয (২) ওয়াজিব (৩) নফল।
ফরয দুই প্রকার, যথা,(ক) নির্দিষ্ট ফরয যেমন রমজানের রোজা (খ) অনির্দিষ্ট ফরয যেমন কাফফারার রোযা,রমজানের কাযা রোযা।
ওয়াজিব দুই প্রকার (ক) নির্দিষ্ট ওয়াজিব, যেমন নির্দিষ্ট নযর (খ) অনির্দিষ্ট ওয়জিব যেমন অনির্দিষ্ট স্বাভাবিক নযর।
নফল এক প্রকার ই। নযরের রোযার কারণ হল, রোযা রাখার নযর করা। আর কাফফারার রোযার কারণ হল, শপথ ভঙ্গ করা। কাউকে হত্যা করা। কাযা রোযার কারণ তাই যা আদা রোযার কারণ হয়ে থাকে। রমজান মাসের রোযার সবব বা কারণ হল, রমজান মাসের প্রত্যেক দিনের প্রথম অংশ। (ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া।-১/১৯৪)
রোযার নিয়ত করার ব্যাপারে রোযাগুলি দুই প্রকার,
(১)
সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হল রোযা রাখার সময়সীমা। ফরয রোযার নিয়ত করার সময়সীমা হল, দিনের মধ্যভাগ পর্যন্ত। অর্থাৎ দিনের মধ্যভাগের আগ পর্যন্ত নিয়ত করলে তা শুদ্ধ হবে।
স্মর্তব্য যে, আরবী দিনের সূচনা হয় সুবহে সাদিক থেকে। তাই সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যতটুকু সময় হয়, এর মাঝামাঝি সময়ের আগে রোযার নিয়ত করলেই রোযা রাখা শুদ্ধ হবে।যেমন যদি সেহরীর সময় তথা সুবহে সাদিক শুরু হয় ৫টায়। আর সূর্যাস্ত হয়ে থাকে সন্ধ্যা ৭টায়। তাহলে একদিন হচ্ছে কত ঘন্টায়? ১৪ঘন্টায়।
সুতরাং সুবহে সাদিক থেকে ৭ ঘন্টা অতিক্রান্ত হওয়ার আগে রোযার নিয়ত করলেই রোযা রাখা শুদ্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ উক্ত হিসাব মতে দুপুর ১২টার আগে রোযার নিয়ত করলে সেদিনের রোযা রাখা শুদ্ধ হবে। যদি এর পর নিয়ত করে তাহলে শুদ্ধ হবে না।
এই রোযা হল, (১) রমজানের রোযা, (২)নির্দিষ্ট নযরের রোযা (৩) এবং সাধারণ নফল রোযা।
(২) রাত থেকে নিয়ত করতে হবে। এ রোযাগুলি হল,(১) রমজানের কাযা রোযা (২)অনির্দিষ্ট নযরের রোযা (৩)নির্দিষ্ট নযরের রোযার কাযা রোযা (৪) নফল রোযাকে ভঙ্গ করার পর কাযা করা(৫) কাফফারার রোযা সমূহ যেমন,(ক) জিহারের কাফফারা,(খ) হত্যার কাফফারা,(গ) কসমের কাফফারা,(ঘ) এবং ফরয রোযা ভঙ্গ করার কাফফারা সহ হজ্বের কোনো ওয়াজিব তরক হওয়ার কাফফারা ইত্যাদি।
দলীল নিম্নরূপ--
في الدر المختار،ج٢-ص:٣٨٠
فَيَصِحُّ) أَدَاءُ (صَوْمِ رَمَضَانَ وَالنَّذْرِ الْمُعَيَّنِ وَالنَّفَلِ بِنِيَّةٍ مِنْ اللَّيْلِ) فَلَا تَصِحُّ قَبْلَ الْغُرُوبِ وَلَا عِنْدَهُ (إلَى الضَّحْوَةِ الْكُبْرَى لَا) بَعْدَهَا وَلَا (عِنْدَهَا) اعْتِبَارًا لِأَكْثَرِ الْيَوْمِ (وَبِمُطْلَقِ النِّيَّةِ) أَيْ نِيَّةِ الصَّوْمِ%…………………الي ان قال……………..«وَالشَّرْطُ لِلْبَاقِي) مِنْ الصِّيَامِ قِرَانُ النِّيَّةِ لِلْفَجْرِ وَلَوْ حُكْمًا وَهُوَ (تَبْيِيتُ النِّيَّةِ) لِلضَّرُورَةِ (وَتَعْيِينُهَا) لِعَدَمِ تَعَيُّنِ الْوَقْتِ.» - «حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» (2/ 380)
و في ردالمحتار تحت قوله
«قَوْلُهُ: وَالشَّرْطُ لِلْبَاقِي مِنْ الصِّيَامِ) أَيْ مِنْ أَنْوَاعِهِ أَيْ الْبَاقِي مِنْهَا بَعْدَ الثَّلَاثَةِ الْمُتَقَدِّمَةِ فِي الْمَتْنِ وَهُوَ قَضَاءُ رَمَضَانَ وَالنَّذْرُ الْمُطْلَقُ، وَقَضَاءُ النَّذْرِ الْمُعَيَّنِ وَالنَّفَلِ بَعْدَ إفْسَادِهِ وَالْكَفَّارَاتِ السَّبْعِ وَمَا أُلْحِقَ بِهَا مِنْ جَزَاءِ الصَّيْدِ وَالْحَلْقِ وَالْمُتْعَةِ نَهْرٌ، وَقَوْلُهُ: السَّبْعُ صَوَابُهُ الْأَرْبَعُ وَهِيَ كَفَّارَةُ الظِّهَارِ، وَالْقَتْلِ، وَالْيَمِينِ، وَالْإِفْطَارِ (قَوْلُهُ: لِلْفَجْرِ) أَيْ لِأَوَّلِ جُزْءٍ مِنْهُ ط (قَوْلُهُ: وَلَوْ حُكْمًا إلَخْ) جَعَلَ فِي الْبَحْرِ الْقِرَانَ فِي حُكْمِ التَّبْيِيتِ وَأَنْتَ خَبِيرٌ بِأَنَّ الْأَنْسَبَ مَا سَلَكَهُ الشَّارِحُ مِنْ الْعَكْسِ إذْ الْقِرَانُ هُوَ الْأَصْلُ وَفِي التَّبْيِيتِ قِرَانٌ حُكْمًا كَمَا فِي النَّهْرِ.» - «حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» (2/ 380)
جاز صوم رمضان، والنذر المعين، والنفل بنية ذلك اليوم أو بنية مطلق الصوم أو بنية النفل من الليل إلى ما قبل نصف النهار، (الفتاوى الهندية، كتاب الصوم، الباب الأول في تعريفه وتقسيمه وسببه ووقته وشرطه -1/195
কেউ যদি ফজর থেকেই জাগ্রত অবস্থায় থাকে এবং রমজানের রোযার নিয়ত দুপুরের একটু আগে করে, তাহলে তার রোযা হবে। যদি সে ইতিপূর্বে রোযা ভঙ্গকারী কোনো কাজ যেমন, খানা-পিান,স্ত্রী সহাবাস ইত্যাদিতে লিপ্ত না হয়। কিন্তু কেউ যদি কেউ সুবহে সাদিকের পর তথা সেহরীর সময় শেষ হওয়া পর রোযা ভঙ্গকারী কোনো জিনিষ যেমন খানা-পিনায় লিপ্ত হয়ে যায়,এবং দিনের মধ্যভাগের পূর্বে রোযার নিয়ত করে তাহলে তার রোযা হবে না। কেননা যদিও সে দিনের মধ্যভাগে নিয়ত করেছে,কিন্তু সে সহরীর টাইম শেষ হওয়ার পর রোযা ভঙ্গকারী জিনিষে লিপ্ত হয়েছে। অথচ রোযা হল, সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খানা পিনা থেকে বিরত থাকা।
(e)
জোহরের পর সাধারণ রোযার নিয়ত গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার রোযা হবে না।