আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (21 points)
আসসালামুয়ালাইকুম।

১. দ্বীনে ফেরার আগে একজন নন মাহরাম আমাকে পছন্দ করতেন সেই সুবাদে ওই ব্যাক্তি আমার বাবার জন্য একটি সাল গিপ্ট করেন।ওই সালটা কি আমার বাবার ইউজ করা উচিৎ হবে?না হলে এই সালটা কি করতে পারি?

বি:দ্র:আমরা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের,,এইরমক সাল কেনা আমার বাবার পক্ষে সম্ভব না বললেই চলে।

২.আমি আমার মামার বাসায় থাকি।আমার সম্পূর্ণ খরচ মামা দেন।মামা ব্যাবসা করার সময় ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছেন এর সাথে ধার করা কিছু টাকা ও রয়েছে।ব্যাবসা দাঁড় করিয়েছেন প্রায় ৫-৬ বছর হয়েছে।এতদিনে হয়তো ব্যাংকের লোন পরিশোধ ও করে ফেলেছেন।উক্ত ব্যাবসায় আমার মামা নিজের শ্রম দিয়ে কাজ করেন।এখন আমার কি ওনার থেকে খরচের টাকা নেয়া উচিৎ হবে?ওনার থেকে খরচ নেয়া ছাড়া আমার অন্য কোনো ওয়ে নাই।

৩.আমার আংকেল  প্রায় সময়ই বিভিন্ন ফাউন্ডেশন থেকে সুদের উপরে কিস্তি নেন।ওই টাকা তিনি তার ব্যাবসায় খাটান।আবার বিভিন্ন জন থেকে ধার করেও টাকা খাটান।ওই ব্যাবসায় আমার আংকেল নিজের শ্রম দিয়ে কাজ করেন।ওদের বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খাওয়া কি আমার জন্য জায়েজ হবে?আর না হলে কতটুকু পরিমান খাবো?দয়া করে জানাবেন।

জাযাকাল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
নিঃস্বার্থভাবে, বিনিময় ছাড়া, চাওয়া ব্যতীত ও সতস্ফুর্তভাবে নিজেদের মধ্যে যে আদান প্রদান হয় তাই হাদিয়া। 

আল্লাহর রাসূল সা. বলেন, তোমরা পরস্পর হাদিয়ার আদান-প্রদান করো, তাহলে মহাব্বত বৃদ্ধি পাবে। (ইমাম বুখারী রচিত আদাবুল মুফরাদ, হা/৫৯৪) 

আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা যদি খুশি হয়ে তোমাদেরকে দিয়ে দেয়, তাহলে তোমরা তা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ করো। (সূরা নিসা আ/৪) 

আল্লাহ তাআলা এখানে খুশি হয়ে দিলে তা ভোগ করার জন্য বলেছেন। এটিই হাদিয়া। 

পরস্পর মুহাব্বত সৃষ্টি হয় হাসাদ দূর হয় হাদিয়ার মাধ্যমে। 

হাদিয়া বৈধ হওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত রয়েছে। (ক) যা হাদিয়া দিবে ঐ জিনিস হালাল হতে হবে। হারাম জিনিস হাদিয়া দেয়া যাবে না। (খ) হাদিয়া সম্পূর্ণ নিজের সম্মতিতে দিতে হবে। 

হাদিয়ার বিপরীতেই হলো ঘুষ।

হাদিয়ার ক্ষেত্রে যদি শর্তগুলো না থাকে। তবে তা হারাম হয়ে যাবে। 
ঘুষ হারাম। সরকারী বা বেসরকারী কোন কর্মকর্তা জনগণের টাকায় বেতনভাতা গ্রহণ করে থাকেন তখন তাদের কাজের জন্য জনগণ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেয়া ঘুষ।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

ঘুষ কবিরা গুনাহ সমূহের একটি। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,

 ﻋﻦ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﻲ ﻭَﺍﻟْﻤُﺮْﺗَﺸِﻲ 

অনুবাদঃ ঘুষ প্রদাণকারী ও গ্রহণকারী উভয়ের উপর রাসূলুল্লাহ সাঃ লা'নত দিয়েছেন। মুসনাদে আহমদ-৬৭৯১ সুনানে আবু-দাউদ-৩৫৮০ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই ব্যাক্তি যদি নিঃস্বার্থভাবে সন্তুষ্টি চিত্তে আপনার বাবাকে সেটি হাদিয়া হিসেবে দেয়,আপনাকে পাওয়ার জন্য বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নয়। সেক্ষেত্রে এটি হাদিয়া হবে। তখন তাহা ব্যবহার করা আপনার বাবার জন্য জায়েজ হবে। 

আর যদি আপনাকে পাওয়ার জন্য বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য আপনার বাবাকে দিয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে তাহা ব্যবহার করা যাবেনা।
সেটি তাকেই ফেরত দিতে হবে। 

(০২)
আপনার মামা হালাল টাকা হতে সেই লোন পরিশোধ করে থাকলে আপনার মামা হতে খরচ নেয়ায় কোনো সমস্যা নেই।

তবে আপনার মামা হারাম টাকা হতে সেই লোন পরিশোধ করে থাকলে সেক্ষেত্রে তার অধিকাংশ ইনকাম হালাল হলে তার থেকে খরচ নেয়া যাবে, অন্যথায় (তার অধিকাংশ ইনকাম হারাম হলে) তার থেকে খরচ নেয়া যাবেনা। 

উল্লেখ্য, আপনি যদি বালেগাহ হোন,এবং নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হোন,সেক্ষেত্রে শরীয়তের দৃষ্টিতে আপনি দরিদ্র। আপনি ধনী নন। সুতরাং সর্বক্ষেত্রে আপনি তার থেকে খরচ নিতে পারবেন। 

(০৩)
আপনার আংকেল হালাল টাকা হতে সেই কিস্তি পরিশোধ করে থাকলে আপনার আংকেলের বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খাওয়া জায়েজ হবে।

তবে আপনার আংকেল হারাম টাকা হয়ে সেই কিস্তি পরিশোধ করে থাকলে সেক্ষেত্রে তার অধিকাংশ ইনকাম হালাল হলে তার বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খাওয়া জায়েজ হবে।

অন্যথায় (তার অধিকাংশ ইনকাম হারাম হলে) তার বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খাওয়া জায়েজ হবেনা। সেক্ষেত্রে অগত্যা দাওয়াত খেতে হলে সমপরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে। 

উল্লেখ্য, আপনি যদি বালেগাহ হোন,এবং নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হোন,সেক্ষেত্রে শরীয়তের দৃষ্টিতে আপনি দরিদ্র। আপনি ধনী নন। সুতরাং সর্বক্ষেত্রে আপনি তার বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খেতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...