বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
চার ইমামের আকিদা কুরআন সুন্নাহ সম্মত ছিলো।শাখাপ্রশাখা গত কিছু মাস'আলায় চার ইমামদের মধ্যে কিছু মতপার্থক্য হয়েছিলো।
ইমাম আবু হানিফার আকিদা পরবর্তীতে মাতুরিদি আকিদা নামে আত্ম প্রকাশ করে।এবং ইমাম শা'ফেয়ী ও ইমাম মালিক রাহ এর আকিদা পরবর্তীতে আশায়েরী আকিদা নামে আত্ম প্রকাশ করে।(কেউ কেউ আবার এটাকে অস্বীকারও করে থাকেন)ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ এর কিছু কিছু আকিদা পরবর্তীতে সালাফি আকিদা হিসেব পরিচিতি লাভ করে।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মাতুরিদি এবং আশায়েরী ফিরকাহর আকাঈদ ব্যখ্যা প্রায় সমান সমান।তবে ১৩ টায় মাস'আলা এই দুই ফিরকাহর পরস্পর মতবিরোধ হয়েছে।এবং অধিকাংশই শব্দগত মতপার্থক্য।
আল্লামা সুবকি রাহ বলেন,উক্ত ১৩ টির মধ্যে ৬টি অর্থগত মতপার্থক্য। আর ৭টি শব্দগত মতপার্থক্য।
কেউ কেউ পঞ্চাশটির মতও উল্লেখ করেছেন।
তাবক্বাতুত শা'ফেয়ী-৩/৩৭৮,ইত্তেহাফু-সাদাতিল মুত্তাক্বিন-২/৮,আল-খুতাত-২/৩৫৯,ইশারাতুল মারাম লিল-বায়াযি-৫৬
মাতুরিদি ও আশায়েরা ফিরকাহর মধ্যকার পার্থক্য
(১)
মাতুরিদিরা সিফাতে যাত এবং সিফাতে ফে'ল এর মধ্যকার কোনো পার্থক্য করেন না।বরং আল্লাহর সকল প্রকার সিফাতকেই তারা ক্বাদিম মনে করেন।আশায়েরী রা পার্থক্য করে থাকেন।তারা শুধুমাত্র যাতি সিফাতকে কাদীম মনে করেন।
(২)
মাতুরিদিরা মনে করেন,আল্লাহর সিফাত ওয়ািজব স্বয়ং নিজেই আদম বা ধংশনকে গ্রহণ করে না।আশায়েরা ফিরকা মনে করেন,আল্লাহর যাত বিদ্যমানের উৎস।সুতরাং ওয়াজিব সিফাত যাতের ভায়ায় ক্বাদীম।
(৩)
মাতুরিদি ফিরকাহর মতে ওয়াজিব সিফাত,অতিরিক্ত কিছু নয়।তবে আশায়েরা ফিরকা মনে করেন,ওয়াজিব সিফাত,অতিরিক্ত বষয়।
(৪)
মাতুরিদি ফিরকা মনে করে,আল্লাহ সামর্থ্যর অধিক কাউকে দায়িত্ব দেননা।আশায়েরা ফিরকা মনে করে,আল্লাহ দিতে পারেন।
(৫)
মাতুরিদি ফিরকা মনে করে,আল্লাহ তা'আলা হেকমতের তাকাযা অনুযায়ী কাজ করেন।আশায়েরা ফিরকা মনে করেন,আল্লাহ হেকমতের তাকাযা অনুযায়ী করতেও পারেন আবার নাও করতে পারেন।
(৬)
মাতুরিদি ফিরকা মনে করেন,
আল্লাহ তা'আলা নিজ ওয়াদা থেকে কখনো পিছপা হবেন না।পিছপা হওয়া অসম্ভব। আশায়েরা ফিরকা মনে করে,আল্লাহ নিজ ওয়দার উল্টোও করতে পারেন।জায়েয রয়েছে।
(৭
মাতুরিদি ফিরকা মনে করেন,আল্লাহ কখনো নিন্দনীয় কাজ করতে পারেন না।
আশায়েরা ফিরকা মনে করেন,আল্লাহ যেহেতু সর্বময় ক্ষমতার অধীকারী, তাই উনার জন্য সম্ভব রয়েছে।
.
(৮)
আল্লাহর পরিচয় আকলের মাধ্যমে হয়।আল্লাহর প্রতিটা বিষয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এবং প্রতিটা বিষয়ই ভালো ও উত্তম।আশায়েরা ফিরকা মনে করেন,আল্লাহর সকল বিষয় ই ভালো ও উত্তম।
(৯)
আল্লাহর পরিচয়,আকল দ্বারা ওয়াজিব।আশায়েরা ফিরকা মনে করেন,আল্লাহর পরিচয় শরয়ী বিধি-বিধানের দ্বারা ওয়াজিব।আকল দ্বারা নয়।
(১০)
মাতুরিদি ফিরকা মনে করে,ঈমান আকল দ্বারা ঈমান আনয়ন ওয়াজিব।আর আশায়েরা ফিরকা মনে করে,শরীয়তের বিধি-বিধান দ্বারা ঈমান আনয়ন ওয়াজিব।
(১১)
মাতুরিদি ফিরকা মনে করে,মুসা আঃ আল্লাহর কালাম সরাসরি শুনেননি।আর আশায়েরা ফিরকা মনে করে,মুসা আঃসরাসরি শুনেছেন।
এই হল যৎসামান্য মতপার্থক্য।
আছারিয়া ফিরকাহর সাথে মাতুরিদি ও আশায়েরি ফিরকাহর কোনো পার্থক্য কোনো কিতাবে লিপিবদ্ধ কারে পাওয়া যায় না সাধারণত।