জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নিঃস্বার্থভাবে, বিনিময় ছাড়া, চাওয়া ব্যতীত ও সতস্ফুর্তভাবে নিজেদের মধ্যে যে আদান প্রদান হয় তাই হাদিয়া।
আল্লাহর রাসূল সা. বলেন, তোমরা পরস্পর হাদিয়ার আদান-প্রদান করো, তাহলে মহাব্বত বৃদ্ধি পাবে। (ইমাম বুখারী রচিত আদাবুল মুফরাদ, হা/৫৯৪)
আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা যদি খুশি হয়ে তোমাদেরকে দিয়ে দেয়, তাহলে তোমরা তা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ করো। (সূরা নিসা আ/৪)
আল্লাহ তাআলা এখানে খুশি হয়ে দিলে তা ভোগ করার জন্য বলেছেন। এটিই হাদিয়া।
পরস্পর মুহাব্বত সৃষ্টি হয় হাসাদ দূর হয় হাদিয়ার মাধ্যমে।
হাদিয়া বৈধ হওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত রয়েছে। (ক) যা হাদিয়া দিবে ঐ জিনিস হালাল হতে হবে। হারাম জিনিস হাদিয়া দেয়া যাবে না। (খ) হাদিয়া সম্পূর্ণ নিজের সম্মতিতে দিতে হবে।
হাদিয়ার বিপরীতেই হলো ঘুষ।
হাদিয়ার ক্ষেত্রে যদি শর্তগুলো না থাকে। তবে তা হারাম হয়ে যাবে।
ঘুষ হারাম। সরকারী বা বেসরকারী কোন কর্মকর্তা জনগণের টাকায় বেতনভাতা গ্রহণ করে থাকেন তখন তাদের কাজের জন্য জনগণ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়া ঘুষ।
বিস্তারিত জানুনঃ-
ঘুষ কবিরা গুনাহ সমূহের একটি। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﻲ ﻭَﺍﻟْﻤُﺮْﺗَﺸِﻲ
অনুবাদঃ ঘুষ প্রদাণকারী ও গ্রহণকারী উভয়ের উপর রাসূলুল্লাহ সাঃ লা'নত দিয়েছেন। মুসনাদে আহমদ-৬৭৯১ সুনানে আবু-দাউদ-৩৫৮০
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই ব্যাক্তি যদি নিঃস্বার্থভাবে সন্তুষ্টি চিত্তে আপনার বাবাকে সেটি হাদিয়া হিসেবে দেয়,আপনাকে পাওয়ার জন্য বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নয়। সেক্ষেত্রে এটি হাদিয়া হবে। তখন তাহা ব্যবহার করা আপনার বাবার জন্য জায়েজ হবে।
আর যদি আপনাকে পাওয়ার জন্য বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য আপনার বাবাকে দিয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে তাহা ব্যবহার করা যাবেনা।
সেটি তাকেই ফেরত দিতে হবে।
(০২)
আপনার মামা হালাল টাকা হতে সেই লোন পরিশোধ করে থাকলে আপনার মামা হতে খরচ নেয়ায় কোনো সমস্যা নেই।
তবে আপনার মামা হারাম টাকা হতে সেই লোন পরিশোধ করে থাকলে সেক্ষেত্রে তার অধিকাংশ ইনকাম হালাল হলে তার থেকে খরচ নেয়া যাবে, অন্যথায় (তার অধিকাংশ ইনকাম হারাম হলে) তার থেকে খরচ নেয়া যাবেনা।
উল্লেখ্য, আপনি যদি বালেগাহ হোন,এবং নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হোন,সেক্ষেত্রে শরীয়তের দৃষ্টিতে আপনি দরিদ্র। আপনি ধনী নন। সুতরাং সর্বক্ষেত্রে আপনি তার থেকে খরচ নিতে পারবেন।
(০৩)
আপনার আংকেল হালাল টাকা হতে সেই কিস্তি পরিশোধ করে থাকলে আপনার আংকেলের বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খাওয়া জায়েজ হবে।
তবে আপনার আংকেল হারাম টাকা হয়ে সেই কিস্তি পরিশোধ করে থাকলে সেক্ষেত্রে তার অধিকাংশ ইনকাম হালাল হলে তার বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খাওয়া জায়েজ হবে।
অন্যথায় (তার অধিকাংশ ইনকাম হারাম হলে) তার বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খাওয়া জায়েজ হবেনা। সেক্ষেত্রে অগত্যা দাওয়াত খেতে হলে সমপরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।
উল্লেখ্য, আপনি যদি বালেগাহ হোন,এবং নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হোন,সেক্ষেত্রে শরীয়তের দৃষ্টিতে আপনি দরিদ্র। আপনি ধনী নন। সুতরাং সর্বক্ষেত্রে আপনি তার বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খেতে পারবেন।